সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে এবার ব্যারেজ থেকে দামোদরের জল নিয়ন্ত্রণ হবে। সেচ,পানীয় ও শিল্পের জন্যে জল ছাড়তে এবার দুর্গাপুর ব্যারেজে বসছে আধুনিক ‘স্কাডা’ পদ্ধতি। দুই দফায় ব্যারেজ বিপত্তির পর সংস্কার ছাড়াও গেট খোলা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠেছিল। সেচের জল ছাড়া নিয়েও মাঝেমধ্যেই অভিযোগে সরব হতেন কৃষকরা। এবার আধুনিক ‘সুপারভিশন কন্ট্রোল অ্যান্ড ডাটা অ্যাকুজিশন’ বা ‘স্কাডা’র তথ্যের ভিত্তিতে জল নিয়ন্ত্রণ হবে দুর্গাপুর ব্যারেজে (Durgapur Barrage)।
দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে যে দু’টি সেচ খাল বেরিয়েছে তার মধ্যে ‘লেফট ব্যাংক মাইনর ক্যানেল’ যা বাঁকুড়া জেলায় গিয়েছে তার দৈর্ঘ্য ৮৮.৫ কিলোমিটার। অন্যদিকে ‘রাইট ব্যাংক মাইনর ক্যানেল’ যা বর্ধমান জেলাজুড়ে বিস্তৃত। তার দৈর্ঘ্য ১৩৬.৬ কিলোমিটার। ৮ লক্ষ ২০ হেক্টর কৃষিজমিতে কৃষিকাজ হয় দামোদরের জল দিয়েই। বছরে প্রায় ৪ লক্ষ একর ফুট জলের প্রয়োজন হয় দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। সেই জল শিল্প, কারখানা বিশেষ করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র,পানীয় জলের জন্যে ব্যাবহার করা হয়। তাই জল নিয়ন্ত্রণকে আরও সুচারু করতেই ‘স্কাডা’ (SCADA) তথ্যের সাহায্য নিচ্ছে সেচদপ্তর। দামোদর হেড ওয়ার্কসের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিং বলেন, “ ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া আরও পরিকল্পনামাফিক ও উপযোগী করতে এই উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যাহার করা হবে। এতে জলকে যেমন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে তেমনই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বন্যাকেও।”
[আরও পড়ুন: মৎস্য গবেষণা ও উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির প্রস্তুতি শুরু দক্ষিণ দিনাজপুরে, খুশি মাছচাষিরা]
উচ্চ অববাহিকা থেকে ব্যারেজ পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ জলকে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে বন্টন করতেই ‘স্কাডা’র সাহায্য নিচ্ছে সেচদপ্তর। কী করবে ‘স্কাডা’? মূলত সেচ খালে ও বন্যার জল নিয়ন্ত্রণ কবে স্কাডা। এর জন্যে নির্দিষ্ট তথ্য জোগাবে ‘স্কাডা’। দৈনিক নিরীক্ষণ ও জরিপ করা হবে প্রাপ্ত তথ্যগুলি। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে কত জল ছাড়া হল সেই তথ্যও মিলবে তাৎক্ষণিক। রাডারের মাধ্যমে মিলবে যাবতীয় তথ্য। জল ছাড়তে কতটা গেট তুলতে হবে তাও জানাবে ‘স্কাডা’। এর জন্যে প্রতিটি গেটে বসানো হবে পৃথক সেন্সর। ২০১৯ সাল থেকে ‘স্কাডা’র ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় দুর্গাপুর ব্যারেজের পাশেই। মাস দুই আগে থেকেই শুরু হয়েছে প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ। এজেন্সির মাধ্যমে পুরো পরিকল্পনা গঠন করছে সেচদপ্তর। প্রযুক্তিগত কাঠামো সম্পূর্ণ হলে এজেন্সি চার বছর ধরে সেচদপ্তরের কর্মীদের এই পদ্ধতি রপ্ত করতে প্রশিক্ষণ দেবে।