সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল মায়ানমার (Myanmar)। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করে বিক্ষোভ দমনে বন্দুকের আশ্রয় নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে সামরিক বুটের চাপেও জনতার জয়গান কিছুতেই থামছে না। এহেন পরিস্থিতিতে সেনার গুলিতে নিহত হয়েছে সাত বছরের এক শিশু।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়ে জাপানের কাছে সমুদ্রে আছড়ে পড়ল দু’টি মিসাইল]
জানা গিয়েছে, মায়ানমারের অন্যতম ব্যস্ত শহর মান্দালয়ে সেনার গুলিতে নিহত হয় ৭ বছরের খিন মিও চিট। ‘অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজ়নার্স’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির নিহতদের তালিকায় নাম রয়েছে খিনের। নিহত শিশুটির দিদি আয় চান সান স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘Myanmar Now’-কে বলেন, “খিন বাবার কোলে বসেছিল তখন তাকে গুলি করে এক জওয়ান। তার বুকে গুলি লাগে।” নিহত শিশুটির বাবা হাসিন বাই রয়টার্সকে বলেন, “আমাদের পাড়ায় বিক্ষোভকারীদের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছিল সেনাবাহিনী। তখন আমার ঘরে প্রবেশ করে কয়েকজন জওয়ান। কোনও প্রতিবাদী লুকিয়ে আছে কি না জানতে চান তারা। আমি সাফ জানিয়ে দেই যে এখানে কেউ নেই। সেই সময় মেয়ে আমার কোলেই ছিল। সেটা দেখেও গুলি চালায় তারা। তারপরই আমি সেখান থেকে ছুট লাগাই।” বুধবার শিশুটির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সেনাশাসনের প্রতিবাদে নীরব প্রতিবাদ জানান নিহত শিশুর পরিজন ও স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। রাজধানী নাইপিদাও থেকে শুরু করে ইয়াঙ্গন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত বড় শহরে রাস্তায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সরব হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। সেনার হাতে বন্দি নেত্রী আং সান সু কি’র মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। কয়েকদিন আগেই প্রায় ৩২টি চিনা সংস্থার কারখানায় হামলা চালায় জনতা। কারণ, টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনার পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। আর এতেই ক্ষিপ্ত গণতন্ত্রকামীরা। সোমবারও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান অনেকে। কিন্তু আং সাং সু কি-পন্থীদের দমনে মরিয়া সে দেশের সেনা। আর সেই কারণেই নির্বিচারে দমন পীড়ন চালাচ্ছে তারা। এপর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে আড়াইশো জনের বেশি বিক্ষোভকারীর।