সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে নগ্ন করে তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। সেই ভয়ে আত্মঘাতী হল দশম শ্রেণির এক পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ে জশপুরে। স্থানীয় কালেক্টর নীলেশ শীর্ষাগর এই ঘটনার তদন্ত করতে নির্দেশ দিলেও গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তদন্তের জন্য ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল ও পড়ুয়াদের বক্তব্য রেকর্ড করতে হবে। কিন্তু, বোর্ডের পরীক্ষা চলছে বলে প্রশাসনের তরফে পড়ুয়াদের বিরক্ত করা হচ্ছে না।
ঘটনাটির সূত্রপাত হয় ১ মার্চ। ওইদিন পড়ুয়ারা জশপুরের পানধারাপথ এক্সামিনাটিতে বোর্ডের দশম শ্রেণির ফার্স্ট পেপার পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। কিন্তু, পরীক্ষা হলে ঢোকার আগে সঙ্গে টুকলি আছে সন্দেহ হওয়ায় তিনজন ছাত্র-ছাত্রীকে আটক করে নজরদারির দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা। পরে এক ছাত্রকে একটি ঘরে ও দুই ছাত্রীকে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে নগ্ন করে তল্লাশি চালানো হয়। ছাত্রটির কাছ থেকে পরীক্ষায় নকল করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উদ্ধার হওয়ার পরেই তাকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও দুই ছাত্রীর কাছ থেকে কিছু উদ্ধার হয়নি। কিন্তু, তল্লাশির পর বাইরে বেরিয়ে এসে এই ঘটনায় তারা প্রচণ্ড অপমানিত হয়েছে বলে জানায়। এই ঘটনার কথা শোনার পরেই ভয় পেয়ে যায় ওই আদিবাসী কিশোরীটি। বাড়িতে ফিরে আসার পরেও তার মুখ চোখ দেখে চিন্তিত মনে হচ্ছিল। তার দাদা কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করায় পুরো ঘটনাটি খুলে বলে সে। তারপর বলে, ‘তল্লাশির নামে মেয়েদের নগ্ন করা হচ্ছে। আমার সঙ্গে এরকম হলে আমি মরে যাব।’
[কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন পাতিদার নেতা হার্দিক প্যাটেল, লড়বেন লোকসভায়]
বিষয়টি সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করলে সে জানায় আর কিছু বলতে সে অপমানিত বোধ করছে। এরপর বারবার বলতে থাকে, ‘আমি মরে যাব।’ মেয়েটির পরিবার অনুমান করেছিল, সে পরীক্ষা ভাল দেয়নি। তাই তাকে বকাবকিও করে। এরপর দুদিন চুপচাপ ছিল সে। কিন্তু, তিন তারিখ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই মেয়েটি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি পরিবারের লোকেরা। আর পরেরদিন গ্রামের বাইরে থাকা জঙ্গল সংলগ্ন একটি গাছ থেকে তার দেহ ঝুলতে দেখেন এক গ্রামবাসী।
[বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল জম্মু বাসস্ট্যান্ড, গুরুতর জখম বহু]
যদিও ওই জেলার কালেক্টর শীর্ষাগর জানান, ওইদিন পরীক্ষা হলে আত্মঘাতী মেয়েটিকে তল্লাশি করা হয়নি। তাই তার আত্মহত্যার পিছনে কী কারণ রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। মেয়েটি ওই ঘটনার জেরে ডিসর্টাব হয়েছে কি না তাও বোঝা যাচ্ছে না। যে স্কুলের বিরুদ্ধে এই অমানবিক কাজ করার অভিযোগ উঠছে সেই স্কুলের প্রিন্সিপাল ঘটনাটির কথা স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি দুটি মেয়েকে একটি ঘরে নিয়ে যেতে দেখেছেন বলেও জানিয়েছেন। এমনকী বোর্ডের তরফে নজরদারির দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের এক ঘর থেকে আরেক ঘরে স্থান পরিবর্তন করাতে গিয়ে প্রায় ১ থেকে ২ ঘণ্টা সময় নষ্ট করেছেন। এর ফলে তাঁদের উপর প্রচুর চাপ তৈরি হয়েছিল বলেও অভিযোগ তাঁর।