অমিতলাল সিং দেও, মানবাজার: জমির জালে আটকে ছিল একটি বড়সড় প্যাঙ্গোলিন (Pangolin)। নজরে পড়ায় তাকে উদ্ধার করল বনদপ্তর। শনিবার পুরুলিয়ার কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের রঘুনাথপুর এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাণীটির ওজন প্রায় ৭ কেজি। সাড়ে তিন ফুট লম্বা প্যাঙ্গোলিন। কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের ডিএফও (DFO) অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পূর্ণবয়স্ক ওই প্যাঙ্গোলিন উদ্ধারের পর সুস্থ থাকায় সেটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ শ্রেণির শিডিউল-১’এর তালিকায় রয়েছে প্যাঙ্গোলিন। স্থানীয় স্তরে ‘বনরুই’, ‘বজ্রকিট’ ও ‘পিপীলিকাভুক’ নামেও পরিচয়। একটা সময় পুরুলিয়ার (Purulia) বিভিন্ন এলাকায় দেখা পাওয়া যেত এই নিরীহ বন্যপ্রাণীটিকে। কিন্তু বর্তমানে সেভাবে আর দেখা মেলেনি। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ভারতীয় প্যাঙ্গোলিনকে ‘লাল তালিকাভুক্ত’ করেছে। কারণ আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের একটা র্যাকেট এই অঞ্চলের জঙ্গল থেকে প্যাঙ্গোলিন বস্তাবন্দি করে ভিনদেশে পাচার (Smuggling) করে।
[আরও পড়ুন: ‘৩ মাস ধরে ধর্ষণ করেছে বাবা’, নারকীয় যন্ত্রণা সইতে না পেরে গুলি করে খুন করল কিশোরী!]
কয়েক বছর আগেও পুরুলিয়ার কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের পুরুলিয়া-পাড়া রেঞ্জ এলাকার আন্তঃরাজ্য সীমানা দড়দা মোড়ের একটি লাইন হোটেল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি প্যাঙ্গোলিন উদ্ধার করে পাড়া থানার পুলিশ। পরে বনদপ্তরের (Forest Department) হাতে সেটিকে তুলে দেওয়া হয়। তবে শেষমেষ ওই নিরীহ বন্যপ্রাণীটিকে বাঁচানো যায়নি। জঙ্গলে ছাড়ার একদিন পর তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘যৌন হেনস্তার কোনও সুযোগ ছাড়তেন না ব্রিজভূষণ’, বিস্ফোরক চার্জশিট পুলিশের]
এই ঘটনার পরেই পুলিশ ও বনদপ্তর নিশ্চিত হয়ে যায়, প্যাঙ্গোলিন পাচারকারীরা পুরুলিয়াকেও করিডর হিসেবে ব্যবহার করে। শুধু করিডর (Corridor) নয়। এই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় তাদের ছোট ছোট এজেন্ট রয়েছে। যারা স্থানীয়ভাবে তথ্য জোগাড় করে। পাশাপাশি, কোনও গ্রামে লোকালয়ে চলে এলে সেগুলি সামান্য দামে কিনে তা পাচার করে দেওয়া হয়। আর এই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখেই শনিবার অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে প্যাঙ্গোলিনটি উদ্ধার করে জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে। পাশাপশি ওই এলাকায় দুই সপ্তাহের বেশি সাদা পোশাকে নজর রাখবে বনদপ্তরের প্রহরীরা।