shono
Advertisement

বাজারে বছরভর চাহিদা থাকে পেঁপের, সঠিক পদ্ধতিতে চাষেই হবে বাজিমাত

ভারতে ১৬-র শতকে প্রথম পেঁপে চাষ শুরু হয়।
Posted: 08:34 PM Jul 12, 2023Updated: 08:35 PM Jul 12, 2023

উচ্চ পুষ্টি এবং ওষধি গুণে ভরপুর। ভিটামিন এ, বি, সি, ই, কে এর অন্যতম উৎস পেঁপে। এতে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার থাকে। এছাড়াও এতে থাকা ক্যারিকাজান্থিন এবং প্যাপাইন আমাদের খাদ্য হজমেও সাহায্য করে থাকে। কাচা পেঁপে রান্না করে ও পাকা ফলও খাওয়া যায়। বাজারে বছরভর চাহিদা থাকে পেঁপের। সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করে ও যত্ন নিলে পেঁপে চাষ করে ভাল আয়ের করা যেতে পারে। লিখেছেন বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল বিজ্ঞান বিভাগের গবেষক তন্ময় মণ্ডল এবং সৌষ্ঠভ দত্ত

Advertisement

সংক্ষিপ্ত বিবরণ
পেঁপে (Carica papaya L.) একটি দ্রুত বর্ধনশীল, ক্ষণস্থায়ী, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফসল। এটি একটি খুবই জনপ্রিয় ফল যার উচ্চ পুষ্টি এবং ওষধি গুণের জন্য জগৎ বিখ্যাত। এর ফলের পাশাপাশি প্যাপেইন, পেকটিন এবং ব্যাকটেরিয়ারোধী পদার্থর জন্যও বহুল পরিমাণে পেঁপে চাষ পরিলক্ষিত হয়। আম, কলা এবং আনারসের পরে পেঁপে হল পশ্চিমবঙ্গের চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ ফল। এতে অন্য যেকোনও ফলের তুলনায় তাড়াতাড়ি ফুল আসে, এক বছরেরও কম সময়ে ফল দেয় এবং প্রতি ইউনিট এলাকা সাপেক্ষে ফলের উৎপাদনও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
পুষ্টিগুণ
পেঁপে খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। পাকা পেঁপে ফলে ভিটামিন-এ (২০২০ IU/১০০ গ্রাম) এর পরিমান ঠিক আমের পরেই অর্থাৎ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এর পাশাপাশি পেঁপে ফল ভিটামিন-সি (৪০ গ্রাম/১০০ গ্রাম), ভিটামিন-বি (২৫০ মিলিগ্রাম/১০০ গ্রাম), ভিটামিন-ই এবং ভিটামিন-কে-এর একটি চমৎকার উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা পেঁপেতে ৩২ ক্যালোরি এনার্জি, ০.৬ গ্রাম প্রোটিন, ০.১ গ্রাম ফ্যাট, ৭.২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ২.৬ গ্রাম ফাইবার থাকে। এছাড়াও এতে পাওয়া ক্যারিকাজান্থিন (হলুদ রঞ্জক) এবং প্যাপাইন আমাদের খাদ্য হজমেও সাহায্য করে থাকে।


