সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনার পর ডেঙ্গুর তাণ্ডব বাংলাদেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই রোগের কবলে পড়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন ২ হাজার ২৯২ জন। এবছর রবিবার, ২৩ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রায় দু’দশক সালে বাংলাদেশে আতঙ্ক হয়ে দেখা দেয় ডেঙ্গু। তখন শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয় এবং প্রাণ হারায়। কিন্তু বর্তমানে সব বয়সের মানুষের মধ্যেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন ২ হাজার ২৯২ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৭ হাজার ১৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৪ হাজার ১৪৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ভরতি। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত ৩২ হাজার ৯৭৭ জন রোগী হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ হাজার ৬২৬ জন। বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের রেকর্ড তৈরি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মোবাইলে কথা চালকের, যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি, বাংলাদেশের বাস দুর্ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য]
এমন অবস্থার মধ্যেই বিশ্বে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। রয়টার্সের খবর, বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের জন্য অনেকাংশেই দায়ী, যা মশার বিস্তারের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গুর বিস্তার পুরো বিশ্বেই বাড়ছে। ২০০০ সালে যত মানুষ মশাবাহিত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তা আটগুণ বেড়ে ২০২২ সালে ৪২ লক্ষে পৌঁছেছে। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছেন। নতুন ধরণের কারণে উপসর্গ ছাড়া অনেকেই আক্রান্ত হয়ে হালকা অসুস্থতাবোধ করছেন। তবে প্রায়ই এই ভাইরাসে সৃষ্ট জ্বর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (ইসিডিসি) তথ্য বলছে, বর্তমানে বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে।
বাংলাদেশে ডেঙ্গু এখন আর শুধু রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ নেই, ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলেও। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। প্রতিদিনই সারা দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই পটভূমিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার জরুরী অবস্থা জারি কিংবা মহামারী ঘোষণার কথা বললেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা উড়িয়ে দিচ্ছে।