সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘৃণ্য অপরাধের পরও শুধুমাত্র নাবালক হওয়ার সুবিধা নিয়ে রেহাই পেয়ে যায় অপরাধীরা। দেশের বিচার ব্যবস্থায় এমন নজির কম নেই। এবার তেমনই এক মামলায় নজির বিহীন শাস্তি দিল আদালত। ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ১৬ বছরের এক কিশোরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল দিল্লির রোহিণীর জেলা আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে অপরাধীকে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর পাথর দিয়ে থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যা করে ১৬ বছর বয়সি এক কিশোর। নাবালক হওয়ার জেরে নিয়মানুযায়ি তাঁকে প্রথমে পাঠানো হয় জুভেনাইল আদালতে। যদিও গোটা মামলা শোনার পর জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের তরফেও নির্দেশ দেওয়া হয় ঘৃণ্য এই অপরাধে অভিযুক্তকে সাবালক ধরে নিয়েই যেন মামলার চালানো হয়। সেই মতো পক্সো আইনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শুরু হয় মামলা। এর পর চাইল্ড ইন কনফ্লিক্ট বিট ল (CCL)-এর আওতায় দোষী সাব্যস্ত ওই অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া মৃতের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের নির্দেশ দেয় আদালত। এত টাকা মৃতের পরিবারকে দেবে জেলা প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: সিবিআই জালে বন্দি কেজরি! ২০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ল জেল হেফাজত]
গত ৩ আগস্ট মামলার সাজা শোনাতে গিয়ে আদালত জানায়, বর্তমানে ওই কিশোরের বয়স ২৫ বছর। অপরাধী প্রথমে আটার কারখানায় কাজ করত। এর পর রাজমিস্ত্রি, রেস্তরাঁ-সহ একাধিক জায়গায় কাজ করেছে। ফলে ধরে নেওয়া যায় জেলে সাজা কাটার সময় সেখানে কাজ করতে সে সক্ষম। দিল্লি পুলিশের তরফে এই মামলায় অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানানো হয়েছিল। ৫ বছরের শিশুর সঙ্গে অপরাধী যে নির্মম ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে স্পষ্ট অপরাধী নৃশংসতার সব সীমা পার করেছে। এবং ভবিষ্যতে সংশোধন এর কাছ থেকে আশা করা যায় না।
[আরও পড়ুন: জম্মু সামলাবে দেশের প্রাচীন আধাসামরিক বাহিনী! জঙ্গি দমনে নয়া কৌশল কেন্দ্রের]
অন্যদিকে অপরাধীর পক্ষের আইনজীবী জানান, অপরাধের সময় নাবালক হওয়ার সুবাদে ২০১৫ সালের জেজেপি অ্যাক্ট অনুযায়ী অপরাধীর প্রতি কিছুটা নরম হওয়া উচিত আদালতের। যদিও পালটা সরকার পক্ষের তরফে বলা হয়, যে অপরাধ সে করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। এবং কোনওভাবেই যেন দুর্বলতা না দেখানো হয় অপরাধীর সঙ্গে। আদালত কাউকে ন্যায় থেকে বঞ্চিত করে কাউকে অন্যায় সুযোগ দিতে পারে না। দুপক্ষের আইনজীবীর বিবাদের পর শেষ পর্যন্ত অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত।