shono
Advertisement

অজয়ের ‘ময়দান’-এ চুনী গোস্বামীর চরিত্রে টলিউড অভিনেতা অমর্ত্য রায়, কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?

১০ এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে 'ময়দান'।
Posted: 07:47 PM Mar 29, 2024Updated: 07:48 PM Mar 29, 2024

ইদে মুক্তি পাচ্ছে অজয় দেবগণের ‘ময়দান’। এই ছবি দিয়েই বলিউডে পা দিচ্ছেন অভিনেত্রী চৈতী ঘোষালের ছেলে অমর্ত্য রায়। ছবি মুক্তির আগে একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিনেতা। শুনলেন শম্পালী মৌলিক। 

Advertisement

‘ময়দান’ রিলিজ করছে ইদের সময়, (১০ এপ্রিল)। জাতীয় পর্যায়ের দর্শকের সামনে আসার আগে চাপ থাকে। সেটা কতটা অনুভব করছেন?
অমর্ত্য: ‘ময়দান’-এর যেদিন ট্রেলার লঞ্চ হয়, সেদিন আমি মুম্বই গিয়েছিলাম। তখন আমি ‘নেভার মাইন্ড’-এর শুটিং করছিলাম, তার মাঝখানে একদিন। তখন প্রথমবার জীবনে বম্বে মিডিয়াকে ফেস করলাম, পাপারাৎজিদের অসংখ‌্য ক্লিক-এর মাঝে। এমন অভিজ্ঞতা আগে হয়নি। ‘ময়দান’-এ আমরা দশ-পনেরো জন ছেলে যারা ইন্ডিয়ান ফুটবল টিমের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছি, তারা সবাই এতদিনে কাছের বন্ধু হয়ে গিয়েছি। আমরা একসঙ্গে ছিলাম। ফলে ওখানে গিয়ে মজা হয়েছে। টিমের চান্ট আছে একটা, ওটা করছিলাম। যেহেতু সবাই একসঙ্গে ছিলাম, ভয়টা অতিক্রম করে গিয়েছিলাম। তারপর ট্রেলার প্রকাশ্যে আসার পরে যা যা সাড়া পেয়েছি, সেটা বড্ড ওভারহোয়েলমিং। লোকজনের এত ভালো লেগেছে, তারা বলেছে গুজবাম্পস হচ্ছে! খুবই প্রশংসা পেয়েছি। ক্রীড়াজগৎ থেকে প্রশংসা পেয়েছি। হার্ডকোর ফুটবল অনুরাগীদেরও ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়, ভালো লাগবে লোকজনের। আপাতত কিপিং মাই ফিঙ্গার্স ক্রসড (হাসি)।

বাংলার অমর্ত‌্য রায়-কে ‘চুনী গোস্বামী’-র কম বয়সের চরিত্রে দেখার জন‌্য অপেক্ষা রয়েছে। টলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া?

অমর্ত্য: ‘ময়দান’-এর ট্রেলার যখন রিলিজ করল, ‘নেভারমাইন্ড’-এর শুটিং করছিলাম। সেট-এ লোকজন যারা ছিল, শুধু অভিনেতারা নয়, ইউনিটের সদস‌্যরা সকলেই উত্তেজিত ছিল। ঋতুমাসি (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) ছিল, খুবই খুশি আর সাপোর্টিভ আমার এই কাজটা নিয়ে। উনি জানিয়েছেন যে, কতটা গর্বিত বোধ করছেন বাবিকে নিয়ে। মাসি আমাকে ‘বাবি’ বলেই ডাকেন। ক‌্যামেরা-লাইট টিম আর প্রোডাকশনের সকলেই এই খবরে খুশি হয়েছিল।

