সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: পয়গম্বরকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকে (Prophet Row Case) কেন্দ্র হাওড়ায় চলতে থাকা অশান্তির মধ্যেই বদল করা হয়েছে সেই পুলিশ জেলার শীর্ষকর্তাদের। এবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার আইসিকেও বদল করল নবান্ন। সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের পরিবর্তে রাজারহাটের আইসি (IC) জামালউদ্দিন মণ্ডলকে বেলডাঙা থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বহিষ্কৃত বিজেপি নেত্রী নূপুল শর্মার সমর্থনে এক কলেজ ছাত্রীর ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বেলডাঙায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছিল ইটও। এর পরই এই রদবদল। যদিও প্রশাসনের দাবি, এটি নেহাতই রুটিন রদবদল। এর সঙ্গে অশান্তির কোনও যোগ নেই।
এদিকে বিতর্কিত মন্তব্য করায় রবিবার সকালে বহিষ্কৃত বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার ( Nupur Sharma) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হল কাঁথি থানায়। তৃণমূলের রাজ্য সংখ্যালঘু সাধারণ সম্পাদক তথা আইনজীবী আবু সোহেল ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩(এ) , ৫০৪, ৫০২ এবং ৫০৯ ধারায় মামলা রুজু করেছেন। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর মন্তব্যর প্রতিবাদে রাজ্যের থানায় থানায় অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পরামর্শ মেনেই দায়ের হল অভিযোগ। ইতিপূর্বে তাঁর গ্রেপ্তারির দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মিছিল করেছেন তৃণমূল কর্মীরা।
[আরও পড়ুন: বাড়ির নিমগাছেই ছিল বাসা! ডালপালা কাটতেই উপদ্রব শুরু ‘অশরীরী’র, আতঙ্কে কাঁটা গৃহস্থ]
এদিকে রাজ্যের আর কোথাও যাতে অশান্তি না বাঁধে, তার জন্য আগাম সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় চলছে পুলিশি টহলদারি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চলছে মাইকিং। আমজনতার কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানাচ্ছেন সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা। রবিবার সকালে হাওড়ার পাঁচলা, উলুবেরিয়া এলাকা থেকে বড় কোনও গণ্ডগোলের খবর নেই। হুগলির ধুলাগড় এলাকায় চলছে পুলিশি টহল। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তেও সতর্ক পুলিশ। উল্লেখ্য, অশান্তির ছড়িয়ে পড়া আটকাতে মুর্শিদাবাদের তিনটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে হাওড়াতেও।
প্রসঙ্গত, হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপি নেত্রী নুপূর শর্মা (Nupur Sharma) বিতর্কিত মন্তব্য করেন। ২০টি দেশ এই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব। তার আঁচেই উত্তপ্ত বাংলাও। গত বৃহস্পতিবার থেকে হাওড়ার বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনা জারি রয়েছে। ওইদিন একটানা প্রায় এগারো ঘণ্টা ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। একের পর এক গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে কার্যত গাড়ির লাইন লেগে যায়। শুক্রবারও ধূলাগড় ও উলুবেড়িয়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়। পুলিশ কিয়স্কে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বেশ কয়েকটি মোটরবাইক ও সাইকেল। তৃণমূল ও বিজেপির কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। ডোমজুড় থানাতেও হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা।