সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ হয়েছে লিওনেল মেসির চার দিনের ভারত সফর। শুরুটা কলকাতায় ডামাডোল দিয়ে হলেও মেসির ভারত সফরের শেষটা হয়েছে অসাধারণ। মেসি-সহ লুইস সুয়ারেজ, রদ্রিগো দি পলরা ফিরে গিয়েছেন দেশে। এরপর মেসির টিমের ভারত সফরে কত খরচ হয়েছে, এই প্রশ্নও উঠছে। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন সামগ্রিক খরচের যে পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে, তা শুনে একপ্রকার ভিরমি খেতে হয়।
মেসির ভারত সফর ঘিরে উত্তেজনা চরমে উঠেছিল। তাঁর সঙ্গে ছবি তোলারই খরচ ছিল ১০ লক্ষ টাকা। এমনকী আর্জেন্তিনীয় রাজপুত্রকে একঝলক দেখতে ৫০ হাজার টাকা পকেট থেকে খসাতে ইচ্ছুক ছিলেন অনেক সমর্থক। কলকাতাতেই তো চার থেকে ১২ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। সেই কারণেই এলএম১০-এর 'গ্ল্যামারাস' ভারত সফরের খরচ কত, তা নিয়েও কৌতূহল তুঙ্গে।
বলাই বাহুল্য যে, খোলামকুচির মতো টাকা উড়ছে মেসির ভারত সফরে। কলকাতা, হায়দরাবাদ, মুম্বই এবং দিল্লি, বনতারা ভ্রমণের পর 'ব্র্যান্ড মেসি'র মূল্য শত কোটি টাকার গণ্ডি ছাড়িয়েছে। মেসির জন্য লীলা প্যালেসের আস্ত একটা ফ্লোর রিজার্ভ করা হয়েছিল। হোটেলের যে প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে তিনি ছিলেন, সেখানকার এক রাতের থাকার খরচ ছিল সাড়ে ৩ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, সেই হোটেলে মেসির সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল। সেখানে আট বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী তারকার সঙ্গে দেখা করার খরচ ছিল ১ কোটি টাকা। 'গালফ নিউজ'-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত সফরের মোট খরচ সব মিলিয়ে প্রায় ১২০ কোটি থেকে ১৫০ কোটি টাকা। কি চমকে যাচ্ছেন? এটাই কিন্তু বাস্তব। যদিও মেসিকে ভারতে আনতে কত খরচ বা টিকিট বিক্রি এবং স্পনসরদের থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দেওয়া নেই ওই প্রতিবেদনে।
তবে ভারতের ভালোবাসায় মুগ্ধ মেসি। ‘গোট ট্যুর’ শেষে আবেগঘন পোস্টও করেছেন আর্জেন্তিনীয় কিংবদন্তি। লিখেছেন, ‘নমস্তে ইন্ডিয়া! দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ ও কলকাতায় আসার অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। এত ভালো অভ্যর্থনা, আতিথেয়তা ও ভালোবাসা পেয়ে ভালো লাগছে। আশা করি, ভারতের ফুটবল ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।’ তাছাড়াও এক ভিডিওবার্তায় মেসির বক্তব্য, “এই ক’দিনে এত ভালোবাসা দেওয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সত্যি কথা বলতে এটা আমাদের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। তবে এই সফরটা বড্ড সংক্ষিপ্ত ছিল। এত ভালোবাসা পেয়ে অভিভূত। আমি জানতাম, এখানে এসে ভালোবাসা পাব, কিন্তু সেটার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেয়ে দারুণ লাগছে।”
এই মুহূর্তে ঘোরতর অন্ধকারে ভারতীয় ফুটবল। ফিফার ক্রমতালিকায় ভারত নেমে গিয়েছে ১৪২-এ। খাতায় কলমে দেশের ফুটবল মরশুম শুরু হলেও আইএসএল বা আই লিগের মতো প্রতিযোগিতা এখনও শুরু করা যায়নি। এক কথায় যে অচলাবস্থা চলছে, তা কাটাতে এখনও কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি। সেই কারণে দেশের শীর্ষ দুই লিগের ভবিষ্যৎ কী, সেই প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যায়নি। ফুটবলটাই কেমন যেন 'ব্রাত্য' হয়ে পড়ছে এখানে। তাই অনেকেই বলছেন, মেসির ভারত সফরের খরচের অর্ধেকও যদি ব্যয় করা যেত দেশের খেলার পরিকাঠামো তৈরিতে, তাহলে অনেক কিছুই বদলে যেতে পারত।