এলাকাভিত্তিক পেঁপে চাষ
পেঁপে উৎপত্তির সবচেয়ে সম্ভাবনাময় কেন্দ্র হিসাবে দক্ষিণ মেক্সিকো থেকে মধ্য আমেরিকা পর্যন্ত এলাকাকে অনুমান করা হয় এবং ভারতে ১৬-র শতকে প্রথম পেঁপে চাষ শুরু হয়। এখন এটি সমগ্র ভারতে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ফসল হিসাবে দেশে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সমস্ত রাজ্যের এবং সমতল উপত্যকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কম-বেশি পেঁপে চাষ করা হয়। পেঁপে উৎপাদনে ভারত বিশ্বে সবার উপরের স্থানে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মোটামুটি সব জেলাতেই পেঁপে চাষ হয় এবং তার মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু অঞ্চলে সর্বাধিক চাষ হয়। এছাড়া পেঁপে উৎপাদক প্রধান দেশগুলি হল ব্রাজিল, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চিন, পেরু, থাইল্যান্ড এবং ফিলিপাইন।
অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতি
পেঁপে মূলত একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উদ্ভিদ। এই গাছটি উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অংশেও ভালভাবে বেড়ে ওঠে। নিম্ন তাপমাত্রা এবং পাহাড়ি এলাকাতে এর চাষ খুবই সীমিত। অত্যধিক ঠান্ডা রাত্রিকালীন পরিস্থিতিতে ফলগুলি ধীরে ধীরে পরিপক্ক এবং নিম্নমানের হয়। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০০ মিটার উচ্চতায় ভাল হয়। তবে ৬০০ মিটার উচ্চতায় ফলের আকার এবং গুণমান ধীরে-ধীরে হ্রাস পায়। এটি ২৫-৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রাতে চাষ করা যেতে পারে। বৃষ্টিনির্ভর ফসল হিসাবে পেঁপেকে ১৫০০-২০০০ মিমি সমানভাবে বণ্টিত বার্ষিক বৃষ্টিপাতের অঞ্চলে সফলভাবে চাষ করা যেতে পারে। যদিও একটি সেচ ফসলের তুলনায় ফলন খারাপ হতে পারে, কারণ শীতকালীন খরা গাছপালা এবং ফলের বিকাশকে বাধা দেয়। উচ্চ আর্দ্রতা এবং নিম্ন তাপমাত্রা ফলের মিষ্টতাকে প্রভাবিত করে। ফল পাকার জন্য মৌসুমে উষ্ণ ও শুষ্ক জলবায়ুর প্রয়োজন হয়। এটি একটি কোমল এবং অগভীর-মূলযুক্ত উদ্ভিদ হওয়ায় প্রবল বাতাস সহ্য করতে পারে না।

[আরও পড়ুন: অমূল্য আমলকী, ভাল ফলনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপায় বাতলাচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা]

পেঁপে চাষের উপযোগী মাটি
বেলে ও এঁটেল মাটি ছাড়াও অনেক ধরনের মাটিতে পেঁপে চাষ করা যায়। পেঁপের শিকড় জলাবদ্ধতা বা চাষ জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা জলের প্রতি খুব সংবেদনশীল। এমনকি আটচল্লিশ ঘণ্টা ধরে জলে ডুবে থাকার মতো পরিস্থিতি পেঁপে গাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। ভারী মাটিতে বেশি বৃষ্টিপাতের সময় জল জমে থাকে এবং শিকড়-পচনের মতো রোগ দেখা দেয়, যা অল্প সময়ের মধ্যে রোপণকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। এই কারনেই সামান্য ঢালু কিন্তু পুরোপুরি সমতল জমি নির্বাচন বাঞ্ছনীয়।
জাত নির্বাচন
১) পুসা বামন (Pusa Dwarf):
এই জাতের গাছগুলি মাঝারি আকারের এবং ডিম্বাকৃতি থেকে আয়তক্ষেত্রাকার আকৃতির হয়, যেখানে প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় ১-২ কেজি। এই জাতটি উচ্চ-ঘনত্বের চাষের জন্য উপযুক্ত। এটি একটি ‘dioecious’ ধরনের জাত, যার অর্থ পুরুষ এবং মহিলা ফুলের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয় দুটি ভিন্ন গাছে।
২) পুসা মেজিস্তি (Pusa Majesty) :
এই জাতটি মাঝারি আকারের ফল দেয়; প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় ১-১.৫ কেজি হয়। এই ফলগুলি আকৃতিতে গোলাকার এবং স্বাদ ও গুণমান ভাল। এটি একটি ‘gynodioecious’ ধরনের জাত। যার অর্থ এটি একই জায়গায় উদ্ভিদের স্ত্রী এবং হার্মাফ্রোডাইট উভয়ের সহাবস্থান থেকে ফল উৎপন্ন করে। এই গাছগুলি প্রতিস্থাপনের তারিখ থেকে ১৪৫-১৫০ দিনের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু করতে পারে।


