দীপঙ্কর মণ্ডল: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (University Of Calcutta) ক্যাম্পাসে চটুল গানে উদ্দাম নৃত্যের শাস্তি। দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পাঁচ সদস্য। এদের মধ্যে কয়েকজন প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র এবং টিএমসিপির নেতাও রয়েছেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য নষ্ট ছাড়াও ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
সরস্বতী পুজোয় কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে ডিজে বাজিয়ে ‘টুম্পা সোনা’ গানের তালে নাচের ছবি ভাইরাল হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্তে তৈরি হয় কমিটি। কমিটির রিপোর্টে সরস্বতী পুজো আয়োজক ৫ জনের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আগামী দুই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ক্যাম্পাসে ওই ৫ জন ঢুকতে পারবে না।”
[আরও পড়ুন : পামেলাকে প্রভাবিত করার অভিযোগ, পুলিশের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার হুমকি রাকেশ সিংয়ের]
সাসপেন্ড হওয়া পাঁচজনের নাম মণিশংকর মণ্ডল, রাজা মাণ্ডি, দেবর্ষি রায়, তীর্থপ্রতীম সাহা এবং রনি ঘোষ। মণিশংকর মণ্ডল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতা তথা বর্তমানে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। শাসকদলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে চিঠি পেলে শাস্তি পাওয়া টিএমসিপি নেতারা হাই কোর্টে মানহানির মামলার হুমকি দিয়েছেন। মণিশংকরের কথায়, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুজো বন্ধ করে দিতে চাইছিলেন কেউ কেউ। আসলে পুজো বন্ধ করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপির হাতে হাতিয়ার তুলে দিতে চাইছেন তাঁরা।” তাদের দাবি, সরস্বতী পুজোর অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। উপাচার্য সাফ জানিয়েছেন, পুজো করার জন্য কোনও সংগঠন বা ছাত্রছাত্রীদের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এখনও বন্ধ। বাইরে থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা হস্টেলে থাকবেন এবং সেখান থেকেই করোনা ছড়াতে পারে বলে কয়েকদিন আগে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন উপাচার্যরা। তাঁদের সুপারিশেই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রেখেছে রাজ্য সরকার। তার পরেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসে সরস্বতী পুজো করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। নিয়ম ভেঙে মাস্ক ছাড়াই ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছিলেন পড়ুয়ারা। সিন্ডিকেটের তরফে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানানো হয়েছে চটুল গানে উদ্দাম নৃত্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য নষ্ট করেছে তারা। এবার তাদের কড়া শাস্তির নিদান দিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।