অজয় দেবগণের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কীরকম?
অমর্ত্য: অজয় স‌্যরের সঙ্গে আমার বেশ কিছু মুহূর্ত আছে, পুরো টিমের পাশাপাশি। যেহেতু চুনী গোস্বামী আর স‌্যর আবদুল রহিমের (অজয়ের চরিত্র) সম্পর্কের জায়গাটা এক্সপ্লোর করা হয়েছে ছবিতে। ওঁকে যখন প্রথমবার দেখতাম, যখন সেটে পৌঁছতেন একটা ওয়েট ক‌্যারি করতেন। সেইটা স্টারের ‘অরা’ নয়, একজন অভিনেতার চরিত্রের ওজন অনুভব করা যেত। তাঁর শরীরী ভাষা ওটা বলে দিত। রহিম স‌্যর তো খুব বড় ভিশনারি ছিলেন, অজয় স‌্যরের মধ্যে সেটা দেখতে পেতাম। কথা কম বলতেন, এক কোনায় বসতেন, চোখের মধ‌্য দিয়ে অনেক কিছু বোঝা যেত। আমার মনে হত, সেটে যখনই আসতেন ওই চরিত্রটা ধারণ করতেন। মাঝে মাঝে আমরা গিয়ে কথা বলতাম, উনি হালকা হাসিতে যেন সব উত্তর দিতেন। ওঁকে দেখে খুব অনুপ্রাণিত লাগত। মনে হত, এই মানুষটার আর কিছু প্রমাণ করার বাকি নেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে, সেই উনি যখন একটা চরিত্রের জন‌্য এতটা দিচ্ছেন, তাহলে তো আমার দুশো শতাংশ দেওয়া উচিত।

[আরও পড়ুন: ২৫০ কোটির মালকিন রণবীর-আলিয়ার মেয়ে রাহা! কীভাবে জানেন?]

এই ছবিটা বায়োপিক ধাঁচের। ভারতীয় ফুটবলে বিপ্লব এনেছিলেন স‌্যর সৈয়দ আবদুল রহিম। ১৯৫২-১৯৬২ ভারতের ফুটবলের স্বর্ণযুগ। তাঁর সঙ্গে চুনী গোস্বামীর সম্পর্ক কতটা উঠে এসেছে ছবিতে?
অমর্ত্য: সেটা ছবিটা দেখলেই বোঝা যাবে। এই মুহূর্তে আমি এইটুকু বলার জায়গায় আছি যে– ১৯৬২ সালে চুনী গোস্বামী ক‌্যাপ্টেন ছিলেন। কোচের প্রিয় খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। আবার ওঁর খেলার মাস্টারি যেমন ছিল, ক‌্যারিশ্মা-অ‌্যারোগেন্সও তেমন ছিল। সব কিছুই থাকবে ছবিতে।

এই ছবির জন‌্য ফুটবল প্রশিক্ষণ তো নিতে হয়েছিল, আর প্রস্তুতি কেমন ছিল?
অমর্ত্য: ‘ময়দান’-এর অডিশনের সময় পূর্বশর্তই ছিল যে, ফুটবল জানতে হবে। সেটা আমার ছিল। ছোটবেলায় লেকের আশপাশে স্থানীয় ক্লাবে ফুটবল খেলেছি। তাছাড়া শুটিং শুরুর আগে একজন প্রাক্তন ফুটবলার আমাদের কোচ ও স্পোর্টস কোরিওগ্রাফার ছিলেন। উনি হলেন দীনেশ নায়ার। উনি আমাদের প্রায় একবছর ধরে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ট্রেলার লঞ্চে বনি কাপুর স‌্যর বললেন যে, ‘এই ছেলেগুলো অ‌্যাক্টর ছিল, যাদের আমরা প্লেয়ার বানিয়েছি।’ পরিচালক অমিত স‌্যর বলেছিলেন, ‘এই ছবিটাতে চিট করা হবে না কোনওভাবেই’। আমরা আমাদের স্টান্স নিজেরা করেছি। ক্রিফ-টার্নস, স্টেপ-ওভার, বডি ফেন্ট, থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি সোল টার্ন নিজেই করেছি। চুনী গোস্বামীর চরিত্রের জন‌্য আরও এক্সটেনসিভ প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। এখনকার বিশ্বের সেরা ড্রিবলার যাঁরা তাঁদের বিভিন্ন আইকনিক মুভ ধরে অনুশীলনও করেছি।

