দুলাল দে, মারগাঁও: এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যাওয়ার আর কোনও সুযোগ নেই ভারতীয় দলের সামনে। তারপরেও কি স্রেফ সম্মান রক্ষার তাগিদে সুনীল-সন্দেশ-গুরপ্রীতদের মতো সিনিয়রদের নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে যাবে খালিদ জামিলের ভারতীয় দল? না কি, ভবিষ্যতের দল তৈরির কথা ভেবে এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের ম্যাচগুলোর জন্য জুনিয়র দল নিয়ে যাবেন খালিদ জামিল? বিশেষ করে অবসর ভাঙিয়ে ফিরিয়ে এনে গুরুত্বহীন এই বাংলাদেশ ম্যাচেও কি সুনীল ছেত্রীকে খেলাতে হবে? ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের অন্দরে এখন এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। যদিও বাংলাদেশ ম্যাচের সময় আবার অনূর্ধ্ব ২৩ জাতীয় দলের খেলাও রয়েছে। ফেডারেশনের শীর্ষ পদে এই মুহূর্তে যাঁরা আছেন, তাঁরা অবশ্য পুরো ব্যাপারটাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভার ছেড়ে দিতে চান জাতীয় কোচ খালিদ জামিলের উপর।
এই মুহূর্তে সুপার কাপ খেলার জন্য গোয়াতেই রয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। এখানে সুপার কাপের গ্রুপ পর্ব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যাবে জাতীয় শিবির। যতদূর শোনা যাচ্ছে, সুনীল ছেত্রী নিজেই হয়তো পুরো বিষয়টা নিয়ে কথা বলবেন খালিদ জামিলের সঙ্গে। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে তিনিও বাংলাদেশ ম্যাচে আর খেলতে যেতে চান না। কারণ, সুনীল মনে করছেন, তিনি আর ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ না। ফলে গুরুত্বহীন ম্যাচে জায়গা আটকে রাখার কোনও অর্থ হয় না। তাঁর জায়গায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কোনও স্ট্রাইকারকে খেলালেই ভারতীয় ফুটবলের জন্য ভাল।
ভারতীয় ফুটবলে যেভাবে জাতীয় দল থেকে তিনি অবসর নিয়েছিলেন, খুব বেশি ভারতীয় ফুটবলারের কপালে এরকম ধুমধামের মধ্য দিয়ে অবসর নেওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জনের জন্য কোচ এবং ফেডারেশন কর্তাদের অনুরোধে অবসর ভেঙে ফিরতে হয় সুনীল ছেত্রীকে। তারপরেও এশিয়ান কাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। যে লক্ষ্যে তিনি অবসর ভেঙে ফিরেছিলেন, সেই লক্ষ্যই যখন পূর্ণ হয়নি, তখন আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জায়গা ধরে রাখা কেন? ঘনিষ্ঠ মহলে সুনীল জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই তিনি নিজেই খালিদ জামিলের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। সুনীল বোঝাবেন, কেন তাঁর জায়গায় এবার ভবিষ্যত প্রজন্মের স্ট্রাইকারের কথা জাতীয় দলে ভাবা উচিত। এমনকী শুধুই তাঁর ব্যাপারে নয়। হয়তো খালিদকে এরকম পরামর্শও সুনীল দিতে পারেন, বাংলাদেশ ম্যাচের দল গঠনের জন্য জাতীয় দলের সব সিনিয়রদের সঙ্গেই তাঁর একবার আলোচনায় বসা উচিত। কারণ, কোনও আলোচনা ছাড়া হঠাৎ করে সব সিনিয়রদের বাদ দিয়ে দিলে তার অন্যরকম ব্যাখ্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই গুরুত্বহীন এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে কেন যত বেশি সম্ভব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ফুটবলারদের সুযোগ দেওয়া উচিত, এটা সবার জানা ভীষণই জরুরি।
জাতীয় কোচ খালিদ জামিল এই মুহূর্তে গোয়াতেই রয়েছেন। ডেম্পো, চেন্নাইয়িনের মতো জুনিয়র ফুটবলারদের নিয়ে গড়া দলগুলির খেলা দেখেছেন নিয়মিত। লক্ষ্য একটাই, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জাতীয় দল তৈরি করা। ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে তাঁর ২ বছরের চুক্তি। ফেডারেশন কর্তারাও খালিদ সম্পর্কে এখনই চূড়ান্ত কোনও মন্তব্য করতে চান না। প্রত্যেকেরই মত, খালিদকে আরও বেশি সময় দেওয়া উচিত। ঠিকমতো দল তৈরির জন্য খুব একটা বেশি সময় পাননি তিনি। সেই কারণেই সুনীল-পরবর্তী প্রজন্মের জাতীয় দল তৈরির জন্য ফুটবলার দেখে বেড়াচ্ছেন খালিদ জামিল।
