shono
Advertisement
Cloud Seeding

আর্দ্রতার জন্য! দূষণ ঠেকাতে 'নকল বৃষ্টি'র চেষ্টা দিল্লিতে, বিকল্পের প্রয়োজন পড়ছে কেন?

কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে, বৃষ্টি হয়েছে সামান্য।
Published By: Biswadip DeyPosted: 01:57 PM Oct 31, 2025Updated: 01:57 PM Oct 31, 2025

দূষণ ঠেকাতে ‘ক্লাউড সিডিং’-এর মাধ্যমে বৃষ্টিপাতের ব্যবস্থা করেছিল দিল্লি সরকার। প্রশ্ন– বিকল্পের প্রয়োজন পড়ছে কেন?

Advertisement

জলে গেল কোটি কোটি টাকা। প্রযুক্তির সাহায্যে মেঘের গর্ভে বীজ বোনা হয়েছিল। আশা ছিল, দিল্লিতে বৃষ্টি হবে। দূষণ কমবে। কিন্তু হা হতোস্মি! বৃষ্টি হল নামমাত্র, ছিটেফোঁটা। প্রত্যাশিত ফল না হওয়ায় ‘ক্লাউড সিডিং’ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

দীপাবলির পর থেকেই বিষাক্ত হয়ে উঠেছে দিল্লির বাতাস। তাই ‘ক্লাউড সিডিং’-এর ব্যবস্থা করেছিল দিল্লি সরকার। অর্থাৎ, কৃত্রিম বৃষ্টিপাত। বিমান থেকে ড্রাই আইস, সিলভার আয়োডাইড, আয়োডাইজড লবণ এবং রক সল্ট ছড়িয়ে দেওয়া হয় মেঘের উপর। এর জন্য আইআইটি কানপুরের সঙ্গে ‘মউ’ স্বাক্ষর করে দিল্লি সরকার। মঙ্গলবার তার ট্রায়াল হয়। কিন্তু বৃষ্টি হল না-হওয়ার-মতো।

আইআইটি কানপুরের ডিরেক্টর মনীন্দ্র আগরওয়ালের সাফাই, এটি ম্যাজিক নয়, দূষণের মোকাবিলায় ‘বিকল্প’ ব্যবস্থামাত্র। মেঘে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। অর্থাৎ, খুব সামান্য। এত কম আর্দ্রতায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে। তঁার স্পষ্ট কথা, ‘দূষণের উৎস খুঁজে বের করতে হবে। যাতে ক্লাউড সিডিংয়ের প্রয়োজনই না পড়ে।’ এই সহজ কথাটাই কেন কেন্দ্র বা রাজ্যের সরকার বা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না বা চাইছে না, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

দূষণ ঠেকাতে ‘ক্লাউড সিডিং’-এর মাধ্যমে বৃষ্টিপাতের ‘বিকল্প’ ব্যবস্থার দরকার হচ্ছে কেন? দূষণের গোড়ার কারণগুলো কেন সমূলে বিনাশ করা যাচ্ছে না? কেন রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশের মতো পাহাড়ি এলাকায়, পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় প্রবল বৃষ্টিপাত-বন্যা হচ্ছে? অথচ দেশের অনেক রাজ্যে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমছে। অনিয়ন্ত্রিত পরিকল্পনায় নগরোন্নয়ন, দূষণ সৃষ্টিকারী কল-কারখানায় ঢালাও অনুমোদন, কার্বন নিঃসরণ রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়া, জীবাশ্ম জ্বালানির যথেচ্ছ ব্যবহার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় খামতি, ফসলের গোড়া পোড়ানো– একাধিক কারণ রয়েছে। যার মোকাবিলায় সরকারি ব্যর্থতা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে সাদারণ মানুষের বেপরোয়া মনোভাব ও সচেতনতার অভাব। আছে বৃহৎ কর্পোরেট জগতের চাপও।

এখনও পর্যন্ত তিনটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ব্যর্থ হয়েছে। তবুও সমস্যার স্থায়ী সমাধানে মন না-দিয়ে এই ধরনের ‘শর্টকাট’-এর পিছনে ছোটা কি যুক্তিসংগত? স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই তিনটি ব্যর্থ ট্রায়াল বাবদ প্রায় ১.০৭ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু বৃষ্টি হয়েছে সামান্য। হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ট্রায়ালে খরচ দঁাড়াচ্ছে প্রায় ৩৫.৬৭ লাখ টাকা। অথচ বৃষ্টিবাহী, আর্দ্র মেঘ খুঁজে পাওয়া ‘খড়ের গাদায় সুচ খোঁজার মতো’। ফলে সাফল্যের আশা ক্ষীণ। আর পরীক্ষা সফল হলেও দু’-একদিনের জন্য দূষণ কমবে। তারপর যে কে সেই। চিরস্থায়ী আশ্বাস এতে নেই? সুতরাং, বাস্তবে পয়সা খরচ করে তামাশা দেখার নামান্তর। পরিবেশ দূষণ গভীর ও গুরুতর সমস্যা। এর মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদী ও প্রমাণিত সমাধানের দিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • দূষণ ঠেকাতে ‘ক্লাউড সিডিং’-এর মাধ্যমে বৃষ্টিপাতের ব্যবস্থা করেছিল দিল্লি সরকার।
  • প্রশ্ন– বিকল্পের প্রয়োজন পড়ছে কেন?
  • পরিবেশ দূষণ গভীর ও গুরুতর সমস্যা। এর মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদী ও প্রমাণিত সমাধানের দিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত।
Advertisement