যেমন?
অমর্ত্য: জিদানের থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি সোল টার্ন, মেসির বডি ফেন্ট, রোনাল্ডোর স্টেপ ওভার– এগুলো চেষ্টা করেছিলাম অ‌ভ‌্যাস করতে।

২০১৯-এ ছবির কাজ শুরু হয়। প্রায় পাঁচ বছর লেগে গেল রিলিজ হতে। সেটা কতটা হতাশ করেছিল?
অমর্ত্য: সত্যি বলতে, হতাশ করেনি। কিন্তু একটু ডিফিকাল্ট মনে হত সময়টা। এই আমাদের ছেলেদের যে দলটা তৈরি হয়েছিল, সেটা পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছে। যখনই বম্বে যেতাম, একসঙ্গে দল বেঁধে মিট করতাম। এখনও সেটা হয়, ‘ময়দান’-এর গল্পে আড্ডায় সারাদিন কেটে যেত। এখন ট্রেলার বেরনোর পরে আরও মনে হচ্ছে, সবটা ঠিকই আছে।
এর আগে আপনি ‘টোয়েন্টি টু ইয়ার্ডস’, ‘উড়নচণ্ডী’ করেছেন, ওয়েব সিরিজ ‘মারাদোনার জুতো’ করেছেন। হিন্দি ভাষাটা নিয়ে নিশ্চয়ই অসুবিধা হয়নি
‘ময়দান’-এর সময়?
অমর্ত্য: না, না। ‘টোয়েন্টি টু ইয়ার্ডস’ বা ‘উড়নচণ্ডী’ করার সময় আমি পুণে চলে গিয়েছিলাম এফটিআই জয়েন করার জন‌্য। ওখানে তো সারা দেশ থেকে লোকজন আসে। মুম্বই যাতায়াত আমার লেগেই থাকত। আমার বেশিরভাগ বন্ধুই অবাঙালি। ফলে হিন্দি নিয়ে কোনও সমস‌্যা নেই।

প্রিয় মণি-র সঙ্গে সিন আছে ছবিতে আপনার?
অমর্ত্য: না, ওটার ট্র‌্যাক আলাদা। অজয় স‌্যর, আর গজরাজ স‌্যরের সঙ্গে আমার দৃশ‌্য আছে। গজরাজ স‌্যরকে খুবই শ্রদ্ধা করি। উনি বোর্ডের অফিসিয়াল ধরনের চরিত্রে রয়েছেন। ক্লাইম‌্যাক্সের দিকে ওঁর সঙ্গে আমার শট রয়েছে। শুটিংয়ের শেষে উনি বলেছিলেন, ‘তুমি ভালো করছ অমর্ত‌্য’। এটা বিরাট ব‌্যাপার আমার কাছে। উনি ভালো বাংলা বলতে পারেন। কোনও একটা সময় উনি বাংলায় থাকতেনও, গল্প করতে করতে বলেছিলেন।
এই ছবিতে বাংলা থেকে রুদ্রনীল ঘোষও রয়েছেন। সিন আছে ওঁর সঙ্গে?
অমর্ত্য: হ্যাঁ, রুদ্রদার সঙ্গে সিন আছে আমার। দু-তিনবার আমাদের শুটের সময় ছিল রুদ্রদা। রুদ্রদাও বোর্ডের একজন মেম্বারের চরিত্রে।
আর কী সামনে?
অমর্ত্য: এখন ‘নেভারমাইন্ড’-এর পোস্ট প্রোডাকশন চলছে। মায়ের (চৈতী ঘোষাল) পরিচালিত প্রথম ছবি। এটা নিয়ে উত্তেজনা আছে। এই ছবিটা ফেস্টিভ‌্যালে যাবে পরে।

[আরও পড়ুন: কঙ্গনার অনুপ্রেরণাতেই রাজনীতিতে কৃতী স্যানন? ভোটের মুখে বড় কথা অভিনেত্রীর!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement