শেখর চন্দ্র ও সোমনাথ রায়: অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রা কি স্রেফ সময়ের অপেক্ষা? ক্রমশ জোরাল হচ্ছে সে জল্পনা। দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্টে দিল্লি নিয়ে আরজি জানিয়ে আবেদন করেছে ইডি। আগামী মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানি। ওই মামলায় বিচারক কী বলেন, তার উপরেই নির্ভর করছে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির ভাগ্য।
গত আগস্টে গরু পাচার মামলায় সিবিআই গ্রেপ্তার করেছিল অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal)। এরপর সিবিআইয়ের হাতে উঠে আসে একের পর এক তথ্য। অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের পাহাড়প্রমাণ সম্পত্তির হদিশ পান তদন্তকারী। বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎস ঠিক কী, তা জানতে ইডি আধিকারিকরা আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে গিয়ে বৃহস্পতিবার একটানা প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে। সূত্রের খবর, বেশিরভাগ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন অনুব্রত। আর তাতেই অসন্তুষ্ট ইডি আধিকারিকরা। ঠিক সে কারণে সিবিআই গ্রেপ্তারির মাসতিনেক পর এবার ইডি গ্রেপ্তার করে জেলবন্দি তৃণমূল নেতাকে। বহুদিন ধরে অনুব্রতকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সেই অনুযায়ী দিল্লির আদালতে আরজি জানায় ইডি।
[আরও পড়ুন: অভিষেকের বাবার করা মানহানির মামলায় শুভেন্দুকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ আদালতের]
জানা গিয়েছে, এই আদালত থেকে ইডি (ED) যদি প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট পায় তবেই অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে যেতে পারবে। তবে বিচারপতি রঘুবীর সিং মঙ্গলবার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন। ওই শুনানির রায় যদি ইডি’র পক্ষে যায় তবেই অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন আধিকারিকরা। পাশাপাশি, যেরকম নির্দেশিকা থাকবে জেল সুপারকে সেভাবেই অনুব্রতকে দিল্লি পৌঁছতে হবে। তাই আপাতত কয়েকদিন আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারেই থাকবেন দাপুটে তৃণমূল নেতা।
অনুব্রতর একসময়ের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালত। এদিনের শুনানিতে ইডি’র আইনজীবী অনুব্রত মণ্ডলকে সায়গল হোসেনের বস বলেই উল্লেখ করেন। সূত্রের খবর, সায়গলের মুখোমুখি বসিয়েও অনুব্রতকে জেরা করা হতে পারে। এদিকে, বোলপুরের বেশ কয়েকজন আইনজীবী এদিন আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে আসেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন আইনজীবী সংশোধনাগারের ভিতরে ঢোকেন। বোলপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তরুণ দাসের নেতৃত্বে ওই আইনজীবীরা অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা সংশোধনাগারের ভিতরে ছিলেন প্রায় আধঘন্টা। ইডি’র চোখা চোখা প্রশ্নবাণ কীভাবে সামাল দেবেন অনুব্রত, সে সম্পর্কে আইনজীবীরা তাঁকে নানা পরামর্শ দেন বলেই মনে করা হচ্ছে।