সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা সময় তারা ছিল এই পৃথিবীতেই। মনুষ্যবিহীন এই ধরাভূম তখন প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের অবাধ বিচরণক্ষেত্র। কালের নিয়মে তারা বিদায় নিলেও ধরিত্রীর পাঁজরে আজও লুকিয়ে অতিকায়দের অতীতের প্রমাণ। গুজরাটের (Gujarat) কচ্ছে সন্ধান মিলল এমনই এক বিশাল সাপের জীবাশ্মের (Snake Fossils)। দৈর্ঘ্যে যা প্রায় ৪৯ ফুট। চাঞ্চল্যকর এই আবিষ্কারে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে বৈজ্ঞানিক মহলে। অনুমান করা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত বিশ্বের দীর্ঘতম সাপ এটিই।
কচ্ছের এক খনিতে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে সম্প্রতি ২৭ টি হাড়ের সন্ধান পান আইআইটি রুরকির বিজ্ঞানীরা। তাঁদের ধারনা, একটা সময়ে পৃথিবীতে দাপটের সঙ্গে রাজ করা প্রাগৈতিহাসিক সাপেদের মধ্যে সর্ববৃহৎ সাপের জীবাশ্ম এটি। যে ২৭ টি হাড় উদ্ধার হয়েছে সেগুলি সাপের মেরুদণ্ডের। এবং তার বেশিরভাগই এখনও অক্ষত। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটি একটি পূর্ণ বয়স্ক সাপের হাড়। যার দৈর্ঘ্য ১১ থেকে ১৫ মিটার অর্থাৎ ৩৬ থেকে ৪৯ ফুট দীর্ঘ ছিল এটি। উল্লেখ্য, পৃথিবীর ইতিহাসে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া সর্ববৃহৎ সাপ হিসেবে ধরা হয় টাইটানোবোয়াকে। গুজরাটে মাটিতে খোঁজ পাওয়া সাপের জীবাশ্ম টাইটানোবোয়ার চেয়েও অতিকায়। আকারে বিশাল হওয়ার কারণে বর্তমান অ্যানাকোন্ডার মতো ধীর ছিল এদের চলাফেরা। দীর্ঘক্ষণ ওত পেতে থেকে হঠাৎ আক্রমণ চালাতো শিকারের উপর। তারপর নাগপাশে জড়িয়ে হত্যা করত শিকারকে।
[আরও পড়ুন: অবসরে হরি কুমার, দেশের নৌসেনা প্রধান হতে চলেছেন দীনেশ কুমার ত্রিপাঠী]
সম্প্রতি, সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে চাঞ্চল্যকর এই আবিষ্কারের তথ্য। হিন্দু দেবতা শিবের গলার থাকা সাপের নামে নয়া আবিষ্কৃত সাপের নাম রাখা হয়েছে ভাসুকি ইন্ডিকাস (Vasuki Indicus)। সাপটি মাৎসোইদাই (Madtsoidae) প্রজাতিভুক্ত। জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সাপটি একটি স্বতন্ত্র প্রজাতিভুক্ত। যা ভারতের মাটি থেকে ৫৬ থেকে ৩৪ মিলিয়ন বছর আগে ইওসিন যুগে দক্ষিণ ইউরোপ থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। আজকের স্তন্যপায়ী প্রজাতির প্রথম পূর্বপুরুষ এবং নিকটাত্মীয়রা ইওসিন যুগে পৃথিবীতে এসেছিল। এমনটাই মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
আবিষ্কৃত জীবাশ্মটি আজ থেকে ৪৭ মিলিয়ন বছর আগের বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। যে মেরুদণ্ডের জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে তার দৈর্ঘ্য ৩৮ থেকে ৬২ মিলিমিটার এবং প্রস্থে ৬২ থেকে ১১১ মিলিমিটার। যা দেখে বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্রশস্ত নলের মতো আকার ছিল সাপটির। আকারের দিক থেকে টাইটানোবোয়ার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। টাইটানোবোয়ার জীবাশ্ম প্রথম আবিষ্কার হয়েছিল ২০০০ সাল নাগাদ কলম্বিয়াতে।