নেদারল্যান্ডস-৩ (মালেন-২, কোডি) রোমানিয়া-০
তুরস্ক-২ অস্ট্রিয়া-১
(ডেমিরাল-২) (মিখায়েল)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাতীয় দলের জার্সিতে এখনও ১১টা গোল করেছেন কোডি গাকপো। তারমধ্যে বিশ্বকাপে তিনটে, যা করেছিলেন বিশ্বফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে নিজের প্রথম তিন ম্যাচে। আবার ইউরো কাপেও তিনটে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত। অর্থাৎ নেদারল্যান্ডসের জার্সিতে মোট গোলের পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি এই ডাচ ফরোয়ার্ড করেছেন কোনও কোনও কোনও বড় মঞ্চেই।
এই তথ্য থেকেই বোঝা সম্ভব, কোডি গাকপো ঠিক কোন ধাতুতে তৈরি। আর তাঁর মধ্যে প্রতিভার পাহাড়কে চিনতে ভুল করেননি লুই ফান হাল, নেদারল্যান্ডসের কোচের পদে রোনাল্ডো কোমানের পূর্বসূরী হিসাবে যিনি বিশ্বকাপের দলে রেখেছিলেন গাকপোতে। বিশ্বকাপের সময়ই নতুন তারকার ভবিষ্যৎ নিয়ে ফান হাল বলে গিয়েছিলেন, “কোডি প্রতিভাবান। তরুণ। সম্ভাবনাময় ফুটবলার। আর তারকার হওয়া না হওয়া? কোডি তো এখনই নিজেকে তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।” যাই হোক, ‘আয়রন টিউলিপ’ যে কথা শুনিয়ে ছিলেন বছর দুয়েক আগে, তা তো এখন স্পষ্ট বুঝতে পারছে ফুটবলবিশ্ব। মঙ্গলবার রাতে ইউরোর প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে রোমানিয়াকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করলেন ডাচরা। আর সেই কাজে নেতৃত্ব দিলেন গাকপো। গোল করলেন। করালেনও। তার সঙ্গেই ডাচদের তুলে আনলেন কোয়ার্টার ফাইনালে, ২০০৮ সালের পর প্রথমবার।
[আরও পড়ুন: আরও পিছোল কোহলিদের দেশে ফেরা, কবে দিল্লি পৌঁছবে টিম ইন্ডিয়া?]
ইউরোর আগে কোমানের ছাত্ররা ছিলেন দুরন্ত ফর্মে। প্রতিযোগিতা শুরুর ঠিক আগে প্রস্তুতি ম্যাচে কানাডা আর আইসল্যান্ড– দু’দলকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছিল ৪-০ গোলে। এরপর ইউরোর শুরুতে পোল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারানোর পর ফ্রান্সের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ে নকআউটের টিকিট একপ্রকার নিশ্চিত করেই ফেলেছিল তারা। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসে হঠাৎ ছন্দপতন, অবার হার জোটে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে। সেজন্যই হয়তো ধারে-ভারে পিছিয়ে থাকা রোমানিয়ার বিরুদ্ধে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি না নিয়ে সেরা ছাত্রদেরই মাঠে নামিয়ে দিয়েছিলেন কোচ কোমান। তা দলও হতাশ করেনি তঁাকে। ৩-০ গোলের দুরন্ত জয়ের পর তিনি বলছিলেন, “ম্যাচ শেষে স্কোরবোর্ডটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আজ সব বিভাগেই ভালো খেলেছি। আর ভালো খেলেছি বলেই প্রতিযোগিতায় এখনও টিকে আছি।”
এদিন ডাচদের জয়ে একটা গোল গাকপোর, দু’টো ডনিয়েল মালেনের। ২০ মিনিট নাদাগ রোমানিয়া বক্সের ডানদিকে জাভি সিমন্সের কাছ থেকে বল পেয়েছিলেন গাকপো। প্রথম পোস্ট ও গোলকিপারে মাঝে থাকা সামান্য ফাঁক দিয়ে যে শটটা নিলেন তিনি, তার নাগালই পাননি ফ্লোরিন নিটা! রোমানিয়া গোলকিপারের জীবনে দুঃস্বপ্নের মতো বারে বারে হানা দেবে এই গোল। ৬৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করলেও এবার গাকপোর গোল বাতিল হয় অফসাইডের জন্য। সেই দুঃখ মেটাতেই ৮৩ মিনিটে জনা তিনেক ফুটবলারকে কাটিয়ে বল সাজিয়ে দিলেন মালেনের জন্য। ভুল করেননি ডাচ ফরোয়ার্ড। সংযুক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে ফের গোল করলেন তিনি। আর তাতেই নেদারল্যান্ডস টপকালো শেষ ষোলোর বাঁধা ষোলো বছর পর।
এদিকে অন্য ম্যাচে তুরস্ক ২-১ গোলে অস্ট্রিয়াকে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল। মাত্র ৫৭ সেকেন্ডে গোল করে ইউরোর নকআউটে দ্রুততম গোল করলেন তুরস্কের মেরিহ ডেমিরাল। এই গোলের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোর ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম গোলের নজিরও গড়লেন তিনি। এর পর আরও একটি গোলও করলেন ডেমিরাল। অস্ট্রিয়ার মিখায়েল গ্রেগরিটসিচ একটি গোল শোধ করেন।
[আরও পড়ুন: কলম্বিয়ার সঙ্গে ড্র ব্রাজিলের, কোপার কোয়ার্টার ফাইনালে ভিনিসিয়াসরা]