স্টাফ রিপোর্টার: ইতিমধ্যেই জেতা হয়ে গিয়েছে লিগ-শিল্ড। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে এরপরে গ্রুপ লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে কীভাবে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন মোহনবাগান ফুটবলাররা?
ওড়িশা ম্যাচে লিগ-শিল্ড নিশ্চিত হতেই গ্যালারি থেকে দর্শকদের আনা কৃত্রিম শিল্ড নিয়ে যুবভারতীতে উৎসব পালন করেন দিমিত্রি-ম্যাকলারেনরা। কিন্তু শনিবার ম্যাচের পর ফুটবলারদের হাতে উঠবে আইএসএলের সত্যিকারের শিল্ড। ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে উপস্থিত থাকবেন সেই শিল্ড মোহনবাগানের ফুটবলারদের হাতে তুলে দিতে। আর তা প্রত্যক্ষ করার জন্য শনিবারের যুবভারতীর গ্যালারি সম্ভবত হতে চলেছে 'হাউসফুল।' ফলে উদ্দেশ্য না থেকেও অনেক উদ্দেশ্য তৈরি হয়ে যাচ্ছে গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে এফসি গোয়াকে হারানোর জন্য। ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সেই কথাই যেন বারবার করে বোঝাতে চাইছিলেন মোহনবাগান কোচ মোলিনা। বলছিলেন, "উৎসবের ম্যাচে নিশ্চয়ই কারওরই পয়েন্ট হারাতে ভাল লাগে না। এফসি গোয়া ম্যাচে ভালো খেলার জন্য এটাই তো যথেষ্ট কারণ।"
ইতিমধ্যেই ৫৩ পয়েন্ট। শেষ ম্যাচ জিতলে ৫৬। এই পয়েন্টের মাইলফলকে পৌঁছনোটাও তো আইএসএলের ইতিহাসে অন্যতম একটা রেকর্ড। কিন্তু শুধুই রেকর্ডের কথা ভাববেন? নাকি প্লে অফে কাপ জয়ের লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তও নেবেন? ইতিমধ্যে তিনটে কার্ড দেখে রয়েছেন জেমি ম্যাকলারেন। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে জেমিকে শুরু থেকে খেলানোটা কি তাহলে কিছুটা ঝুঁকি হয়ে যাবে প্লে অফের জন্য? প্র্যাকটিসে দেখা গেল শুরুতে সবাই মাঠে নামলেন। কিন্তু জেমি ম্যাকলারেন নেই। অনেক পরে প্র্যাকটিসে নামলেন অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকার। স্বাভাবিকভাবেই আলোচনা শুরু হল, তাহলে কি শনিবারের ম্যাচে শুরুতে কামিংস আর দিমিত্রি পেত্রাতোস?
রয় কৃষ্ণ বিদায় হওয়ার পর সবুজ-মেরুন জার্সিতে মোহনবাগান নৌকোর হাল ধরেছিলেন দিমিত্রি। কিন্তু সেই দিমিত্রি আর এই মরশুমের দিমিত্রিতে অনেকটাই পার্থক্য। ম্যাকলারেন আসার পর বেশিরভাগ ম্যাচেই দিমিত্রিকে কাটাতে হয়েছে মাঠের বাইরে বেঞ্চে বসে। তারপরেও ওড়িশা ম্যাচে তাঁর পায়ের ছোঁয়াতেই এসেছে এই মরশুমের লিগ-শিল্ড। এই অবস্থায় যে কোনও তারকা ফুটবলারের ইগোতেই প্রবল আঘাত আসতে বাধ্য। বিশেষ করে তিনি যদি দিমিত্রির মতো বিশ্বকাপ খেলা ফুটবলার হন। কিন্তু পেশাদার ফুটবলারের মতোই কথা বলে গেলেন, গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে, "ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের থেকে দলগত পারফরম্যান্সটাই আগে। কোচ আমাকে দলের প্রয়োনে যেভাবে ব্যবহার করবেন, সেভাবেই আমি খেলতে রাজি। আমার একমাত্র কাজ কোচের নির্দেশ মতো দলকে জেতাতে সাহায্য করা।"
গ্রুপ লিগের পরই দলের সাতজন ফুটবলার চলে যাবেন জাতীয় শিবিরে। যেখানে কোচ আবার মানোলো মার্কুয়েজ। যে মানোলোর কোচিংয়ে গ্রুপ্রের শেষ ম্যাচে এফসি গোয়া খেলতে নামবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। তারপর প্লে অফে খেলার আগেই দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলাররা চলে যাবেন এমন কোচের প্র্যাকটিসে, যিনি প্লে অফে প্রতিপক্ষ দলের কোচ। এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্যই মোহনবাগান কোচ মোলিনা বললেন, "এই ব্যাপারে কী-ই বা বলতে পারি? এটুকুই বলা যায়, মানোলো মার্কুয়েজের উপরে আমার ভরসা রয়েছে।"
এ সব অনেক পরের ব্যাপার। তার আগে শনিবার এফসি গোয়াকে হারিয়ে শিল্ড হাতে নিয়ে মোহনবাগান ফুটবলাররা যুবভারতীতে উৎসবটা তো ভালোভাবে করে নিন!
