shono
Advertisement
Dragon

রুক্ষ মাটিতে ড্রাগন ফলের চাষ! বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন জঙ্গলমহলের যুবক

রাহুলের এই সাফল্যের কাহিনী এখন জঙ্গলমহলে ড্রাগন ফলের চাষে উৎসাহ বাড়াচ্ছে।
Published By: Tiyasha SarkarPosted: 08:55 PM Aug 10, 2024Updated: 08:55 PM Aug 10, 2024

দেবব্রত দাস, খাতড়া: রুক্ষ মাটি। উষর ডাঙা জমি। সেই জমির মাটিতেই ফলছে ড্রাগন ফল। আর এই ড্রাগন ফলের চাষ করে দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন এক শিক্ষিত যুবক। জঙ্গলমহল রাইপুর ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা রাহুল কর নিজের বাড়ির পাশে জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করে এখন বিকল্প আয়ের নতুন দিশা দেখাচ্ছেন। শিক্ষিত এই যুবক আয়ের নতুন সংস্থান খুঁজে পেয়েছেন। রাহুলের এই সাফল্যের কাহিনী এখন জঙ্গলমহলে ড্রাগন ফলের চাষে উৎসাহ বাড়াচ্ছে।

Advertisement

রাইপুর ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের এমএ পাশ রাহুল কর পেশায় গৃহশিক্ষক। টিউশনির ফাঁকে বাড়ির চাষের কাজেও হাত লাগান তিনি। মূলত তাঁরই উদ্যোগে বাড়ির পাশে ফাঁকা খামারবাড়িতে গড়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের বাগান। ফুলে ফলে ভরা ড্রাগনের এই বাগান দেখতে চারপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও ভিড় জমাচ্ছেন শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে। প্রথাগত চাষ ছেড়ে খামারবাড়িতে হঠাত কেন এই ড্রাগন ফলের চাষ? রাহুল কর বলেন, “জমিতে ধান বা সবজি চাষ করা হয়। কিন্তু বাড়ির পাশে খামারে ধান চাষ সম্ভব নয়। রুক্ষ জমিতে তাই বিকল্প ফসলের চাষ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এরসঙ্গে বিকল্প আয়ের খোঁজে তাই রুক্ষ জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করার ঝুঁকি নিয়েছি। সোশাল মিডিয়ায় ড্রাগন ফল চাষের বিষয়টি দেখেছি। এরপর কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে পারিবারিক প্রায় ১২ কাঠা খামারবাড়ির জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেছি।”

[আরও পড়ুন: চিকিৎসক খুনে তুলকালাম আর জি কর, অধ্যক্ষের বিতাড়ন চাইছেন আন্দোলনকারীরা]

তিনি আরও বলেন, ‘‘ড্রাগন ফল চাষের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট দেখেছি। এর পর বাঁকুড়া থেকে ড্রাগন চারা নিয়ে এসেছিলাম। স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মত শুরু করা হয় ড্রাগন চারার পরিচর্যা। ১২ কাঠা জমিতে ড্রাগন চারা রোপন, সার, মজুরি, গাছের জন্য প্রয়োজনীয় খুঁটি বা পিলার লাগানোর জন্য ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩০০টি চারা লাগানো হয়েছে। প্রতিটি পিলারের চারিদিকে চারটি করে চারা লাগানো হয়েছে। গাছ লাগানোর প্রায় দেড় বছর পর থেকে ফলন শুরু হয়েছে। বছরে ৪-৫ বার ফল তোলা যায়। গত দুবছরে ড্রাগন ফল বিক্রি করে খরচের টাকা ওঠে গিয়েছে। প্রথম বছরে বিঘা প্রতি ১২ কুইন্টাল ড্রাগন হলেও পরবর্তী বছর গুলিতে ফলন প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। এবার লাভ হচ্ছে।

রাহুল জানান, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে বাজারে ড্রাগন ফল রপ্তানি করা হয়। তবে এলাকায় এখনও সেভাবে ড্রাগন ফলের চাহিদা নেই। এখন স্থানীয় বাজারে ২০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে। বাইরে এই ফল বিক্রি করতে পারলে দাম বেশি পাওয়া যেত। তবে আগামী দিনে এই ফলের চাহিদা বাড়বে এবং দামও মিলবে বলে তিনি আশাবাদী। খাঁতড়া মহকুমা-সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) শুভেন্দু হাজরা বলেন, “রুক্ষ জমিতে বিকল্প ফসল হিসাবে ড্রাগন ফলের চাষ কার্যকরী হবে। রাইপুরে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়েছেন। আগামিদিনে এই ফল চাষ করে জঙ্গলমহলের চাষিরা লাভবান হবেন। জঙ্গলমহলের ড্রাগন যথেষ্ট সুস্বাদু। এই চাষ করে আয়ের নতুন দিশা খুঁজে পাবেন চাষিরা। এই চাষে এলাকার চাষিরা উৎসাহী হয়ে চাষ করলে আগামিদিনে লাভবান হবেন।”

[আরও পড়ুন: ‘জানি, আমাকেও নৃশংসভাবে মরতে হবে’, অপরাধ নিয়ে অকপট সুবোধ সিং!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • রুক্ষ মাটি। উষর ডাঙা জমি। সেই জমির মাটিতেই ফলছে ড্রাগন ফল।
  • আর এই ড্রাগন ফলের চাষ করে দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন এক শিক্ষিত যুবক।
  • জঙ্গলমহল রাইপুর ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা রাহুল কর নিজের বাড়ির পাশে জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করে এখন বিকল্প আয়ের নতুন দিশা দেখাচ্ছেন।
Advertisement