সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু'বছরের বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত ছিল মণিপুর। নিজেদের মধ্যে হিংসায় রত ছিল কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠী। কিন্তু ফুটবল মাঠে দেশের জার্সির প্রতিনিধিত্ব মিলিয়ে দিল দুই যুযুধান গোষ্ঠীকে। সম্প্রতি অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপ ফুটবলে যোগ্যতা অর্জন করেছে ভারত। আর সেখানে দুই নায়ক এসেছে কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠী থেকে। দেশকে জিতিয়েছে ভারতীয় পরিচয়ে।
সুনীল ছেত্রী, সন্দেশ জিঙ্ঘানরা পারেননি। কিন্তু ছোটরা করে দেখাল। কোচ বিবিয়ানো ফার্নান্দেজের হাত ধরে এবার কোয়ালিফায়ার্সের বৈতরণী পার করল ভারত। অনূর্ধ্ব-১৭ এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ‘ব্লু কোল্টস’রা। আহমেদাবাদের ইকেএ এরিনায় শক্তিশালী ইরানকে ২-১ গোলে হারিয়ে এই নিয়ে দশমবার এই প্রতিযোগিতায় খেলার ছাড়পত্র পেল ভারতের জুনিয়র দল।
প্রথমে পিছিয়ে পড়েও কামব্যাক করে ভারত। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার সামান্য আগে পেনাল্টি থেকে গোল করে ভারতকে সমতায় ফেরায় অধিনায়ক দাল্লালমুওন গাংতে। ৫১ মিনিটে গুনলেইবা ওয়াংখেইরাকপামের চিত্তাকর্ষক গোলে এগিয়ে যায় ভারত। দুই ফুটবলারের জাতিগত পরিচয়ও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাংতে কুকি গোষ্ঠীর ও গুনলেইবা মেইতেই গোষ্ঠীর। দু'জনের মিলিত উদ্যোগে এশিয়ার মঞ্চে উড়তে চলল তেরঙ্গা পতাকা।
২০২৩-র মে মাস থেকে মণিপুরে কুকি-মেইতেই সংঘর্ষে ২৫০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, ঘরছাড়া ৬০ হাজারের বেশি মানুষ। শান্তির খোঁজে ফুটবলও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। মণিপুরের বিভিন্ন রিলিফ ক্যাম্পে ফুটবলকে শুধু বিনোদন নয়, এই ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে দেখার মাধ্যম হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনূর্ধ্ব-২৩ দলে ৮ জন মণিপুরী ফুটবলার আছেন। যাঁদের মধ্যে ৭জন মেইতেই ও ২জন কুকি। আর সেখানে নিজের রাজ্য থেকে ৩০০০ কিলোমিটার দূরে, দেশের অন্য প্রান্তে দুই কিশোর ভারতীয় ফুটবল দলের জার্সি পরে সেই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।
