অরূপ বসাক, মালবাজার: বাংলার ‘পদ্মশ্রী’ প্রাপ্ত ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’ করিমুল হকের (Karimul Haque) জীবনী এবার আসছে বড়পর্দায়। বলিউডের (Bollywood) প্রযোজন করিম মোরানি এবং পরিচালক বিনয় মুদগলের সঙ্গে এই সংক্রান্ত মউ স্বাক্ষর হয়ে গেল। এই কাজের জন্য পরিচালকের ফোন পেয়ে বুধবার মুম্বই উড়ে গিয়েছিলেন করিমুল হক। আনুষ্ঠানিক সইসাবুদ সেরে শনিবার ফিরেছেন জলপাইগুড়িতে, নিজের গ্রাম ধলাবাড়িতে। এই উদ্যোগে খুবই খুশি তিনি। তাঁর প্রতিক্রিয়া, এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক ছবি হতে চলেছে।
জলপাইগুড়ি জেলার এক অখ্যাত গ্রাম রাজাডাঙার ধলাবাড়ির বাসিন্দা করিমুল হক। তিনি ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’ নামে পরিচিত। শহর থেকে বহু দূরের প্রান্তিক এলাকার বাসিন্দাদের চিকিৎসার প্রয়োজনে নিজের বাইককেই অ্যাম্বুল্যান্সের মতো ব্যবহার করেন করিমুল। বাইকেই তিনি মুমুর্ষু রোগীদের পৌঁছে দিতেন হাসপাতালে। এই কাজেই বছরের পর বছর ধরে তিনি সমাজসেবা করে চলেছেন। তার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৭ সালে ‘পদ্মশ্রী’ (Padmasree) সম্মান তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে। তারপরই তাঁর পরিচয়ের ব্যপ্তি ঘটে। তাঁকে নিয়ে সিনেমা তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়।
[আরও পড়ুন: দরিদ্র পরিবারগুলিকে আয়ের ব্যবস্থা করে দিতে এবার ই-রিকশা উপহার দিলেন ‘রবিনহুড’ সোনু]
করিমুল হক জানিয়েছেন, তাঁর জীবন কাহিনি নিয়ে চলচ্চিত্রের শুটিং হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু লকডাউনে তা ভেস্তে যায়। করিমুল হকের চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের। কিন্তু তাঁর অকালমৃত্যুতে পরিকল্পনাও পালটাতে হয়। আক্ষেপের সুরে করিমুল বলছেন, ”সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুতে খুব মুষড়ে পড়েছিলাম।” অবশেষে পরিচালক বিনয় মুদগলের ফোন পান তিনি। নতুন করে তাঁর জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি হওয়ার নিশ্চয়তা পেয়ে বুধবার মুম্বই উড়ে যান জলপাইগুড়ির ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’। সেখানকার এক পাঁচতারা হোটেলে প্রযোজক, পরিচালকের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর হয়।
[আরও পড়ুন: বলিউডে পা রাখতে চলেছেন আমির খানের ছেলে! জুনেদকে ঘিরে কৌতূহল তুঙ্গে]
তবে করিমুল হকের চরিত্রে কে অভিনয় করবেন, তা এখনও ঠিক হয়নি। সুশান্তের মৃত্যুর পর কথা ছিল, সোনু সুদ অভিনয় করবেন। কিন্তু করিমুল হকের উচ্চতা থেকে সোনু সুদের উচ্চতা অনেকটা বেশি হওয়ায় সেই ভাবনা বাতিল হয়ে যায়। করিমুল হকের কথায়, ”পরিচালক বিনয় মুদগল জানিয়েছেন, চরিত্রাভিনেতা নির্বাচনে চমক থাকবে। সেক্ষেত্রে শাহরুখ খানের নামও ঘোরাফেরা করছে।” বাড়ি ফিরে করিমুল জানান, তাঁর মতো অনেক মানুষ সমাজের দৃষ্টান্তমূলক কাজ করে চলেছেন, তাঁদেরও জীবনী নিয়ে এভাবে সিনেমা তৈরি হোক। তাহলে তাঁদের সেসব কাজ আরও অনেকের কাছে পৌঁছনোর সুযোগ পাবে।