সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সান্তিয়াগো কাজোর্লা গোনসালেস। সংক্ষেপে অনেকেই তাঁকে ডাকেন 'সান্তি' নামে। গত ডিসেম্বরে ৪০-এ পড়েছেন। ২০২৩ সাল থেকে স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল ওভিয়েদোয় রয়েছেন তিনি। এটাই তাঁর ছোটবেলার ক্লাব। এবার সেই ক্লাবকে ২৪ বছর পর লা লিগায় তুলেছেন তাদের প্রিয় 'সান্তি'।
শনিবার সেগুন্ডা প্রোমোশন প্লে-অফের ফাইনালে মিরান্দেসকে ঘরের মাঠে এগ্রিগেডে ৩-২ গোলে হারায় ওভিয়েদো। সেই ম্যাচে গোল করেন কাজোর্লা। সেমিফাইনালেও অনবদ্য ফ্রিকিক থেকে গোল করেছিলেন তিনি। আর ফাইনালে পেনাল্টি থেকে বল জালে জড়িয়ে দিতে কোনও ভুল করেননি। উল্লেখ্য, সেমিফাইনালে আলমেইরাকে হারিয়ে প্লে-অফ খেলার সুযোগ পেয়েছিল ওভিয়েদো। তবে, প্রথম পর্বে ১ গোলে হার স্বীকার করে তারা। দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে ৩-১ গোলে মিরান্দেসকে উড়িয়ে ২৪ বছর পর লা লিগায় উত্থান ঘটে এই স্প্যানিশ ক্লাবের।
ম্যাচের পর ওভিদোর কোচ ভেলজকো পাওনোভিচ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের ফুটবলাররা হিরো। ওরা দুর্দান্ত স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য।" অন্যদিকে, রিয়াল ওভিয়েদোর ফুটবলাররা মেতেছেন কাজোর্লাকে নিয়ে। স্প্যানিশ এই ক্লাবের সঙ্গে যাঁর নাড়ির যোগ রয়েছে। ওভিদোর যুবদল থেকেই উত্থান তাঁর। ২০০৩ সালে ক্লাব ছাড়েন তিনি। এরপর ভিয়ারিয়াল 'বি' থেকে মূল দলে উত্থান; হুয়েলভা, মালাগা হয়ে ২০১২ সালে আর্সেনালে যোগ দেন।
এখানেই শেষ নয়। স্পেনের জাতীয় দলের হয়ে ৮১ ম্যাচে ১৫ গোল রয়েছে তাঁর। ২০০৮ এবং ২০১২ সালে ইউরো কাপ জয়ী স্পেন দলের সদস্য ছিলেন কাজোর্লা। ভালোই এগোচ্ছিল সব কিছু। তবে বড়সড় চোটের কবলে পড়েছিলেন। এমনকী অকালেই শেষ হয়ে যেতে পারত তাঁর কেরিয়ার। সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন তাঁর ছোটবেলার ক্লাবে। আর সেই ক্লাবকে রূপকথার নায়কের মতো তুললেন লা লিগায়। প্রায় একযুগ আগের কথা। রিয়াল ওভিয়েদো প্রায় দেউলিয়া হওয়ার মতো অবস্থায় ছিল। সেই সময় ক্লাবের আংশিক মালিকানা কিনেছিলেন। কারণ? ওই যে বললাম, নাড়ির যোগ, যাকে অস্বীকার করা যায় না সহজে।
এহেন কাজোর্লার খারাপ সময়ে পাশে দাঁড়ায় তাঁর ছোটবেলার ক্লাব। অবসর ভেঙে ফিরে আসেন তাঁর ছোটবেলার ক্লাবে। এরজন্য কোনও পারিশ্রমিক নিতে চাননি। কিন্তু ক্লাবের নিয়ম খণ্ডাবে কে? ন্যূনতম মূল্যে (ভারতীয় মুদ্রায় বার্ষিক প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা) সই করেন তিনি। তারপর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ইতিহাসে ওভিয়েদো, আর সেই ইতিহাসের লেখক চল্লিশোর্ধ্ব কাসোর্লা।