shono
Advertisement
Chandu Champion Review

হার না মানার গল্প 'চন্দু চ্যাম্পিয়ন', বলিউডের এই বায়োপিক কেমন হল? পড়ুন রিভিউ

Published By: Suparna MajumderPosted: 05:56 PM Jun 14, 2024Updated: 05:56 PM Jun 14, 2024

সুপর্ণা মজুমদার: সিনেমার মতোই শুরু করা যাক। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার উপর হামলা। আকাশ থেকে গুলিবৃষ্টি। ধুলো, ধোঁয়া, বারুদের তীব্র গন্ধ আর মুরলীকান্ত পেটকর। একের পর এক গুলির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল তাঁর শরীর। কিন্তু প্রাণ কেড়ে নিতে পারেনি। কেড়ে নিতে পারেনি লড়াই করার মানসিকতা। 'চন্দু চ্যাম্পিয়ন' (Chandu Champion) আসলে এমনই এক খেলোয়াড়ের হার না মানার গল্প। আর এই গল্পের ভিত বাস্তব। যা সিনেমার পর্দায় তুলে ধরেছেন পরিচালক কবীর খান। আর নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কার্তিক আরিয়ান (Kartik Aaryan)।

Advertisement

ভারতের প্রথম প্যারালিম্পিক গোল্ড মেডেলিস্ট, পদ্মশ্রী মুরলীকান্ত পেটকর। তাঁর জীবন অবলম্বনেই চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন কবীর খান, সুমিত অরোরা ও সুদীপ্ত সরকার। স্বাধীনতার আগে মহারাষ্ট্রের সাংলি এলাকার ইসলামপুরে জন্ম মুরলীকান্তের। দামাল ছেলের চোখে একটাই স্বপ্ন। অলিম্পিকে খেলা। দেশের জন্য পদক আনা। এর জন্যই পালোয়ান হওয়ার চেষ্টা। আদর্শ তখন দারা সিং। কিন্তু মুরলীকান্তর এই স্বপ্নই তাঁকে হাসির খোরাক করেছিল। ব্যঙ্গ করেই নাম দেওয়া হয়েছিল 'চন্দু চ্যাম্পিয়ন'। কারণ 'চন্দু' মানে 'হেরো'।

কিন্তু এই 'হেরো' তকমা মানতে রাজি ছিলেন না মুরলীকান্ত। তাই তো চলন্ত ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন। জার্নেল সিংয়ের কথামতো যোগ দিয়েছিলেন সেনায়। শুধু খেলোয়াড় হবেন বলে। কিন্তু অত সহজে কি আর সব কিছু সবসময় হয়? কোচ টাইগারের সতর্কবাণী সত্ত্বেও মুরলীকান্ত হলেন লক্ষ্যভ্রষ্ট। তার পরই ১৯৬৫-র ভারত-পাক যুদ্ধ। একের পর এক গুলি ঝাঁজরা করে দেয় মুরলীকান্তর শরীর। প্রায় দুবছর কোমায় থাকার পর ফিরল জ্ঞান। কিন্তু বুলেট কেড়ে নিয়েছে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরার শক্তি।

[আরও পড়ুন: অনুমতি না নিয়ে নাম ব্যবহার, প্রযোজকের বিরুদ্ধে আদালতে করণ জোহর]

ভাগ্যের এই পরিহাস মেনে নেননি মুরলীকান্ত পেটকর। কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি? একজন মানুষ যিনি প্রথমে ছিলেন কুস্তিগীর, তার পর হলেন বক্সার। আবার পরিবর্তনের ধাক্কা সামলে কীভাবে সাঁতারু হয়ে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছলেন? সেই গল্পই বড়পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন কবীর খান। মুরলীকান্তের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য নিজের চেহারায় আমূল পরিবর্তন এনেছেন কার্তিক আরিয়ান। নিজের প্রিয় মিষ্টিও ত্যাগ করেছিলেন। অত্যন্ত সৎভাবে 'চন্দু চ্যাম্পিয়ন' হওয়ার চেষ্টা করেছেন কার্তিক। শুধু শেষ পর্যায়ের আবেগঘন দৃশ্যের সংলাপে অভিনেতাকে একটু দুর্বল মনে হয়েছে। বাকি ক্ষেত্রে তিনি মুন্সিয়ানার ছাপ রেখেছে।

ছবি দেখতে দেখতে একাধিকবার 'বজরঙ্গী ভাইজান', 'টিউবলাইট'-এর কথা মনে পড়েছে। এই চরিত্রে সলমন খানকেও মন্দ লাগত না। যদিও কার্তিক সবটা নিজের মতো করেই করেছেন। তাঁকে ছাড়া যদি এই সিনেমায় কারও কথা বলতে হয় তাহলে বিজয় রাজ। কোচ টাইগারের ভূমিকায় অসামান্য তাঁর অভিনয়। যে কোনও সময় তারকার লাইমলাইট কেড়ে নিতে সক্ষম এই অভিনেতা। বাকি চরিত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজপাল যাদব (টোপাজ), যশপাল শর্মা (উত্তম সিং), অনিরুদ্ধ দাভে (জগন্নাথ পেটকর), শ্রেয়াস তলপড়ে (ইনস্পেক্টর শচীন কাম্বলে) ও ভুবন অরোরা (জার্নেল সিং)। সোনালি কুলকর্ণি এক্সটেন্ডেড ক্যামিও করেছেন।

সবমিলিয়ে বলতে গেলে পরিচালক কবীর খানের 'চন্দু চ্যাম্পিয়ন' সত্যিই এক চ্যাম্পিয়নের গল্প। তবে এখানে শুধুমাত্র মুরলীকান্ত পেটকরের সুইমিংয়ের বিষয়টিই দেখানো হয়েছে। তাঁর জ্যাভলিনে পার্টিসিপেট করা, টেবিল টেনিস খেলার বিষয়গুলো একটুও দেখা গেল না। আবার ব্যক্তিগত জীবনও কম প্রাধান্য পেয়েছে। বিয়ে বা তার পরবর্তী জীবনও বোধহয় ২ ঘণ্টা ২২ মিনিটের এই সময়ের মধ্যে দেখিয়ে উঠতে পারলেন না পরিচালক।

সিনেমা - চন্দু চ্যাম্পিয়ন
অভিনয়ে - কার্তিক আরিয়ান, বিজয় রাজ, রাজপাল যাদব, যশপাল শর্মা, অনিরুদ্ধ দাভে, শ্রেয়াস তলপড়ে, ভুবন অরোরা, সোনালি কুলকর্ণি, গণেশ যাদব, ভাগ্যশ্রী বোরসে, হেমন্ত চৌধুরী, পালক লালওয়ানি, হেমাঙ্গি কবি, অ্যাডোনিস কাপসালিস
পরিচালনায় - কবীর খান

[আরও পড়ুন: পায়ের উপর পা, প্রাণ জুড়ানো হাসি, ছেলের মিষ্টি ছবি শেয়ার করলেন জিৎ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পরিচালক কবীর খানের 'চন্দু চ্যাম্পিয়ন' সত্যিই এক চ্যাম্পিয়নের গল্প।
  • আর অত্যন্ত সৎভাবে 'চন্দু চ্যাম্পিয়ন' হওয়ার চেষ্টা করেছেন কার্তিক।
Advertisement