রঞ্জন মহাপাত্র: সাংবাদিকতার খুঁটিনাটি শেখানো হয়েছে এতদিন। এবার কলকাতার এক মাস কমিউনিকেশন ও জার্নালিজমের পড়ুয়াদের হাতেখড়ি হল বড়সড় ফিল্ম প্রজেক্টে। যার অংশ হিসেবে হিমাচল প্রদেশে গিয়ে আউটডোর শুটিং করলেন তাঁরা। পাঁচদিনের জন্য শিমলা, মানালি, মান্ডি, শিসু টাউনে পাড়ি দিয়েছিলেন। হাড়হিম ঠান্ডায় স্ট্যান্ডি, ক্যামেরা, ল্যাপেল নিয়ে শুটিংয়ের দারুণ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন পড়ুয়ারা। শোনা যাচ্ছে, লিউকিমিয়ায় আক্রান্ত, মাতৃহারা এক মেয়ের জীবন সংগ্রাম নিয়ে তৈরি হচ্ছে সিনেমাটি। ছবিটি আন্তর্জাতিক স্তরে চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে নির্মাতাদের।
হিমাচলে শুটিংয়ে দুই অভিনেতা-অভিনেত্রী। নিজস্ব ছবি।
দমদমের এই মাস কমিউনিকেশন ও জার্নালিজম প্রতিষ্ঠানটি 'বিশালদার ইনস্টিটিউট' নামে পরিচিত। প্রতিবছর আউটডোর স্টাডির জন্য প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়া হয় বাইরে শিক্ষামূলক ভ্রমণে। এবার সেই অভিজ্ঞতা হচ্ছে একটু ব্যতিক্রমী। দমদমের এই প্রতিষ্ঠানের ১৩০ জন ছাত্রছাত্রী ও কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ পাঁচদিনের জন্য পাড়ি দিলেন হিমাচল প্রদেশে। উদ্দেশ্য, একটি সিনেমার আউটডোর শুট।
সিনেমার শুটিংয়ে প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা, হিমাচল প্রদেশে। নিজস্ব ছবি।
সিনেমার নাম - 'তবু মনে রেখো'। ছবির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে লিউকিমিয়ায় আক্রান্ত মাতৃহারা এক মেয়েকে নিয়ে। তাঁর জীবন থেমে যাওয়ার আগে এতদিনের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে চায় সে। তাই মেয়েটি হিমাচলের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে। গল্পে নানা মোড় রয়েছে। ট্রেন সফর থেকে শুরু হয় ছোট ছোট সব মন ছুঁয়ে যাওয়া কাহিনি, আসে প্রেম, তাতেও রয়েছে টুইস্ট। তার ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে কি না, সেটাই ছবির ক্লাইম্যাক্স। পরিচালনায় ঝুমা ভৌমিক ও নওয়াজ শরিফ মণ্ডল। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বিশাল পাল ও তুহিন সিনহা থাকছেন সামগ্রিক পরিচালনায়। প্রযোজক এই 'বিশালদা'র সংস্থাই। শিমলা, মানালি, মান্ডি, শিসু টাউনে ঘুরে ঘুরে শুটিং হয়। সিনেমার মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন প্রসেনজিৎ ঘোষ ও লাবণী পাড়ুই। এছাড়া রকি, অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য, শুভঙ্কর দাস-সহ অনেকেই অভিনয় করছেন। ক্যামেরার দায়িত্বে রয়েছেন অভিজিৎ সাহা ও শুভদীপ চট্টোপাধ্যায়।
হিমাচলে আউটডোর শুটিং 'তবু মনে রেখো' সিনেমার। নিজস্ব ছবি।
তিনমাস আগে থেকে আউটডোর শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা। এই আউটডোর ট্রিপ বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল তাঁদের কাছে। যদিও তা বেশ ভালোভাবেই সম্পূর্ণ করেছেন তাঁরা সকলে। নেপথ্যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এই প্রথম আউটডোর ফিল্ম প্রজেক্টের অভিজ্ঞতা হওয়ায় তাঁরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পড়ুয়াদের কথায়, হিমাচলে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডায় কাজ করার অভিজ্ঞতা একেবারে অন্যরকম। সিনেমাটি তৈরি হলে তা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে পরিচালক-প্রযোজকদের।
