অর্ক দে, বর্ধমান: ছেলের ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতি জন্য অনলাইন কোর্সে ভর্তি করে প্রতারণার শিকার বাবা। প্রতারিত হয়েছেন টের পেয়েই পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, কোনও সুরাহা না মিললে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, বর্ধমানের বাসিন্দা শান্তিময় রায়। তিনি ছেলেকে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য একটি অনলাইন কোর্সে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন। এর পরই একটি সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। সংস্থার তরফে ওই ব্যক্তি জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই কোর্স করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে সমস্ত টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। এর পর ছেলেকে ভর্তি করান ওই ব্যক্তি। নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম কিস্তির টাকা ব্যাংকে জমা দেন। কিছুদিন পর ওই ছাত্র জানান তিনি আর কোর্স করবেন না। অভিযোগ, এটি সংস্থাকে জানানোর পরও অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ভরদুপুরে দার্জিলিংয়ের চা বাগানে ২ টি বাড়িতে দাউদাউ আগুন, প্রদীপ থেকেই ভয়ংকর কাণ্ড?]
শান্তিময় রায় জানান, “ছেলেকে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এই কোর্সে ভর্তি করেছিলাম। প্রথমে সংস্থার এক প্রতিনিধি আমার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। ২ বছরের এই কোর্সের জন্য আমার কাছে ৯২ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এককালীন টাকা দিতে অস্বীকার করায় মাসিক কিস্তির মাধ্যমে টাকা দেওয়ার চুক্তিতে কোর্সে ভর্তির কথা জানান তারা। সেইমতো প্রথম মাসে ১২ হাজার টাকা ও তারপর থেকে মাসিক ৬ হাজার ৮০০ টাকা করে দিতে হবে বলে জানানো হয়। কোর্স চালু হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে পুরো টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়ার হবে বলে চুক্তি করেন তারা।”
সেইমতো অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমে কোর্স করানো হবে বলে জানানো হলেও কেবলমাত্র অনলাইন মাধ্যমেই কোর্স করানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। কয়েকদিন পরই ছাত্র ওই কোর্স করতে আগ্রহী নন বলে জানিয়ে দিলেও পরের মাসের কিস্তির টাকা কেটে নেয়। এর পর সংস্থার ওই প্রতিনিধির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি বলেই অভিযোগ। পরে এই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে এসএমএস করা হলে তিনি একটি ই-মেল মাধ্যমে এই বিষয়ে জানানোর জন্য বলেন। কিন্তু, পরে দেখা যায় সেই ই মেলটি ভুয়ো। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে বর্ধমান শহরের জি টি রোডের উপর সংস্থার একটি অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায় চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত দেওয়া হবে না।
[আরও পড়ুন: কর্মী আক্রান্ত হলে একঘণ্টায় এলাকা জ্বালিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি! এবার বেফাঁস তৃণমূলের ব্লক সভাপতি]
এই বিষয়ে জানিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার ও সইবার ক্রাইম দপ্তরে তিনি একটি অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “অনলাইন কোর্সের নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে পুলিশ প্রশাসনকে এই টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে। টাকা ফেরত না পেলে প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হব আমরা।” এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার আমনদ্বীপ জানান, “পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের সাইবার শাখা আরও উন্নত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এই বিষয়ে প্রতারণার যে অভিযোগ জমা পড়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।”