সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে ইভটিজিংয়ের শিকার বান্ধবী। প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার ছাত্রী ও তার পরিবার। জানতে পেরেই নিগৃহীতার বাড়িতে ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) এসডিপিও মিতুন কুমার দে। ছাত্রীর সুবিধার্থে ব্যবস্থা করলেন নিরাপত্তার।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার দেউলার নাজরা এলাকার বাসিন্দা আলিশা খাতুন। নেতড়া হাইমাদ্রাসার ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ডায়মন্ড হারবার থানার অধীন মশাটের নবসংগ্রামপুরের একটি স্কুল। পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময় নাজরারই এক যুবক আরিয়ান মোল্লা আলিশারই এক বান্ধবীর উদ্দেশ্যে আপত্তিকর কথা বলে। ইভটিজিং করে বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদ করে আলিশা। পথে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের জানালে ওই যুবককে ধমক দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে পুলিশকে জানানোর প্রতিশোধ নিতে রাতে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে আলিশার বাড়ি চড়াও হয় আরিয়ান। আগন্তুকের দল আলিশার পরিবারকে রীতিমতো হুমকি দেয় ও মারধর করে আসে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ার বিরল শ্বেতপলাশ নিয়ে হইচই! গাছের দাম উঠল ৮০ লক্ষ টাকা]
এই ঘটনার খবর রবিবার সকালে পৌঁছয় ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন কুমার দে’র কানে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান আলিশার বাড়িতে। আতঙ্কিত ছাত্রীটির মনোবল বাড়াতে এসডিপিও তার হাতে তুলে দেন ফুল, ডায়েরি, পেন ও চকোলেট। ছাত্রীর অভিভাবকদের ও ছাত্রীটিকে অভয় দেন এসডিপিও স্বয়ং। এভাবেই বারবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হতে আলিশাকে পরামর্শ দেন তিনি। সোমবার থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াতের পথে ছাত্রীর নিরাপত্তায় দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকেও নিয়োগ করেন এসডিপিও। মিতুনবাবু বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত আরিয়ানের খোঁজে শুরু হয়েছে চিরুনি তল্লাশি। আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এই ঘটনায় অভিযুক্ত আরিয়ানের পরিবারের কয়েকজনকে। আলিশার নিরাপত্তায় যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, সে যাতে ভাল করে পরীক্ষা দিতে পারে তার জন্য যথাযথ নিরাপত্তারও বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।”
এদিকে পুলিশের এমন ভূমিকায় খুশি আলিশা ও তার পরিবার-পরিজনও। এসডিপিওকে ধন্যবাদ জানিয়েছে আলিশার পরিবার। ওই পরিবারের কথায়, পুলিশের এমন ব্যবহার ও কাজে তাঁরা যারপরনাই আপ্লুত। মেয়েকে এভাবেই সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের উপদেশ দিয়েছেন আলিশার অভিভাবকরা।