পুজোয় জামাকাপড় তো কিনবেন। ভালো ভালো ভালো খাবারও খাবেন। আর তার সঙ্গে চলবে আড্ডা। হই হট্টগোল হাসি। হাসির জন্য চাই ঝকঝকে দাঁত (Teeth)। তাতেই তো ইমপ্রেশন! তাই দাঁত পরিষ্কার ও ভালো রাখার উপায় বাতলে দিলেন দন্ত চিকিৎসক সঞ্চিতা কুণ্ডু।
দাঁত যেমন শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ তেমনই এর রয়েছে এস্থেটিক ভ্যালু। দাঁতের সৌন্দর্য তার গঠনে, বর্ণে। দাঁত থাকলেই হল না, সেটা কতটা পরিষ্কার, ঝকঝকে ও কতটা সুগঠিত তার উপরে কিন্তু একজনের সার্বিক সৌন্দর্য নির্ভর করবে। অর্থাৎ রূপের কদর পেতে দাঁতের সৌন্দর্যে দিকটা নজর করা খুবই দরকার।
কারণ কী?
মূল কারণ কখনও জলে আয়রন বেশি কিংবা অতিরিক্ত রং মেশানো খাবার খাওয়া। আবার কারও ক্ষেত্রে তামাক জাতীয় দ্রব্য কিংবা অ্যালকোহল সেবনই মূল শত্রু। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। সঠিক নিয়ম না জেনে বাড়িতে দাঁতের দাগ তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বেশিরভাগ মানুষ। কারও মতে, বেকিং সোডা রোজ টুথপেস্টে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে, আবার কেউ জোরে চাপ দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে ব্রাশ করলেই ভাবেন ফল মিলবে। এই অভ্যাস দাঁতের এনামেল নষ্ট, মুখের ভিতরে স্বাস্থ্য দুর্বল, দাঁতের গোড়া নরম করে। অর্থাৎ হিতে বিপরীত হয় বেশি।
দাঁতের ছোপ তুলতে
১৮ বছর বয়সের পর চিকিৎসকের পরামর্শে এক থেকে দেড় বছর অন্তর একবার স্কেলিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। এতে দাঁত পরিষ্কারও থাকে ও মুখের ভিতরের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। খুব সহজে খাবারের মধ্য দিয়ে রোগ জীবাণু শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না।
ক্লিনিকে গিয়ে স্কেলিং করার ক্ষেত্রে একজনের মুখের স্বাস্থ্য, মাড়ি, দাঁত পরীক্ষা করে সঠিক পদ্ধতি বলে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আল্ট্রাসনিক মেশিনের মাধ্যমে দাঁত স্কেলিং করে ঝকঝকে করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
যাঁদের বেশি কথা বলতে হয় কাজের ক্ষেত্রে, অভিনয় জগতের মানুষজন, পাবলিক স্পিকার, গান করেন বা স্কুল কলেজে পড়ান এঁরা দাঁত সাদা করার জন্য ব্লিচিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রথমে দাঁতকে স্কেলিং ও পলিশিংয়ের পর পারক্সাইড ভিত্তিক ব্লিচিং এজেন্ট ব্যবহার করে দাঁতকে সাদা করা হয়।
[আরও পড়ুন: ‘মেয়ের মতো’ বলে লাগাতার ধর্ষণ! পরিচালকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিনেত্রী ]
ঘরোয়া উপায়ে
দাঁত মাজার সময় টুথপেস্টের মধ্যে মিশিয়ে নিন বেকিং সোডা। খুব আলতো হাতে ব্রাশ করুন। সপ্তাহে ২-৩ বারের বেশি করবেন না।
দিনে দু’বার ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দ্বারা দাঁত মাজুন। অন্তত একবার ফ্লস করুন এবং ফ্লোরাইডযুক্ত জল পান করুন।
নিয়মিত খেয়াল রাখুন মুখে যেন কোনও খাবারের কণা আটকে না থাকে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর নুন গরম জলে মুখ ধোয়া, মাউথ ওয়াশ ব্যবহার ও কুলি করার অভ্যাস রাখুন।
আপেল, সেলারি এবং ব্রকোলির মতো উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবারগুলি লালাক্ষরণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এগুলো খান।
কোন পর্যায়ে এসে করবেন?
মুখের দুর্গন্ধ দূর: মুখ শুষ্ক এবং দীর্ঘদিন ধরে মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা হতে শুরু করলে করুন।
মাড়ি দিয়ে রক্তপাত বন্ধ: নিয়মিত সঠিক উপায়ে দাঁত ব্রাশ না করলে লালারসের সঙ্গে মুখের মধ্যে থাকা জীবাণু ও খাদ্যকণা মিলে ডেন্টাল প্লাক নামের সাদা আঠালো পদার্থ তৈরি করে দাঁতের গোড়ায়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্কেলিং করলে উপকার মেলে।
পার্লারেও হয়, তবে বুঝে করুন
আজকাল অনেক পার্লারেও টিথ হোয়াইটিংয়ের অফার দেওয়া হয়। যিনি দাঁত সাদা করছেন তিনি যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হন তাহলে বিপদ আছে। ব্যবহৃত উপাদান বা জেলগুলি মাড়ি এবং মুখের সংস্পর্শে এসে ভিতরে বড় বড় ফোসকার সৃষ্টি করে। তাই সাবধান।
কিছু অভ্যাস এড়িয়ে চলুন
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন
চা কফি পান বেশি করা
পান খাওয়া
ধূমপান করা
খৈনি, গুটখা সেবন
রঙিন খাবারের প্রতি আসক্তি
ফোন - ৯৮৩১০৯৯২৪৯