সংবাদ প্র্তিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহে থমকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। বাতিল হয়েছে একাধিক পরীক্ষা। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের উপর চাপ কমাতে সিলেবাস কাটছাঁট করার কথা জানিয়েছিল সিবিএসই (CBSE)। সেই ‘অজুহাত’কে হাতিয়ার করেই সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হল ধর্মনিরপেক্ষতা (Secularism), দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো (Federalism), ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা (Food Security), নাগরিকত্বের (Citizenship) মতো গুররুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যা নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের কথায়, সিলেবাস কাটছাঁটের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রয়েছে। যদিও সেই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে CBSE।
করোনার দাপটে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে তালা। তাই ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই সিবিএসই (CBSE) জানিয়ে দিয়েছিল নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাসে তারা কিছু কাটছাঁট করবে। বুধবার সেই মতো ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্যের জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির নয়া সিলেবাস প্রকাশিত হল।
একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে পুরোপুরি বাদ গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো (Federalism), নাগরিকত্ব (Citizenship), জাতীয়তাবাদ (Nationalism) এবং ধর্মনিরপেক্ষতা (Secularism)। আবার স্থানীয় প্রশাসন সংক্রান্ত অধ্যায় থেকে দু’টি অংশ- ‘কেন স্থানীয় প্রশাসনের দরকার?’ও ‘ভারতে স্থানীয় প্রশাসনের অগ্রগতি’ বাদ দেওয়া হয়েছে। আবার দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘সমসাময়িক বিশ্বে নিরাপত্তা’, ‘পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ’ ও ‘ভারতের সামাজিক ও নয়া সামাজিক আন্দোলন।’ আবার নবম শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, গণতান্ত্রিক অধিকারের (Democratic Rights) অধ্যায়টিও।
[আরও পড়ুন: দেশের স্বার্থে ‘হিরো’গিরি, চিনা সংস্থার সঙ্গে ৯০০ কোটির চুক্তি বাতিল করল হিরো সাইকেলস]
অর্থনীতি থেকেও বাদ পড়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর মধ্যে রয়েছে ‘পরিকল্পনা উন্নয়ন’ (Planned Development), ‘ভারতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের ধারা বদল’, ‘প্ল্যানিং কমিশন এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা’ (Planning Commission and Five years plan), বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বৈদেশিক সম্পর্কও। এমনকী, ‘গণতন্ত্র ও বৈচিত্র্য’, ‘জাত-ধর্ম-লিঙ্গ’ শীর্ষক অধ্যায়টিও সিলেবাসের বাইরে। বাদ পড়েছে খাদ্য সুরক্ষার (Food Security) অধ্যায়টিও।
সিবিএসই (CBSE)-এর এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সমালোচকদের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের মতাদর্শ বিরোধী অধ্যায়গুলির উপর কাঁচি চালানো হয়েছে। সিবিএসই’র এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূলও। এমনকী এর বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “সিবিএসই’র এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করছি।” এমন পরিস্থিতি CBSE’র সাফাই, এর পিছনে রাজনৈতিক কোনও উদ্দেশ্য নেই। মহামারী পরিস্থিতির জন্যই এটি কেবল ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে কার্যকর করা হবে।
[আরও পড়ুন: গালওয়ান উপত্যকা থেকে আদৌ পিছিয়েছে চিনা সেনা? উত্তর মিলল উপগ্রহ চিত্রে]
The post করোনার থাবা CBSE’র সিলেবাসেও, বাদ গেল ধর্মনিরপেক্ষতার চ্যাপ্টার appeared first on Sangbad Pratidin.