প্রসূন বিশ্বাস: অনুশীলন শেষে জেসন কামিংস, জেমি ম্যাকলারেনদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। দ্রুত মাঠ থেকেই যেতে হচ্ছে বিমানবন্দরে। তার মধ্যেই একঝাঁক সবুজ-মেরুন তরুণী সমর্থক এগিয়ে এলেন, হাতে কাঁসার থালায় প্রদীপ, চন্দন, ফুল আর শাঁখ। একে একে অ্যালবার্তো, স্টুয়ার্টদের মাথায় মঙ্গল টিকা পরিয়ে দিলেন ওঁরা। ঠিক যেন যুদ্ধজয়ের আগে মেরিনার্স যোদ্ধাদের বরণ করে নেওয়া। এর মধ্যেই এক সমর্থক বলে উঠলেন, “কাদের সঙ্গে যুদ্ধ! আমরা যখন লিগ শীর্ষে, ওরা কোথায়? এগারোতে!”
একটু আগেই সেটপিস অনুশীলনে নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছিলেন অ্যালবার্তো, ম্যাকলারেনরা। পাশাপাশি দুই প্রান্ত থেকে বক্স লক্ষ করে একের পর এক ক্রস তুলে যাচ্ছিলেন লিস্টন-মনবীররা। বোঝাই যাচ্ছে এই দুই পরিকল্পনাতেই শনিবার অস্কার বাহিনীকে সমস্যায় ফেলতে চাইছেন মোলিনা। তার উপর ফিট গ্রেগ স্টুয়ার্ট ফিরছেন। গ্রেগের ফেরাটা মোহনবাগানের আক্রমণভাগকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে নিঃসন্দেহে। যদি তিনি প্রথম একাদশে থাকেন তাহলে মাঝমাঠে আসতে পারেন লিস্টন, টাংরি ও আপুইয়া, মনবীর। আর যদি পরিবর্ত হিসাবে আসেন তাহলে প্রথম একাদশে টাংরির বদলে আসবেন সাহাল আবদুল সামাদ। সেক্ষেত্রে সামনে কামিংসের সঙ্গে থাকবেন জেমি ম্যাকলারেন। অনিরুদ্ধ থাপা, আশিক কুরুনিয়ানরা থাকছেন না।
ইদানীং দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা ভালো করছেন মহেশরা। তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন মোহনবাগান কোচ। মোলিনা বলছেন, “খেলাটা শুধুই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে হয় না। গোটা ম্যাচটাই ধারাবাহিকতা দেখাতে হয়।’’ তাঁর ছেলেরা ৯০ মিনিট ধারাবাহিকতা দেখানোর জন্য তৈরি রয়েছে। আগের ডার্বিতেই ২-০ গোলে জয় এলেও অতীতের ফলাফল আর মাথায় রাখতে চান না মোহনবাগান কোচ। তিনি আরও বলছিলেন, “লিগের শীর্ষে রয়েছি। প্রতিপক্ষ ১১তম স্থানে ঠিকই। ইতিবাচক দিক হলেও তবে সেটা কখনই এই ডার্বিতে প্রভাব ফেলবে না। শনিবারের ম্যাচের নব্বই মিনিটে আমার ছেলেরা জয় তুলে আনতে পারবে এই আত্মবিশ্বাস রয়েছে।”
গত ডার্বিতে গোল করেছিলেন। ফিরতি ডার্বিতেও গোলের জন্য ম্যাকলারেনের দিকে তাকিয়ে সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। নিজে এখনও পর্যন্ত পাঁচটা গোল করলেও নিজে গোল করার চেয়ে দলের জয়কেই প্রাধান্য দিচ্ছেন এই অজি তারকা। ম্যাকলারেন বলছেন, “মোহনবাগান আমাকে এনেছে সাফল্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এখানে আমার গোলটাই বড় নয়। জয়টা বড় দিক। আগে দল। পরে ব্যক্তিগত সাফল্য। দল হিসাবে ভালো খেলছি। সবাই গোল করছে। এটা সত্যি আরও গোল করতে চাই। তবে এখনও পর্যন্ত দলের এই পারফরম্যান্সে খুশি।” অস্ট্রেলিয়ায় একাধিক ডার্বি খেলে আসা ম্যাকলারেন মেলবোর্ন ডার্বির থেকেও এগিয়ে রাখছেন কলকাতা ডার্বিকেই।
