সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে খুব শিগগির রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, রাজ্যপালের গাড়িতে বসতে চলছে নম্বর প্লেট। এই তালিকায়, রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপালের সচিব ও কনভয়ের অন্যান্য গাড়িও থাকছে। নির্দেশিকা জারি করেছে বিচারপতি গীতা মিত্তল ও শ্রী হরিশংকরের ডিভিশন বেঞ্চ। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত দিনের মধ্যে উল্লেখিত গাড়িগুলির রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে নম্বর প্লেট লাগিয়ে নিতে হবে। সেই অনুযায়ী, গত ২ জানুয়ারি একটি চিঠিও যায় রাষ্ট্রপতির দপ্তরে। যেখানে গাড়িগুলির রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গেও বলা হয়। একই সঙ্গে হাই কোর্টের নির্দেশিকা পৌঁছয় সড়ক পরিবহণ দপ্তরেও। যেখানে রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল ও সমসাময়িক পদাধিকারীদের ব্যবহৃত গাড়িগুলির রেজিস্ট্রেশন দ্রুত সম্পাদনের কথা বলা হয়। একই সঙ্গে মন্ত্রকের তরফে উল্লেখিত গাড়িগুলিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নম্বর প্লেট লাগানোর কথাও বলা হয়।
[সার্ভিস রিভলবারের গুলিতে আত্মঘাতী জয়ললিতার স্মৃতিসৌধে কর্তব্যরত পুলিশকর্মী]
নির্দেশিকা পাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে জানানো হয়, এখানে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে রাষ্ট্রপতি ও তাঁর স্ত্রীর নামে। বিদেশ দপ্তরের ১৪টি গাড়িও রয়েছে এই তালিকায়। নির্দেশিকা মেনে সেই গাড়িগুলির নম্বর প্লেট লাগানো হবে বলেও জানানো হয়। নির্দেশিকার পরে দুমাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত ১৪টি গাড়ি মোটর ভেহিকল অ্যাক্টের আওতায় নাম নথিভুক্ত করেনি। আদালতে এমনই নালিশ ঠুকেছে দিল্লির এনজিও নয়াভূমি। যেখানে বলা হয়েছে, দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশিকা না মানলে রাষ্ট্রপতি ভবন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গাড়িগুলিকে আটক করবে পুলিশ। এর উত্তরে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, খুব শিগগির ১৪টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তারপরই বসে যাবে নতুন নম্বর প্লেট।
অন্যদিকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রকাশে অনীহা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপতি ভবন। জানানো হয়েছে, মোটর ভেহিকল অ্যাক্টের আওতায় রাষ্ট্রপতি ও তাঁর প্রতিনিধি দল সচিবের ব্যবহৃত গাড়িগুলি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এলে গোপনীয়তা লঙ্ঘন হবে। সাধারণ মানুষের সঙ্গেই রাষ্ট্রপতির গাড়ির নম্বরও নথিভুক্ত হবে। সকলেই জেনে যাবে রাষ্ট্রপতির গাড়ির নম্বর। খুব স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি প্রকট হচ্ছে।
[এগিয়ে আসছে ৩১ মার্চ, কতটা এগোল আধার সংযুক্তির কাজ?]
এদিকে আবেদনকারী এনজিওর তরফে দাবি করা হয়েছে, নম্বর প্লেট মনে রাখা চাট্টিখানি কথা নয়। প্রত্যেকটা গাড়ির নম্বর প্লেট থাকে। তাই কোনটি রাষ্ট্রপতির গাড়ি বা তাঁর পারিষদবর্গের গাড়ি তা পৃথকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। কিন্তু নম্বর প্লেটের বদলে এখন যেমন অশোক স্তম্ভের প্লেট লাগানো থাকে তা আরও বিপদের। এই অশোক স্তম্ভের প্লেটই গাড়িগুলিকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করে দেয়। যার ফলে সন্ত্রাসবাদীদের লক্ষ্যবস্তু হওয়া আরও সহজ হয়ে যায়। আবেদনে আরও বলা হয়, এইসব ভিভিআইপিদের গাড়িতেও পথদুর্ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট গাড়ির বিরুদ্ধে কোনওরকম অভিযোগ জানাতে পারেন না। কেন না, গাড়িগুলির তো নম্বর প্লেটই নেই। অভিযোগ জানাবে কীসের ভিত্তিতে। এক কথায় নম্বর প্লেট না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটিয়েও আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছে। দেশ চলে যাঁদের অঙ্গুলিহেলনে তাঁরাই যদি আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষকে কী বলে দোষারোপ করা হবে? তবে এই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বেশকিছু সুবিধাও পেতে পারেন গাড়ি মালিক। একটা নির্দিষ্ট সময়সীমায় সেই গাড়ি ব্যবহার করার ছাড়পত্র থাকে তাঁদের। রেজিস্ট্রেশন থাকলে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির বিমার সুবিধাও পাওয়া যাবে।
The post রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপালের গাড়িতেও এবার নম্বর প্লেট appeared first on Sangbad Pratidin.