আকাশ মিশ্র: কিছু ছবি হয়, যা দেখলে মন ভাল হয়ে যায়। আর কিছু হয়, যা মন ভার করে। পরিচালক রেবতি পরিচালিত নতুন ছবি ‘সালাম ভেঙ্কি’ ঠিক এমনই ছবি যা কিনা মনকে দুর্বল করে তোলে। যার প্রতিটি দৃশ্য়ে চোখের কোণায় জল আসে, দীর্ঘ নিশ্বাস পড়ে। যাঁরা ‘সালাম ভেঙ্কি’ (Salaam Venky) ছবি থেকে বিনোদন আশা করেন তাঁরা এই ছবি নাই-বা দেখলেন, কারণ, ‘সালাম ভেঙ্কি’ একেবারেই ইমোশনে আষ্টেপিষ্টে জড়ানো এক ছবি। ছবির শুরু থেকেই তাই কোনও ভনিতা নেই। এক অসুস্থ ছেলের মরণ-বাঁচন লড়াই ও এক মায়ের হাল না ছেড়ে দেওয়ার গল্প। সঙ্গে যোগ দেয় ইচ্ছামৃত্যু ও অরগ্যান ডোনেশন এবং আইন-আদালত!
‘সালাম ভেঙ্কি’ ছবির গল্প বাস্তব ঘটনা থেকেই তুলে আনা। তাই ছবির চিত্রনাট্য় কখনই বাস্তব থেকে দূরে সরে যায় না। যতটুকু কাল্পনিক তা একেবারেই ছবির নাটকীয়তাকে বজায় রাখার জন্য। ছবির প্রথমার্ধে শুধুই গল্পের সঙ্গে দর্শককে পরিচয় করানোর চেষ্টা। ঠিক যেন নানা ঘটনার মন্তাজ। ছবির আসল মারপ্যাচ শুরু দ্বিতীয়ার্ধে।
[আরও পড়ুন: থিমের ঠাকুরের মতো সাজানো গল্পে কৌশিক-চূর্ণী ও বনি-কৌশানি, পড়ুন ‘শুভ বিজয়া’র রিভিউ]
পরিচালক রেবতি সলমন ও শিল্পা শেট্টিকে নিয়ে তৈরি করেছিলেন ‘ফির মিলেঙ্গে’। সেখানে এক এইডসে আক্রান্ত রোগীর লড়াইকে তুলে ধরেছিলেন পরিচালক। রেবতির সেই ছবিও মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। ‘সালাম ভেঙ্কি’ ছবির চিত্রনাট্য সেই নিয়মেই সাজালেন রেবতি। তবে এই ছবিতে রেবতির তুরুপের তাস কাজল। বলা ভাল ‘সালাম ভেঙ্কি’ ছবির মেরুদণ্ডই হলেন কাজল। তাঁর অভিনয় চিত্রনাট্যকে ছাপিয়ে যায়। একদিকে অসুস্থ ছেলের অসহায় মায়ের চরিত্র, একই সঙ্গে লড়াকু এক মানুষ। চরিত্রের দুই শেডেই অসাধারণ কাজল। তবে ভেঙ্কির চরিত্রে বিশাল জেঠওয়াও অসাধারণ। যে অভিনেতা ‘মার্দানি টু’তে খলনায়কের চরিত্রে চমকে দিয়েছিল সবাইকে, সেই বিশালের কাছে এমন একটা চরিত্রে অভিনয় করাটা বেশ চ্য়ালেঞ্জের ছিল। সে দিক থেকে একশো শতাংশ নম্বর অনায়েসে দেওয়া যা বিশালকে। রাজীব খন্ডেলওয়াল, কমল সাদানা, প্রিয়মণি, রাহুল বসু, প্রত্য়েকেই যথাযথ। সব মিলিয়ে ‘সালাম ভেঙ্কি’ অভিনয় নির্ভর একটি ছবি। যা দেখলে মন ভার হলেও, ভাল সিনেমা দেখার একটা পরিতৃপ্তি থাকে।