সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ক্রমে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। এই রোগে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১০৬ জন। মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোট ৩ হাজার ৩০৪ জন। বুধবার স্বাস্থ্যদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এদিন স্বাস্থ্যদপ্তরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৮৬৪ জন নতুন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৫৬৫ জন এবং ঢাকার বাইরে সারা দেশে ২৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। বর্তমানে দেশে সর্বমোট তিন হাজার ৩০৪ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার ২৪৭ জন এবং ঢাকার বাইরে গোটা দেশে এক হাজার ৫৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভরতি রয়েছেন। স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছরের ০১ জানুয়ারি থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে (dengue) আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন মোট ২৭ হাজার ৮০২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩৯২ জন। আর এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১০৬ জন।
[আরও পড়ুন: ব্রুনেইয়ের ধনকুবের সুলতানকে ১৫টি ছাগল উপহার বাংলাদেশের]
স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশ্যালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, “এবারের ডেঙ্গুর ধরনটা অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। এবছর শহর থেকে গ্রাম এবং পাহাড়ি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। ডেঙ্গু মশা ইতোমধ্যে তার সংক্রমণের ধরন বদলে ফেলেছে। আগে এডিস মশা শুধু সকালে এবং সন্ধ্যায় হানা দিত। কিন্তু এখন রাতেও এডিস মশা কামড়াচ্ছে। যার ফলে এবার শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। যদি আর বৃষ্টি না হয় তাহলে এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, আর যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়বে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ ও ২০ সালেও বাংলাদেশে (Bangladesh) ভয়াবহ রূপ ধরণ করেছিল ডেঙ্গু। করোনা আবহে এই রোগীর আক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটাই জটিল করে তোলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশেষ করে যাদের বিভিন্ন ধরনের হার্টের, কিডনি, থ্যালাসেমিয়ার কিংবা হাঁপানি সমস্যা আছে, তাদের ঝুঁকিও অত্যন্ত বেশি। তাই মানুষের কাছে যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে তৎপর সরকার।