বিধান নস্কর, দমদম: রীতিমতো ভয়াবহ দৃশ্য। অফিস থেকে ফিরে ঘরের তালা খুলে বিছানায় স্ত্রীর মৃতদেহ দেখে আঁতকে উঠলেন স্বামী! শুক্রবার রাতে মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির এক আবাসনে। সূত্রের খবর, স্বামী অফিস থেকে ফিরে দেখেন, গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় স্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। প্রাথমিকভাবে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হলেও খুনের তত্ত্ব একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় বাগুইআটি থানার পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে ৯টা। কেষ্টপুর রবীন্দ্রপল্লির AE ২৪৭ নম্বর ফ্ল্যাটে তিনতলায় নিজের বাড়িতে ফিরেছিলেন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত বুদ্ধদেব সাহা। ঘরের তালা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখেন, বেডরুমে স্ত্রী অভিষিক্তার নিথর দেহ, গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো। পেশায় অভিষিক্তা একজন সজ্জাশিল্পী। একটি বিউটি পার্লারে তিনি কাজ করেন। আচমকা এভাবে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা শুধু স্বামী বুদ্ধদেবকেই নয়, আশপাশের সকলকেই স্তম্ভিত করেছে। বুদ্ধদেববাবুর মা জানান, ''ছেলে অফিস থেকে ফিরে প্রথমে আমার কাছে এসেছিল। এক কাপ চা খেল। তারপর বলল যে সারাদিন ফোনে বউমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। আমি সঙ্গে সঙ্গে ওকে বললাম, বাড়ি ফিরে যেতে। ও চলে গেল। গিয়েই ফোন করে হাউহাউ করে কেঁদে বলছে, সর্বনাশ হয়ে গেল! শুনলাম, বউমা নাকি আত্মহত্যা করেছে।'' কিন্তু আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে একেবারেই অন্ধকারে তাঁর শ্বশুরবাড়ির পরিবার।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবেশীরা সকলে জড়ো হয়ে যান ফ্ল্যাটের সামনে। খবর পাঠানো হয় বাগুইআটি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মহিলার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। তদন্তে নেমে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ও নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। স্বামী বুদ্ধদেব সাহা ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ফ্ল্যাট ও আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ। অভিষিক্তা ও বুদ্ধদেবের মধ্যে দাম্পত্য অশান্তি চলছিল কি না, সেই কারণে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত কি না অথবা কেউ তাঁকে খুন করে ওভাবে গলায় ওড়না জড়িয়ে দেহ ফেলে রেখেছে কি না, সবদিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।