কৃষ্ণকুমার দাস: উৎসবের মরশুমের পর ফের বিপদের মুখে পড়েছিল রবীন্দ্র সরোবরের (Rabindra Sarobar Lake) মৎস্যকূল। লেকের জলে দূষণের (Pollution) মাত্রা বৃদ্ধির পাওয়ায় কার্যত মাছের মড়ক শুরু হয়েছিল। শয়ে শয়ে মাছের মরদেহ ভেসে উঠেছিল লেকের ধারে। পরিবেশবিদদের দাবি, জলের অম্লত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি অক্সিজেনের (Oxygen) মাত্রা কমে যাওয়ায় এই বিপত্তি। এবার সেই সমস্যা কাটাতে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরামর্শ অনুযায়ী আরও দুটি ‘এরেটর’ যন্ত্র বসানো হল রবীন্দ্র সরোবরে। বৃহস্পতিবার থেকেই দুটি নতুন যন্ত্র কাজ শুরু করেছে বলে খবর।
লক্ষ্মীপুজোর পর মড়ক শুরু হলেও গত তিনদিন ধরে বেশি পরিমানে মরা মাছ ভেসে ওঠার পাশাপাশি দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। সকাল-সন্ধ্যায় যাঁরা সরোবর এলাকায় হাঁটতে যান, তাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ’র (KMDA) শীর্ষকর্তাদের কাছে দফায় দফায় অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে সোমবারই কেএমডিএ’র শীর্ষ ইঞ্জিনিয়র এবং মৎস্য দপ্তরের বিশেষজ্ঞদের ঘটনাস্থলে পাঠান দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। দুই দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা সরোবরের জল, মাটি এবং মরা মাছ সংগ্রহ করে দূষণের কারণ এবং জলের অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন। পরীক্ষার পর দেখা যায়, জলে অক্সিজেনের মাত্রা অত্যন্ত কম।
[আরও পড়ুন: গলছে মেরুর বরফ, থাবা বসাতে পারে অজানা রোগজীবাণু, আশঙ্কা পরিবেশবিদদের]
পরিবেশবিদ ও রবীন্দ্র সরোবর মর্নিং ওয়াকার সংগঠনের আহ্বায়ক সৌমেন্দ্র মোহন ঘোষের অভিযোগ তুলেছেন, “গাছের পাতা যেমন পরিষ্কার করা হচ্ছে না, তেমনই ক্লাবগুলির বর্জ্য সরোবরের জলে দূষণের মাত্রা কয়েকগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে। নাহলে একসঙ্গে এত মাছ মরবে কী করে?” বস্তুত এই কারণে দ্রুত পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্যোগী পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা এদিনই সরোবরের জলের মধ্যেই আরও দু’টি ‘এরেটর’ নামে বিশেষ যন্ত্র বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেইমতো বৃহস্পতিবার কেএমডিএ’র তরফে সেই যন্ত্র বসানো হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (Pollution Control Board) পরামর্শ, ৫০ ফুট দূরত্বে একেকটি যন্ত্র বসাতে হবে। তাহলেই সবচেয়ে ভালভাবে তা কাজ করবে। এই যন্ত্রে এক বিশেষ ধরনের চাকা রয়েছে। যন্ত্রটি জলে ঘুরলেই অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। সেই কাজই শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। আগে রবীন্দ্র সরোবরে ছিল ১টি এরেটর যন্ত্র। এবার আরও ২ টি বসানো হল।
[আরও পড়ুন: শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রভাব, এবার শীতে জাঁকিয়ে পড়বে ঠান্ডা, বলছে পূর্বাভাস]
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালে ছটপুজোর পর এই সরোবরেই মাছের মড়ক লেগেছিল। ভারী বৃষ্টির পর গত ২৩ সেপ্টেম্বরও কয়েকশো মাছ মরে ভেসে ওঠে। তারপর থেকেই জলদূষণ রুখতে তৎপর হয়েছে কেএমডিএ।