কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: জলাভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীতা কী? মানুষের উপর, সভ্যতার উপর জলাভূমির প্রভাব কতটা? পরিবেশ (Environment) সচেতনতায় জলাভূমি রক্ষা নিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন কয়েকজন মানুষ। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত এই সচেতন মানুষজনের লক্ষ্য একটাই – কলকাতা (Kolkata), কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলির জলাভূমিকে রক্ষা করতে মানুষকে সংঘবদ্ধ করে তোলা, সচেতন করে তোলা। ‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং ডায়লগ’ নামে একটি সংস্থা তৈরির মাধ্যমে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সপ্তাহান্তে ডালহৌসিতে সংস্থার তরফে হয়ে গেল ওয়ার্কশপ। নানা মডেল তৈরির মাধ্যমে তাঁরা সাধারণ মানুষকে বোঝালেন, জলাভূমি ভরাট করে ফেলার বিপদ কতখানি।
শনিবার কলকাতার ডালহৌসিতে কারেন্সি বিল্ডিংয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং ডায়লগ’। যেখানে এই সংক্রান্ত আলোচনা করেন অভিজ্ঞ মানুষজন, ছিল একাধিক ডেমোও। তাতে তুলে ধরা হয়েছে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং ইতিহাস। সংস্থার কর্মকর্তা নবীনা গুপ্ত জানিয়েছেন, ‘ইয়ং কিউরেটর্স ল্যাব’ নামে আরেক ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছিল কিছুদিন আগে। সেখানে জলাভূমিগুলো পরিদর্শন করে, সেখানে হাতেকলমে কাজ করেছেন ছাত্রছাত্রীরা, তাতে সঙ্গ দিয়েছিলেন এ বিষয় আগ্রহী সাধারণ মানুষও। তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে বেছে নিয়ে, তাঁদের তৈরি করা উল্লেখযোগ্য কাজের প্রদর্শন হল শনিবার, কারেন্সি বিল্ডিংয়ের অনুষ্ঠানে।
[আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণীরাই জঙ্গলের রক্ষক, মাটির মডেল তৈরি করে বোঝাল শিশুরা, উদ্যোক্তা ‘শের’]
ডালহৌসির কারেন্সি বিল্ডিংয়ের একতলায় তাঁদের সেসব কাজ নিয়ে একাধিক ইনস্টলেশন সাজানো হয়েছিল। জলাভূমির বিপদ থেকে শুরু করে তার গুরুত্ব এবং সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করার চেষ্টা চলে এসব কাজের মাধ্যমে। অংশগ্রহণকারী ইনস্টলেশন শিল্পী ঋষিত সিনহার বক্তব্য, জলাভূমির একাধিক সংকটের কথা উল্লেখ করে একটি ইনস্টেলশন সাজানো হয়েছে। প্রতিটি কার্ডে কিউআর কোড রয়েছে, যা স্ক্যান করে আগ্রহীরা জলাভূমিগুলিকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন ধরনের একাধিক প্রবন্ধ খুঁজে পাবেন। মূল্যবান সেইসব লেখা বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ মিলবে। সামগ্রিকভাবে ‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং ডায়লগ’-এর ওয়ার্কশপ এবং তাদের সামগ্রিক কাজের উদ্দেশ্য একটাই, শহর কলকাতার জলাভূমির সংরক্ষণ। সেইসঙ্গে নগরায়নের জন্য জলাভূমির সংকট বৃদ্ধি না করে তা রক্ষা করেই শহর কলকাতাকে সুরক্ষিত রাখতে হবে, এই মর্মে জনসচেতনতা প্রচার।