shono
Advertisement
Khalid Aucho

ভারতে খেলা ফুটবলারের সৌজন্যে ছ’বছর পর AFCON-এ উগান্ডা, আবেগী বার্তা প্রাক্তন ক্লাবের

ভারতীয় ক্লাবের হয়ে দু'টি গোলও করেছিলেন তিনি।
Published By: Prasenjit DuttaPosted: 03:46 PM Dec 25, 2025Updated: 03:50 PM Dec 25, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'দেওয়া নেওয়া ফিরিয়ে দেওয়া তোমায় আমায় জনম জনম এই চলেছে...'। প্রতিবেদনটি লিখতে বসে রবীন্দ্রনাথ মনে পড়ল। এর কারণ অবশ্য আছে। মাসখানেক আগেকার কথা। আফ্রিকা কাপ অফ নেশনসে নামার আগে আত্মবিশ্বাসের সুর ঝরে পড়েছিল তাঁর গলায়। বলেছিলেন, এবারের টুর্নামেন্টে চমকে দিতে পারে উগান্ডা। যিনি এ কথা বলেছেন, তিনি দেশটির অধিনায়ক খালিদ আচো। নামটা চেনা চেনা লাগছে? চেনা লাগারই কথা। কারণ ভারতীয় ফুটবলে চেনা মুখ তিনি। অতীতে খেলে গিয়েছেন চার্চিল ব্রাদার্সে। চার্চিলের সেই প্রাক্তনীই এখন উগান্ডার অধিনায়ক। যা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় সম্প্রতি পোস্ট করেছে ভারতীয় ক্লাব। 

Advertisement

কী লিখেছে তারা? ইনস্টাগ্রামে গোয়ার ক্লাবটি লেখে, '১৯৮৮ সাল থেকে আমরা সেরা আফ্রিকান প্রতিভা খুঁজে বের করায় বিশ্বাসী আমরা। এ কথা আবারও প্রমাণিত হল। খালিদ আচো একসময় আমাদেরই ছিলেন। এখন আফ্রিকা নেশনস কাপে তিনি উগান্ডার অধিনায়ক।' আচো একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ২০২১-২৫ সালে তানজানিয়ান ক্লাব ইয়াং আফ্রিকানসের হয়ে খেলছেন। আগামী বছর তাঁকে সম্ভবত দেখতে পাওয়া যাবে সিঙ্গিদা ব্ল্যাক স্টারসের জার্সি গায়ে। দেশের হয়ে ৬২ ম্যাচে অংশ নেওয়া রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হলেও গোল করতেও পারদর্শী। ২০১৮-১৯ সালে চার্চিলের হয়ে তিনি ১৬ ম্যাচে দু'টি গোলও করেছিলেন। তবে চার্চিলে খেলার আগের মরশুমে ইস্টবেঙ্গলেও সই করেছিলেন তিনি। এহেন আচো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দু'টি গোল করেছেন। 

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, বিভিন্ন সময় আফ্রিকান ফুটবলাররা চার্চিলকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ওডাফা ওকোলি, জর্জ একেহ, ইউসিফ ইয়াকুবু, আর্নেস্ট এমেকো-সিয়ানকাম, প্রেশিয়াস এমুয়েজেরায়ে, কেনেথ ইকেচুকু, অ্যানসুমনা ক্রোমা, ওয়েড লেকের মতো ফুটবলাররা। এই ফুটবলাররা ক্লাব ফুটবলকে তো বটেই, ভারতীয় ফুটবলেরও মান বাড়িয়েছেন।

২০০৫-১১ পর্যন্ত চার্চিলে চুটিয়ে খেলেছেন ওডাফা। ১১৬ ম্যাচে ১১৭ গোল রয়েছে তাঁর। ২০০৫-০৬ সালে জাতীয় ফুটবল লিগ দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব ছিল চার্চিল ব্রাদার্স। সেই ক্লাবের হয়ে ৪টে গোল করে জাতীয় লিগের মূলপর্বে চার্চিলকে উঠতে সহায়তা করেন। এর পরের মরশুমে ১৮ গোল করে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। ২০০৮-০৯ মরশুমে সর্বোচ্চ স্কোরার হিসাবে আই লিগ জেতেন। তাঁর নাম গোয়ান ক্লাবের কাছে কিংবদন্তির পর্যায়ে।

২০১৯ সালে নকআউট পর্বে পৌঁছেছিল উগান্ডা। শেষবার তারা শেষ ষোলোয় পৌঁছেছিল। তারপর এবার। যদিও সহজ গ্রুপে পড়েনি তারা। গ্রুপ 'সি'-তে তাদের সঙ্গে রয়েছে শক্তিশালী তিউনিশিয়া, নাইজেরিয়া এবং তানজেনিয়া। তবে একদা চার্চিলে খেলে যাওয়া আচো বলেছিলেন, "রাউন্ড অফ ১৬-তে পৌঁছনো যথেষ্ট নয়। আমাদের লক্ষ্য আরও এগিয়ে যাওয়া। চেষ্টা থাকবে ধাপে ধাপে ফাইনালে ওঠার। পথ কঠিন হলেও চেষ্টা জারি থাকবে।" দলের অধিনায়কের মুখে এমন কথা শুনে উগান্ডার খেলোয়াড়রা যে অনুপ্রাণিত হবেন, তা বলাই বাহুল্য।

আর হ্যাঁ, ভারতের কথাও তাঁর মন্তব্যে উঠে এসেছে। "আমি উগান্ডা, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সার্বিয়া, মিশর, ভারত আর এখন তানজানিয়ায় খেলেছি। এই সমস্ত দেশে খেলার অভিজ্ঞতাই আমাকে গড়ে তুলেছে।" বলছিলেন আচো। উল্লেখ্য, তিউনিশিয়ার কাছে ১-৩ গোলে হেরে আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস অভিযান শুরু হয়েছে উগান্ডার। তাদের পরের ম্যাচ ২৭ ডিসেম্বর, শনিবার। প্রতিপক্ষ তানজিনিয়া। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই নামবে আচোর দল। 'দ্য ক্রেনস'দের জন্য সুদূর ভারত থেকেও একরাশ শুভেচ্ছা থাকবে। ঠিক এই কারণেই আফ্রিকান খেলোয়াড়দের নিয়োগ ও বিকাশে তাদের দীর্ঘ ইতিহাসকে তুলে ধরেছে চার্চিল ব্রাদার্স। তাদের আবেগী বার্তা উগান্ডা অধিনায়কের কাছে পৌঁছেছে কি না জানা নেই, তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে গোয়ান ক্লাবটির সঙ্গে আফ্রিকা ফুটবলারদের সম্পর্ক শুক্তির বুকে মুক্তোর মতো। হয়তো 'জনম জনম' এটাই চলবে। চলতি কা নাম গাড়ি। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আফ্রিকা কাপ অফ নেশনসে নামার আগে আত্মবিশ্বাসের সুর ঝরে পড়েছিল তাঁর গলায়।
  • বলেছিলেন, এবারের টুর্নামেন্টে চমকে দিতে পারে উগান্ডা।
  • অতীতে চার্চিল ব্রাদার্সে খেলে যাওয়া খালিদ আচো এখন উগান্ডার অধিনায়ক।
Advertisement