৩) পুসা জায়ান্ট (Pusa Giant):
এই ‘dioecious’ জাতটি হল দৃঢ়ভাবে ক্রমবর্ধমান উদ্ভিদ যা বাতাস সহ্য করতে এবং বলিষ্ঠ বৃদ্ধি প্রদর্শনে যথেষ্ট শক্তিশালী। এই জাতের ফলগুলি বেশিরভাগই ক্যানিং শিল্পে উপযোগী। এই ফলগুলি বেশ বড় এবং ২.৫-৩ কেজি পর্যন্ত ওজনের হতে পারে।
৪) পুসা ডেলিসিআশ (Pusa Delicious):
এই ‘gynodioecious’ জাতের গাছগুলি ভাল মানের ফল দেয় এবং রোপণের তারিখ থেকে প্রায় আট মাসের মধ্যে ফলন দেওয়া শুরু করে। ফল মাঝারি আকারের এবং প্রায় ১-২ কেজি ওজনের হয়, যা প্রধানত খাওয়ার টেবিলে পরিবেশন করা হয়। ফলগুলি কমলা রঙের এবং একটি চমৎকার গন্ধ ও স্বাদযুক্ত, যা তাদের ভারতের সেরা জাতের পেঁপের মধ্যে একটি করে তুলেছে।
৫) মহাবিন্দু (Mahabindu):
কুর্গ হানি ডিউ (Coorg Honey Dew) হিসাবেও জনপ্রিয়‌ এটি প্রক্রিয়াকরণ এবং খাওয়ার টেবিলে পরিবেশন উভয় উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলগুলি হলুদ-সবুজ রঙের এবং লম্বা হওয়ার পাশাপাশি স্বাদে ও গন্ধেও সমৃদ্ধ হয়। ফলের চমৎকার মানের কারণে এই জাতটি উচ্চদামে বাজারে বিক্রি হয়।
৬) সোলো (Solo):
এই জাতের ফলগুলি রান্নাঘর সংলগ্ন বাগানের জন্য খুব ভালো। এটি আর একটি জাত যা সাধারণত খাওয়ার টেবিলে পরিবেশনের উদ্দেশ্যে চাষ করা হয়। ফলগুলিতে ঘন গোলাপী পাল্প এবং আশ্চর্যজনক মিষ্টি গন্ধ আছে।


