shono
Advertisement
Afghan Minister

ভারতে আতিথেয়তা বা কূটনীতি মহিলাবর্জিত নয়, আফগানদের বোঝানো গেল?

সম্প্রতি ভারত সফর করেন আফিগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।
Published By: Kishore GhoshPosted: 04:54 PM Oct 16, 2025Updated: 04:55 PM Oct 16, 2025

আফিগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি কি বুঝতে পারলেন, ভারতে আতিথেয়তা বা কূটনীতি কোনওটিই ‘মহিলা’বর্জিত নয়?

Advertisement

জাভেদ আখতার যখন কিছু বলেন, তার আলাদা সারবত্তা তৈরি হয়। বাঘ বা অন্য বন্যপ্রাণ বিলুপ্ত হয়ে এলে, সংরক্ষণ দরকার। এর জন্য সংবেদনশীল মনও দরকার। কিন্তু বন্যপ্রাণ শিকারের সঙ্গে হিংসাকে জুড়ে দিয়ে যারা মোটা দাগের যুক্তি সাজায়, তাদের উদ্দেশে জাভেদ আখতারের বক্তব্যটি এরকম: পশুপাখি শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা নিয়ে এত কথা হয়, কিন্তু মাছ ধরা বা ‘ফিশিং’ নিয়ে আমরা এত উদাসীন কেন? মাছ ধরাকে সবসময় দেখা হয় শান্ত চিত্তের বিনোদন রূপে। হাতে সময় আছে, মনে শখ আছে, চলুন মাছ ধরা যাক। জলে ছিপ বিছিয়ে দিয়ে চুপ করে বসে থাকা। চিৎকার নেই। রণহুংকার নেই। জলের ভিতরে কী চলছে যেমন দেখার উপায় নেই, তেমনই জল থেকে উপরে কী ঘটছে, তাও তো দেখা যায় না। কাজ থেকে অবসর নেওয়ার পরে, বা হাড়ভাঙা খাটুনির শেষে, একটু খোলামেলা সময় কাটানোর জন্য বাঘা বাঘা মানুষকে মাছ ধরতে দেখা যায়।

কিন্তু জাভেদ আখতারের প্রশ্ন, মাছেদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ব্যাপারটি কি জান্তব ও ভয়াবহ নয়? কেউ ছিপে করে একটা পছন্দের খাবার ঝুলিয়ে দিয়েছে। মাছেরা সেই টোপ গিলল। তারপর বঁড়শিতে গেঁথে যখন তাদের তোলা হয়, একটা সময় আর অক্সিজেন পায় না মাছেরা। ছটফট করতে করতে মারা যায়। এরকম সুচিন্তিত অথচ হিংসায় ভরা নৃশংস শিকার কাণ্ড ক’টা রয়েছে? কিন্তু কেউ তো প্রতিবাদ করে না। কেউ তো বলে না– এ জিনিস অমানবিক, নিষ্ঠুর? কেউ তো মাছ ধরা বন্ধ করতে রায় দেয় না! কেন? জাভেদ আখতারের পাল্টা যুক্তি: এর কারণ, মাছেদের স্বরতন্ত্রী নেই। মাছেরা চিৎকার করতে পারে না। তাই মাছেদের যন্ত্রণা মানুষের মস্তিষ্কে ও হৃদয়ে আলাদা করে আলোড়ন তোলে না।

এই উদাহরণটি পেশ করার সঙ্গে-সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন আসল কথাটি। সাহিত্য ও সংস্কৃতির নানা শাখাপ্রশাখা হল এই সমাজের কণ্ঠস্বর, স্বরতন্ত্রী। তাদের প্রকাশে বাধা দেওয়া মানে নীরবে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার আবহ রচনা করা। অরাজকতা নামিয়ে আনা। অর্থাৎ কথা বলার সুযোগ যাদের আছে, কণ্ঠ তোলার অধিকার তাদের অর্জন করতেই হবে। নয়তো মাছেদের মতোই নিশ্চুপে শিকার হয়ে যেতে হবে।

আমির খান মুত্তাকি, আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী, ইতোমধ্যে ভারতজুড়ে চরম আলোচিত– বলা উচিত, সমালোচিত। ভারতের মাটিতে তাঁর সাংবাদিক সম্মেলনে মহিলা সাংবাদিকদের থাকতেই দেওয়া হয়নি। এমন কাণ্ড হয়তো আকছার ঘটে থাকে আফগানিস্তানে। কিন্তু এ দেশে গণতন্ত্র এখনও বহাল। কাজেই তোলপাড় উঠল, ভুল ধরিয়ে দেওয়া হল মুত্তাকিদের। প্যাঁচে পড়ে মহিলা সাংবাদিকদের নিয়ে আবারও প্রেস কনফারেন্স করতে হল। ভালো কথা। কিন্তু জাভেদ আখতার প্রশ্ন তুলেছেন, তালিবান নেতাকে এত সম্মান দেওয়া কেন? আতিথেয়তা এবং কূটনীতির সাপেক্ষে দেখলে হয়তো এর উত্তর হয়। তবে গণতন্ত্র, বা আতিথেয়তা বা কূটনীতি যে ‘মহিলা’বর্জিত নয়, তা কি বোঝানো গেল যথাযথভাবে? নয়তো গল্পটি তো সেই মাছশিকারের মতোই হয়ে যাবে যে!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement