অর্পণ দাস: চড়া দামে টিকিট কেটেও গ্যালারি থেকে মেসির (Lionel Messi) দর্শন পাননি দর্শকরা। তাঁদের ক্ষোভের বিস্ফোরণে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। শুরু হয় বেনজির বিশৃঙ্খলা। ব্যারিকেড ভেঙে মাঠে নেমে পড়েন তাঁরা। তবে মেসির কলকাতা আগমন ঘিরে আয়োজকদের অব্যবস্থার অভিযোগে সরব হয়েছেন দর্শকরা। তাঁদের দাবি, বিরাট স্ক্যাম হয়েছে। টাকা ফেরত দিক আয়োজকরা।
ক্রীড়াপ্রেমীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শনিবার শহরে পা রেখেছিলেন লিওনেল মেসি। শনিবার ঠাসা কর্মসূচি ছিল তাঁর। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবভারতীতে মেসি দর্শনে এসেছিলেন দর্শকরা। কেউ এসেছিলেন পুরুলিয়া থেকে, কেউবা কাঁথি। মেসিভক্তরা এসেছিলেন বেঙ্গালুরু, শিলং থেকেও। এমনকী নেপাল থেকে এসেছিলেন ভক্তরা।
তবে বেলা ১২টা নাগাদ নির্ধারিত সময়ের আগেই মেসি মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্যালারি। দর্শকদের ক্ষোভের মুখে তছনছ অবস্থা হয় যুবভারতীর। দর্শকাসন ভেঙে, মাঠে বোতল ছুড়ে, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে উত্তেজিত জনতা। মাঠের ভিতরে ঢুকে হাতের কাছে যা পেয়েছে, তাই দিয়ে ভাঙচুর চালায় মেসিভক্তরা। ভেঙে দেওয়া হয় খেলোয়াড়দের ঢোকা-বেরনোর টানেল। ভেঙে চুরমার হয় সাউন্ড বক্স। এমনকী বিজ্ঞাপনী ব্যানারও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পুরুলিয়া থেকে সারা রাত বাসে করে এসেছেন সায়ক সিনহা। তিনি বললেন, "এটা কলকাতার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ফ্রড। এত লোকের আবেগের সঙ্গে খেলা করা অন্যায়। আয়োজকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা উচিত।" গতকাল রাতে কাঁথি থেকে এসেছেন দেবাশিস মণ্ডল। তাঁর কথায়, "লোকের টাকার কি কোনও দাম নেই? দর্শকরা যা করেছে ঠিক করেছে। আয়োজকরা অমানুষ। পুরো টাকা ফেরত চাই।" তাঁদের অনেকের মতে, "মাঠে এসেও জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখতে হবে কেন? মেসিকে ঘিরে মাছির মতো ভিড় ছিল। ১১ হাজার ৮০০ টাকার টিকিট কেটেও দেখাই তো গেল না ওকে।"
নদিয়া থেকে আট বছরের সন্তানকে নিয়ে এসেছেন উত্তমকুমার বিশ্বাস। বাবার মতোই খুদে মেসিভক্ত। উত্তমবাবুর কথায়, "সারারাত আনন্দে ঘুমোয়নি ছেলে। প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করার বলা শুরু করল, 'বাবা মেসি কোথায়? মেসি আসবে না?' ও যেন কিছুই বুঝতে পারল না যে কী হল! মেসিকে দেখতেই পেল না।" দর্শকদের অভিযোগ, যুবভারতীতে ঢোকার পর থেকেই মেসিকে ঘিরে ছিলেন ভিআইপিরা। সেই সংখ্যাটা কম করে ১০০ হবে। ফলে গ্যালারি থেকে ২০ মিনিট মেসিকে দেখাই যায়নি। চড়া দামে টিকিট কেটে মাঠে গিয়েও প্রিয় তারকাকে দেখতে না পেয়ে ধৈর্যচ্যুতি ঘটে তাঁদের। এখন দেখার, দর্শকদের চাপে পড়ে টিকিটের টাকা ফেরত দেয় কি না আয়োজকরা।