৭) রাঁচি (Ranchi):
ভারতের অন্যতম সেরা পেঁপে আসে বিহার এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে। কিছু দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যে এটি একটি জনপ্রিয় জাত। ফলগুলিতে হলুদ রঙের পাল্প এবং খুব মিষ্টি স্বাদ আছে। একটি গাছ এক মৌসুমে অনেক ফল ধরতে পারে।
৮) CO-1:
এই জনপ্রিয় জাতটি ইতিপূর্বে উল্লিখিত রাঁচি জাতের পেঁপে থেকে একটি নির্বাচিত জাত। এটি মাঝারি আকারের ফল দেয়। যার গোলাকার মসৃণ ত্বকের সঙ্গে উপরের দিকে হলুদ-সবুজ ছোপ দাগ আছে। দৃঢ় অথচ নরম হলুদ পাল্প বা শাঁসের কারণে এই ফলগুলোকে কিছুদিন ধরে সংরক্ষিত রাখা যেতে পারে। এই জাত সম্পর্কে একটি আকর্ষণীয় তথ্য হল এই জাতের ফলের মধ্যে সাধারণ প্যাপেইন গন্ধের অনুপস্থিতি পরিদর্শীত হয়।
৯) ওয়াশিংটন (Washington):
এই জাতের ফলগুলি মাঝারি থেকে বড়, গোলাকার বা আয়তাকার এবং খাওয়ার টেবিলে পরিবেশনের উদ্দেশ্যে চাষ করা হয়। এটিতে পৃথক পুরুষ ও স্ত্রী গাছ রয়েছে এবং ফল উৎপাদনের জন্য উভয়েরই প্রয়োজন। এই ফলগুলি সম্পূর্ণ পরিপক্ক হলে উজ্জ্বল হলুদ বর্ণ ধারণ করে এবং প্রতিটি ফলের গড় ওজন প্রায় ১.৫-২ কেজি হয়।
১০) তাইওয়ান-৭৮৬ :
প্রক্রিয়াকরণ এবং টেবিল উভয় উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ‘gynodioecious’ জাতটি ডিম্বাকৃতির ফল উৎপন্ন করে। যার প্রতিটির ওজন প্রায় ১-৩ কেজি হয় এবং ফলগুলিতে কম বীজ থাকে। এই জাতের ফলের ভাল স্বাদ আছে এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণের উপযোগী।
বীজ ব্যবস্থাপনা
১) বীজের উৎস
গুণগত মানের বীজ ব্যবহারে ২০% বেশি ফলন পাওয়া যায়। সেইজন্য ভাল সংশোধিত বীজ বিশ্বস্ত ডিলারের নিকট থেকে নেওয়া উচিত।


২) বীজ কেনার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা:
শংসিত বীজের প্যাকেটে সর্বদা ট্যাগ থাকতে হবে বীজ উৎপাদক ও বীজ কোম্পানির উভয়ের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়ে জন্য:
বীজ উৎপাদনের তারিখ।
অঙ্কুরোদ্গম বীজের শতাংশ (৯০-৯৫%)
অন্যান্য বীজ এবং রোগ পোকার থেকে মুক্ত।
৩) শংসিত বীজের উৎসগুলি হল:
ক) রাজ্য বীজ নিগম খ) জাতীয় বীজ নিগম গ) রাজ্য বীজ ফার্ম ঘ) জাতীয় রাজ্য বীজ সমবায় ঙ) রাজ্য কৃষি বিভাগ চ) বেসরকারী সংস্থা ছ) সমবায় জ) প্রগতিশীল কৃষক ঝ) স্থানীয় অনুমোদিত ডিলার।
বংশবিস্তার
পেঁপের বংশবিস্তার সবসময় বীজ দ্বারা করা হয়ে থাকে। বংশ বিস্তারের জন্য বীজ সংগ্রহ করা হয় পাকা, বড় আকারের, স্বাস্থ্যকর ফল থেকে এবং তার পাশাপাশি কীট ও রোগমুক্ত স্ত্রী গাছ নির্বাচনও আবশ্যক। মাঝে-মাঝে বীজ অঙ্কুরিত হতে ব্যর্থ হয় কারণ প্রায় ৪৫ দিনের মধ্যে বীজের কার্যক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে যায়। বীজ থেকে একটি মিউসিলাজিনাস আবরণ (সারকোটেস্টা) অপসারণ করা সেই বীজগুলির তুলনায় আরও দ্রুত এবং অভিন্ন অঙ্কুরোদগমের ক্ষেত্রে সহায়ক। এক বালতি জলে দুই থেকে তিন দিন বীজগুলিকে ডুবিয়ে সারকোটেস্টা (বীজের ওপরের আবরণ) অপসারণ সহজে করা যায়।

