সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নৃশংস অপরাধের লম্বা তালিকা। অতীতে ৫ ও ৮ বছরের দুই শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। প্রতিবার জেলবন্দি হয়েও আদালতে আইনি মারপ্যাঁচে মুক্তি। তার মাশুল দিল এবার ১১ বছরের বালিকা। অভিযুক্ত রমেশ সিং এবার মূক ও বধির বালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে! পাশবিক অত্যাচারের জেরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মেয়েটির। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মহাকুম্ভ অবধি ধাওয়া করে রমেশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুণ্যস্নানেও পাপ ঢাকা যায়নি!
'গুণধর' রমেশ মধ্যপ্রদেশের দাব্রিপুরা এলাকার পোলায়কলার বাসিন্দা। ২০০৩ সালে শাজাপুর জেলার মুবারিকপুর গ্রামে ৫ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে সে। গ্রেপ্তার হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে বিচারে ১০ বছরের জেল হয় তার। ২০১৩ সালে জেলমুক্ত হয় রমেশ। ফের অপরাধী চরিত্রের প্রমাণ দেয় সে। ২০১৪ সালে আস্থায় ৮ বছরের এক শিশুকন্যাকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এবারে নিম্ন আদালতের বিচারে মৃত্যুদণ্ড হয় রমেশের। যদিও ২০১৯ সালে 'টেকনিক্যাল' কারণে হাই কোর্টে সাজা লাঘব হয় রমেশের। এর ফলে ভয়ংকর অপরাধের পরেও ফের সমাজের মূলস্রোতে ফেরে সে। তার 'দাম দিল' ১১ বছরের মূক ও বধির বালিকা!
গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে নরসিংগড়ের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় মূক ও বধির ওই বালিকা। পরদিন সকালে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় গ্রামেরই একটি ঝোপের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়। বালিকার গোটা শরীরের ভয়ংকর আঘাতের চিহ্ন ছিল। ডাক্তরি পরীক্ষায় নিশ্চিত হয় তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বালিকাকে ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
তদন্তে নেমে ৪৬টি এলাকার ১৩৬টি সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ। লাল শাল, নীল-কালো জুতো পরা রমেশ সিংকে চিহ্নিত করা হয়। ততক্ষণে অবশ্য মধ্যপ্রদেশ ছেড়েছে 'সিরিয়াল ধর্ষক'। শেষ পর্যন্ত তদন্তকারীদের ষোলোটি টিম, ৭৬ জন পুলিশকর্মীর চেষ্টায় দেখা যায় প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে পুণ্যস্নানে গিয়েছে রমেশ। তাকে জয়পুরে চলন্ত ট্রেন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুরু হয়েছে আইনি প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এবারও আইনের মারপ্যাঁচে জেলমুক্ত হবে না তো ভয়ংকর এই অপরাধী?