সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের রক্তস্নাত মায়ানমার (Myanmar)। শনিবার সকালে জুন্টার (Junta) গুলিতে প্রাণ হারালেন ৫ জন। ২ মাসে ৫৫০-এরও বেশি মানুষকে খুন করার অভিযোগে গোটা বিশ্ব তাদের নিন্দায় সরব। তার মধ্যে গত শনিবার একদিনে শতাধিক মানুষকে হত্যা করার পর থেকে মায়ানমার সেনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও তীব্র আকার নিয়েছে। তবুও যে তাতে কোনও হেলদোল নেই জুন্টার তা আবারও প্রমাণ হল শনিবার।
তিনটি বিক্ষিপ্ত জায়গায় গুলি চালানোর ঘটনায় এযাবৎ ৫ জনের মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে। এর মধ্যে মনিওয়াতেই মারা গিয়েছেন ৩ জন। এছাড়াও বাগো ও থাটন নামের অন্য দুই জায়গায় একজন করে আরও ২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
[আরও পড়ুন: সুড়ঙ্গে নির্মাণকাজ চলাকালীন ঢুকে পড়ল ট্রেন, তাইওয়ানে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত অন্তত ৩৬]
মনিওয়ার ঘটনায় চোখের সামনে একজনকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে মেসেজ বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ”ওরা এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করল। লোকেরা পিছোতে শুরু করে দিল। তাড়াতাড়ি ব্যারিকেডের আড়ালে চলে গেল। কিন্তু তারই মধ্যে একজনের মাথায় গুলি এসে লাগল। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেখানেই মারা গেলেন।” সংবাদমাধ্যমের তরফে জুন্টা ও পুলিশের কাছ থেকে এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তারা কোনও টেলিফোনেরই উত্তর দেয়নি।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। রাজধানী নাইপিদাও থেকে শুরু করে ইয়াঙ্গন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত বড় শহরে রাস্তায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সরব হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। আর তাদের থামাতে নির্বিচারে গুলিবৃষ্টি করেছে জুন্টা।
[আরও পড়ুন: সংক্রমণ ছড়াচ্ছে হু হু করে! করোনার তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে তিন সপ্তাহ লকডাউন ফ্রান্সে]
মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে গত শনিবারের পর থেকেই। ওই দিন শতাধিক আন্দোলনকারীকে হত্যা করেছিল জুন্টা। তারপর থেকেই মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে।
এদিকে গতকালই ভারতের তরফে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নামে হিংসার তীব্র নিন্দা করেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ভারত চায় সেখানে আইনের শাসনই বলবৎ থাকুক। দ্রুত শান্তি ফিরুক মায়ানমারে।