সারকোটেস্টা সহজে ভেঙ্গে যায় যখন ভেজা বীজগুলিকে কাঠের ছাই দিয়ে মিশিয়ে বাদামী কাপড়ের টুকরোতে আলতোভাবে ঘষে দেওয়া হয়। বীজগুলিকে জলযুক্ত অন্য পাত্রে রেখে বহির্মুখী উপাদান অপসারণের জন্য ধুয়ে ফেলা হয়। যখন খারাপ বীজ এবং সারকোটেস্টা উপরে ভেসে ওঠে, তখন ভাল বীজ জলে ডুবে যায়। বীজ অবিলম্বে বপন করা যেতে পারে অথবা ছায়ায় শুকানোর পরে বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। তবে বীজ কখনওই রোদে শুকানো উচিত নয়, কারণ এর ফলে তাদের কার্যক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায়।
জমি প্রস্তুতকরণ
এই ফসলটি চাষের জন্য একটি ভাল নিষ্কাশন যুক্ত উঁচু জমি বেছে নেওয়া হয়। খোলা এবং উঁচু এলাকায় গাছপালা শক্তিশালী বাতাস বা ঝড়ের সংস্পর্শে আসতে পারে। তাই পেঁপে গাছের সঠিকভাবে স্থাপনের জন্য বাগানের সীমানায় উপযুক্ত বায়ু রোধকারী গাছ লাগানো আবশ্যক।
চারা রোপণ
১) রোপণের উপাদান: পেঁপে বাণিজ্যিকভাবে বীজ এবং টিস্যু কালচার চারা দ্বারা বংশবিস্তার করা হয়। বীজের হার ২৫০-৩০০ গ্রাম/হেক্টর। বীজতলা ৩ মিটার লম্বা, ১ মিটার চওড়া এবং ১০ সেমি উঁচু করে তৈরি করা হয়। বীজ শোধন কার্বেন্ডাজিম ৫০% ডাব্লুপি @ ২ গ্রাম/কেজি বীজ হারে করা যেতে পারে। এ ছাড়াও বীজ ছত্রাক কালচারে, ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি @ ৪ গ্রাম অথবা সিউডোমোনাস ফ্লুওরেসেন্স @ ৫ গ্রাম/কেজি বীজ এর সঙ্গে মেশানো যেতে পারে। চারা সুরক্ষার জন্য নার্সারি বেড পলিথিন শিট বা শুকনো ধানের খড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। সকালের সময় হালকা জল দেওয়া হয়। প্রায় দুই মাসের মধ্যে রোপণের জন্য লম্বা চারা (প্রায় ১৫-২০ সেমি) বেছে নেওয়া হয়।
২) চারা রোপণের উপযুক্ত সময়
বর্ষা (জুন-জুলাই) এবং শরৎকালে (অক্টোবর-নভেম্বর) পেঁপের চারা রোপণ করা হয়।
৩) চারা গাছের মধ্যে ব্যবধান 
১.৮ x ১.৮ মি. ব্যবধান সাধারণত অনুসরণ করা হয়। তবে ১.৫ x ১.৫ মি. এর ব্যবধানে উচ্চ ঘনত্বের চাষ কৃষকের আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে উপযোগী হিসাবে সুপারিশ করা হয়।


৪) উচ্চ ঘনত্বের রোপণ (High density planting):
১.২ x ১.২ মি. এর ব্যবধানে পুসা নানহা (Pusa Nanha) জাতটি উচ্চ ঘনত্বের রোপণের জন্য গৃহীত হয়েছে। যেখানে ৬,৪০০ টি গাছ/হেক্টর রোপন করা যায়।
৫) রোপণ পদ্ধতি:
চারা ৬০x৬০x৬০ সেমি গর্তে রোপণ করা হয়। গ্রীষ্মকালীন সময়ে চারা রোপণের এক পাক্ষিক আগে গর্তগুলি খনন করা হয়। গর্তগুলিকে ২০ কেজি খামারের সার এবং উপরের মাটি দিয়ে ভরাট করা হয। লম্বা এবং সবল জাতগুলি বেশি ব্যবধানে এবং মাঝারি ও বামন জাতগুলি কাছাকাছি ব্যবধানে রোপণ করা হয়।

[আরও পড়ুন: ২ বছরের চেষ্টায় সাফল্য, জলঙ্গি নদীতে পদ্ম ফুটিয়ে চমকে দিলেন আরপিএফ কর্মী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement