সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের আন্তর্জাতিক জালনোট (Fake Note) চক্রের হদিশ ঢাকায়। দু’এক কোটি নয়, ঢাকায় (Dhaka) মিলল প্রায় সাড়ে সাত কোটি ভারতীয় টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, এই বিপুল অঙ্কের টাকা সবটাই জাল। এর নেপথ্যে পাকিস্তানের জালিয়াত চক্র সক্রিয় বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। পণ্য আমদানির আড়ালে পাকিস্তান থেকে জলপথে শ্রীলঙ্কা হয়ে এই জালনোট ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর লক্ষ্য ছিল ভারতে পাচার করার। জালনোট উদ্ধারের ঘটনায় বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজধানী পাকড়াও হয়েছে এক যুবতী-সহ ২ জন। ধৃতরা পুলিশি জেরার মুখে জানিয়েছে, এর আগেও তারা পাকিস্তানে তৈরি হওয়া জাল মুদ্রা চোরাইপথে ভারতে পাচার করেছে।
এবারও একইভাবে চোরাপথে ভারতে পাচারের (Trafficking) ছক কষা হয়েছিল। কিন্তু ঢাকার পুলিশের তৎপরতায় পাকিস্তানের সেই ছক ভেস্তে গিয়েছে। রাজধানী ঢাকার খিলক্ষেত ও ডেমরা থানা এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন খিলক্ষেত থানার পুলিশ। এই দু’জন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করত বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। শনিবার বিশেষ অভিযানের নেতৃত্বে ছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশন বিভাগ। ৭ কোটি ৩৫ লাখ ভারতীয় জাল রুপি-সহ ফতেমা আক্তার অপি ও শেখ মহম্মদ আবু গ্রেপ্তার করা হয়।
[আরও পড়ুন: শৌচাগারে ছেলের দেহ বালি চাপা দিয়ে ভোটের প্রচারে বাবা-মা, চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের]
ঢাকায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলন করে গুলশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মহঃ আসাদুজ্জামান জানান, খিলক্ষেত থানার বনরূপা আবাসিক এলাকার মেন গেটের সামনে পাকা রাস্তার উপর একজন নারী ভারতীয় জালনোট নিয়ে বসে রয়েছেন বলে তথ্য পান খিলক্ষেত থানার পুলিশ। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেই স্থানে অভিযান চালিয়ে ফতেমা আক্তার অপিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার হেফাজত থেকে ৫০ হাজার ভারতীয় জাল মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। পরে দক্ষিণখান থানার পণ্ডিতপাড়া এলাকায় ধৃতের বাসা থেকে আরও ৭ কোটি ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার জালনোট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ডেমরা থানার সারুলিয়া এলাকা থেকে জালিয়াতি চক্রের অপর সদস্য শেখ মহঃ আবু তালেবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
[আরও পড়ুন: নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াই, বাংলাদেশে নিহত ২ কুখ্যাত রোহিঙ্গা ডাকাত]
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ফতেমা আক্তার অপি আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ ভারতীয় জাল মুদ্রা পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। সে দীর্ঘদিন যাবৎ পাকিস্তান (Pakistan) থেকে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল মুদ্রা কৌশলে সংগ্রহ করে দেশীয় চক্রের অজ্ঞাত ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিপণন-সহ ভারতে পাচার করত। গ্রেপ্তারকৃত তালেব পাকিস্তানি নাগরিক সুলতান ও শফির মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত মার্বেল পাথরের ৫০০টি বস্তার মধ্যে গোলাপি সুতো দিয়ে চিহ্নিত ৯৫টি বস্তার মধ্যে সুকৌশলে সেই ভারতীয় জাল মুদ্রা শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) হয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসে।