shono
Advertisement

Breaking News

Messi in Kolkata

অতি লোভে তাঁতি নষ্ট! যুবভারতীতে ক্ষোভের বিস্ফোরণ, ভক্তদের আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা কেন?

টাকার খেলাতেই জলাঞ্জলি খেলাভক্তদের আবেগ।
Published By: Subhajit MandalPosted: 12:59 PM Dec 13, 2025Updated: 08:07 PM Dec 13, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফুটবলে কিক মারবেন লিও মেসি। দর্শকদের দিকে হাত নাড়াবেন। খেলা দেখবেন। প্রিয় মহাতারকাকে এক ঝলক দেখে জীবন সার্থক করার স্বপ্ন নিয়ে হাজার হাজার ফুটবল পাগল মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন স্টেডিয়ামে। মেসির চাক্ষুস দর্শনে জীবন সার্থক করার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পকেটের টান উপেক্ষা করে যুবভারতীতে গিয়েছিলেন মেসিপ্রেমীরা। কিন্তু বদলে হলটা কী? প্রাপ্তি শুধু যুবভারতীর মহাবিশৃঙ্খলা।

Advertisement

'ঈশ্বর' দর্শনের আশায় মাঠে আসা আকুল ভক্তরা সেভাবে দর্শনই পেলেন না মেসির। যেটুকু সময় মেসি মাঠে ছিলেন, সেটার বেশিরভাগ সময়ই তাঁকে ঘিরে ছিল ভিআইপি, নিরাপত্তারক্ষী এবং আয়োজকদের ঘনিষ্ঠদের ভিড়। তাতেই আবেগের বিস্ফোরণ দর্শকদের। এই বঞ্চনার যন্ত্রণা অসহনীয়। তাতেই হয়তো স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ হারালেন পাগলপারা দর্শক। স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়লেন অসংখ্য মানুষ। তছনছ ফেন্সিং, ছেঁড়া হল ব্যানার, ভাঙা হল চেয়ার। এহেন অবস্থা কস্মিনকালেও ভাবা যায়নি। সময়ের আগে যুবভারতী থেকে বেরিয়ে যেতে হল ফুটবল রাজপুত্রকে। মোহনবাগান এবং ডায়মন্ড হারবার কিংবদন্তিদের যে ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল, সেটাও হল না। সবচেয়ে বড় ব্যাপার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হল না লিওর। এককথায়, বিশ্বের সামনে কার্যত মাথা হেঁট হল ফুটবলের মক্কা কলকাতার। 

এখন প্রশ্ন হল, এই বিশৃঙ্খলার দায় কার? পাগলপারা দর্শকের? পুলিশ প্রশাসনের? ভিআইপিদের? নাকি আয়োজকদের? মেসি কলকাতায় সব মিলিয়ে থাকার কথা ছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টা। অথচ সেই কয়েক ঘণ্টাতেই গুচ্ছখানেক কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সকালে মূর্তি উন্মোচন, হোটেলে আলাপচারিতা, মাঠে ঢুকে গোট কনসার্ট, প্রাক্তনদের খেলা দেখা, স্পনসরদের দাবি মেটানো, ভিআইপিদের আবদার মেটানো। এসবের মধ্যে খাওয়া দাওয়া, ভক্তদের সঙ্গে করমর্দন, ছবি তোলা (সেসবের জন্য আবার আলাদা রেট চার্ট ঠিক করা হয়েছিল)। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন মানুষের পক্ষে মাত্র ওই কয়েক ঘণ্টায় এত কিছু আদৌ সম্ভব? আসলে এই সফরের শুরু থেকেই দর্শকের আবেগের দিক থেকে ব্যবসায়িক দিকটা বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছিল। টিকিট মূল্য থেকে শুরু করে কর্মসূচি নির্ধারণ- সবটাই করা হয়েছিল ব্যবসায়িক দিককে মাথায় রেখে। দেখা করার জন্য টাকা, হাত মেলানোর জন্য টাকা, ছবি তোলার টাকা, হাজার হাজার স্পনসর, ভিআইপিদের থেকে সুবিধা নিয়ে দেখা করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, কী করেননি আয়োজক? এমনকী গোট কনসার্টের আগে স্টেডিয়ামে চড়া দামে জলের বোতল পর্যন্ত বিক্রি করা হয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এই বিশৃঙ্খলার দায় কার? মোহনবাগান সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষ প্রশ্ন তুললেন, 'কেন মেসিকে ঘিরে থাকল হ্যাংলামির ভিড়? কেন স্টেডিয়াম পরিক্রমার সময় মেসিকে একা এগিয়ে রাখা হল না? কেন গ্যালারির দর্শকদের বঞ্চিত করা হল? এতে কলকাতার সুনাম বাড়ল? অপদার্থ আয়োজক কেন ন্যূনতম পরিকল্পনার ছাপ রাখল না? শুধু টাকা? শুধু ব্যবসা? এই আয়োজক আর কিছু হ্যাংলার জন্য সবাই বঞ্চিত হল। কলকাতা লজ্জিত হল।' একই সুর ভক্তদের গলাতেও। তাঁদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে বড়সড় স্ক্যাম হয়ে গেল। মেসিকে দেখতে এসে এমন অভিজ্ঞতা হবে, স্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা। 

বলে রাখা দরকার, এই মেসিই ২০১১ সালে এই যুবভারতীতে এসে ৯০ মিনিট খেলে গিয়েছেন। সেবারে কিন্তু আইনশৃঙ্খলার কোনও সমস্যা হয়নি। সবটাই সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। সেবার কিন্তু এই রাজ্য প্রশাসনই মানুষের আবেগ সামাল দিয়েছে। আসলে সেবার গোটা অনুষ্ঠানের রাশ ছিল প্রশাসনের হাতে। এবার সেটা ছিল আয়োজক সংস্থার হাতে। এই অরাজকতার দায় নিতে হবে তাঁদেরই?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মেসি কলকাতায় সব মিলিয়ে থাকার কথা ছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টা।
  • অথচ সেই কয়েক ঘণ্টাতেই গুচ্ছখানেক কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
  • সকালে মূর্তি উন্মোচন, হোটেলে আলাপচারিতা, মাঠে ঢুকে গোট কনসার্ট, প্রাক্তনদের খেলা দেখা, স্পনসরদের দাবি মেটানো, ভিআইপিদের আবদার মেটানো।
Advertisement