সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদ দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) ছাড়তেই হত। গেরুয়া শিবিরের রাজ্য সভাপতি পদে দিলীপের দ্বিতীয়বারের কার্যকালও শীঘ্রই শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরই। আর বিজেপির সাংগঠনিক নিয়ম অনুসারে কাউকেই পরপর দু’বারের বেশি রাজ্য সভাপতি করা হয় না। সুতরাং, দিলীপের সরে যাওয়াটা ছিল অবশ্যম্ভাবী। কবে তাঁকে বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরানো হবে, সেটাই ছিল মূল আলোচ্য বিষয়। মেদিনীপুরের সাংসদকে কীভাবে পুনর্বাসন দেওয়া হবে সেটা নিয়েই চলছিল যাবতীয় জল্পনা।
প্রথমে জল্পনা শোনা গিয়েছিল, রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হতে পারে দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু রাজ্য থেকে চারজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব পেলেও, তালিকায় নাম ছিল না দিলীপের। উলটে দেখা গেল, মেয়াদ শেষের মাত্র কয়েক মাস আগে দিলীপ ঘোষকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে একপ্রকার সরিয়ে দিল বিজেপি। বদলে তাঁকে দেওয়া হল দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ। দলের অনেকেই বলছেন, দিলীপদার মতো সভাপতিকে মেয়াদ শেষে সসম্মানে বিদায় জানানোই যেত।
[আরও পড়ুন: ‘বিজ্ঞানের পড়ুয়া না হলে বোঝা যাবে না’, ‘গরুর দুধে সোনা’ তত্ত্বে সায় সুকান্ত মজুমদারের]
বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহ-সভাপতি পদটি কার্যত গুরুত্বহীন। বিজেপিতে সভাপতির পদ সবচেয়ে বেশি ভোগ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সম্পাদকরা। সহ-সভাপতি পদটি আলঙ্কারিক। দিলীপের এই পদ নিয়েই নতুন করে জল্পনা দানা বেঁধেছে। কারণ, এই একই পদে বসানো হয়েছিল মুকুল রায়কে (Mukul Roy)। মজার কথা হল, এই পদে ‘অসম্মানিত’ হয়েই মুকুলবাবু তৃণমূলে (TMC) ফিরে গিয়েছেন। এর আগে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে অপসারণের পর রাহুল সিনহাকেও এই পদে বসায় গেরুয়া শিবির। তিনিও সেটা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন দলের অন্দরে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কি দলে কোণঠাসা হচ্ছেন দিলীপও? প্রশ্ন তো উঠছেই।
[আরও পড়ুন: ‘দিলীপদার থেকে লড়াই শিখেছি’, নতুন দায়িত্ব পেয়ে প্রাক্তনীর প্রশংসা সুকান্ত মজুমদারের]
প্রশ্নাতীতভাবেই, দিলীপ ঘোষ এখনও পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপির সবচেয়ে সফল সভাপতি। তাঁর আমলেই লোকসভায় (Lok Sabha) ১৮ জন সাংসদ পেয়েছে বিজেপি। প্রথমবার গেরুয়া শিবির রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও পেয়েছে দিলীপের সভাপতিত্বেই। শুধু তাই নয়, দিলীপের আমলেই বঙ্গ রাজনীতির আঙ্গিকে নিজেদের আলাদা একটা জায়গা করে নিতে পেরেছে বিজেপি। এ হেন সফল একজন রাজ্য সভাপতিকে সহ-সভাপতির মতো আলঙ্কারিক পদ দেওয়া মানে, একপ্রকার তাঁর ‘ডিমোশন’ হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।