দুলাল দে: আপামর ভারতীয় ফুটবল সমর্থকরা এই মুহূর্তে তাকিয়ে রয়েছেন ইন্ডিয়ান সুপার লিগের টেন্ডারের দিকে। শেষ পর্যন্ত কারা টেন্ডার জমা দেবেন? কোন সংস্থার কাছে যাবে আইএসএলের বরাত?
আইএসএলের টেন্ডারে যে যে শর্ত রাখা হয়েছে, তাতে এফএসডিএল হচ্ছে একমাত্র ঠিকঠাক সংস্থা, যাঁদের বরাত পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ, শুধুই আর্থিক সক্ষমতা নয়। ব্রডকাস্টিং নিয়ে যে শর্তগুলি আরোপ করা হয়েছে, তাতেই আটকে যাবে আর্থিক সক্ষমতা থাকা অনেক সংস্থা। তবে ফেডারেশন আইএসএলের টেন্ডারে একটি শর্ত দিয়েছে, যাতে এই সমস্যা মেটানো সম্ভব হতে পারে। কোনও একটি সংস্থা নিজেদের একা না পারলে, কনসোর্টিয়াম করেও তারা আইএসএলের টেন্ডারে আবেদন করতে পারে। তবে যারা আইএসএলের টেন্ডারে আবেদন জমা দিতে চান, তারা ২৫ অক্টোবর, আজ শনিবার ফেডারেশনের টেন্ডার কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তারা। টেন্ডারের আবেদন করার আগে শর্তগুলি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন সংস্থাগুলি করতে পারবেন। তার পরেই টেন্ডারের আবেদন। যার শেষ দিন ৫ নভেম্বর। তবে আইএসএলের টেন্ডারে ব্যাপারে বড় আপেডট হল, আজকে টেন্ডার কমিটির সঙ্গে আলোচনার জন্য ৬টি সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং উল্লেখযোগ্য নাম অবশ্যই এফএসডিএল। তারপর যথাক্রমে রয়েছে শ্রাচী স্পোর্টস, ইন্ডিয়ান অয়েল, একটি বিদেশি সংস্থার পাশাপাশি আরও দুটি ভারতীয় সংস্থা।
এফএসডিএলের টেন্ডার নিয়ে আলোচনায় বসা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। কারণ, তার অর্থ, নতুন করে ১৫ বছরের চুক্তি নিয়ে তারা আইএসএল করতে এখনও আগ্রহী রয়েছে। তার আগে অবশ্য শোনা যাচ্ছে, অন্তত ২০০টি প্রশ্ন নিয়ে তারা মেল পাঠিয়ে রেখেছে টেন্ডার কমিটির কাছে। এই প্রশ্নগুলি নিয়েই আজ শনিবার আলোচনা হবে। শ্রাচী স্পোর্টস আসতে চাইলে, অবশ্যই ‘জি’ অথবা ‘সোনি’র মতো বড় কোনও ব্রডকাস্টিং পার্টনারের সঙ্গে কনসোর্টিয়াম করে আসতে হবে। কিন্তু গত দশ বছর ধরে জি কোনও স্পোর্টস ব্রডকাস্টিং করছে না। ফলে আইএসএলের টেন্ডারের শর্তগুলি মেটানো সম্ভব হচ্ছে কি না, দেখতে হবে। তবে বিস্তারিত জানতে আজ শনিবার টেন্ডার কমিটির সঙ্গে আলোচনায় থাকবে শ্রাচী স্পোর্টসও।
এফএসডিএল যে ২০০টি প্রশ্ন আইএসএলের টেন্ডার কমিটির কাছে পাঠিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, আইএসএলে অবনমন-চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে। তার সঙ্গে আইএসএলে চালনোর গঠনতন্ত্র নিয়েও নানা প্রশ্ন করা হযেছে। সঙ্গে বার্ষিক ৩৭.৫ কোটি টাকা দেওয়া নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে।
কিন্তু এসবের মধ্যেই মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল-মহামেডানের বাইরে আইএসএলের দশটি ক্লাব একযোগে আইএসএলের টেন্ডার নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপিত করে বিশাল চিঠি পাঠিয়েছে ফেডারেশনকে।
আইএসএলের টেন্ডারের ১৩.৪ পয়েন্ট উল্লেখ করে ক্লাবগুলি প্রশ্ন তুলেছে,
১) যারা বিডার হবে, তাদের কাছে মিডিয়া রাইটসের ন্যূনতম কোনও গ্যারান্টি মানি চাওয়া হয়েছে কি না? প্রশ্নর পাশাপাশি ক্লাবগুলি একযোগে তাদের প্রস্তাবও জানিয়েছে দিয়েছে। ক্লাবগুলি বলেছে, আগের মিডিয়া রাইটস চুক্তির সমান বা তার বেশি মূল্যের রাইটস পাওয়া সম্ভব হলে তখনই প্রস্তাবিত আর্থিক মডেলটি কার্যকর হতে পারে।
২) শর্তের ৬.৩- আইএসএলের ক্লাবগুলি নিজেদের ম্যাচে রাইট হোল্ডার হিসেবে ফিড ব্যবহার ও কনটেন্ট তৈরির অধিকার পাবে কি না?
প্রস্তাব -ক্লাবগুলির নিজস্ব কন্টেন্ট তৈরি ও নিজেদের স্বার্থ প্রচারের জন্য এই ফিড বা কন্টেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩) অবনমন ধাপে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা উচিত। অন্তত পাঁচ বছরের মধ্যে যাতে ক্লাবগুলির বিনিয়োগ এবং স্থিতি নষ্ট না হয়, তা দেখতে হবে।
৪) লিগের ক্যালেন্ডার অনেক আগে প্রকাশ করতে হবে।
৫) যারা দশ বছর ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দিয়েছে, তাদের আর্থিক সুবিধা বা গ্যারান্টি বজায় রাখতে হবে।
৬) ফুটবলারদের স্যালারি ক্যাপ ১৮ কোটি থেকে কমিয়ে ৬-১০ কোটির মধ্যে আনতে হবে।
এরকম আরও আরও একাধিক প্রস্তাব ফেডারেশনকে পাঠিয়েছে আইএসএলের দশটি ক্লাব। ফলে আজকে আইএসএলের টেন্ডার কমিটির সঙ্গে বিডারদের মিটিং ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
