সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ২২ মাসের প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে পাকিস্তানে বন্দি প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা অফিসার কুলভূষণ যাদবের দেখা পেলেন তাঁর মা ও স্ত্রী। পাক বিদেশমন্ত্রকের ঘরেই হল সাক্ষাৎ, সঙ্গে ছিলেন ভারত ও পাকিস্তানে দুই শীর্ষ অফিসারও। এদিকে কুলভূষণের ছবি থেকেই তার উপরে অত্যাচারের চিহ্ন স্পষ্ট হয়েছে বলে দাবি ভারতের।মাথায় ও কানের পাশে একাধিক ক্ষতচিহ্ন দেখা যাচ্ছে। মুখে কিছু না বললেও ছবিই সব প্রমাণ করে দিচ্ছে বলে দাবি ভারতের। কুলভূষণের গায়ে ছিল ঘন নীল রঙের কোট। অত্যাচারের চিহ্ন ঢাকতেই কুলভূষণকে এভাবে সাজিয়ে আনা হচ্ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
[ মুখরক্ষার চেষ্টা পাকিস্তানের, বড়দিনে বন্দি কুলভূষণের সাক্ষাতে মা ও স্ত্রী ]
[ ক্রিসমাসের আগে লস অ্যাঞ্জেলসের আকাশে ‘ভিনগ্রহের যান’, তুমুল শোরগোল ]
প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা কুলভূষণ যাদবকে চর সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছিল পাকিস্তান। তারপর থেকে বহু জল গড়িয়েছে। ভারত এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। চেয়েছে কনস্যুলার অ্যাকসেস। কিন্তু বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতেও মুখ পোড়ে পাকিস্তানের। তাতেও অবশ্য সুরাহা কিছু হয়নি। তবে অবশেষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ মিলল। পাক মিডিয়ার তরফেই এদিন সাক্ষাতের ছবি প্রকাশ করা যায়। দেখা যাচ্ছে, একটি কাচের ব্যারিকেডের এপারে দাঁড়িয়ে আছেন কুলভূষণ। অন্যদিকে আছেন তাঁর মা ও স্ত্রী। তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা অবশ্য জানা যায়নি। সাক্ষাতের সময় পাশেই ছিলেন পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার জে পি সিং। তবে তাঁর সঙ্গেও যাদবের কোনও কথা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। এদিকে প্রথমে শোনা গিয়েছিল, এরপর কুলভূষণের মা ও স্ত্রী মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু পরে পাক সরকার তাতে সম্মতি দেয়নি।
ইসলামি ঐতিহ্য এবং মানবিকতার সৌজন্যেই মৃত্যুদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত যাদবের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল পাকিস্তান। চরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গত বছর মার্চ মাসে পাক সেনা কুলভূষণকে গ্রেপ্তার করে। এই বছরই তাঁর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে পাক সেনা আদালত। পাকিস্তানের দাবি, কুলভূষণ যাদব হুসেন মুবারক প্যাটেল নামে অশান্ত বালুচিস্তানে আত্মগোপন করে হিংসায় মদত দিচ্ছিলেন। যদিও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দিল্লির দাবি, ভারতীয় নৌসেনা বাহিনীর প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ (৪৭) ব্যবসার কাজে ইরানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পাক সেনা তাঁকে অপহরণ করে। এমনকী, পাক আদালতের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ভারত সরকার। দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা করার পর অবশেষে ইসলামাবাদ কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রীর দেখা করার অনুমতি দেয়। তাঁদের ভিসাও মঞ্জুর করে। তবে দেখা করার জন্য মাত্র ১৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময়সীমা ধার্য করেছিল পাক সরকার। স্বল্প সময়ের এই সাক্ষাতের পর এদিনই ভারতে ফিরে আসবেন কুলভূষণের মা ও স্ত্রী। সাক্ষাতের সে ছবিই প্রকাশ্যে এল। এখনও পর্যন্ত কোনওরকম কথাবার্তার কথা জানা যায়নি। তবে স্পষ্টতই এক আবেগঘন পরিবেশের যে সৃষ্টি হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
[ নিজের নিরাপত্তার জন্য বাহিনী তৈরি করছে জঙ্গি হাফিজ সইদ ]
The post অবশেষে কুলভূষণের দেখা পেলেন মা ও স্ত্রী, স্পষ্ট অত্যাচারের চিহ্ন? appeared first on Sangbad Pratidin.