shono
Advertisement

হাই কোর্টের ভূত ধরতে চায়, প্রধান বিচারপতিকে আবেদন কলকাতার ‘ঘোস্ট বাস্টার’সংস্থার

কয়েকদিন আগেই হাই কোর্টের ভূতের গল্প শোনা গিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে।
Posted: 10:59 AM Nov 08, 2022Updated: 03:21 PM Nov 08, 2022

রাহুল রায়: এক সপ্তাহ আগে ভরা এজলাসে বসে হাই কোর্টে ভূতেদের আনাগোনার গল্প শুনিয়েছিলেন খোদ বিচারপতি। ১১ নং কোর্টের পাক খাওয়ানো সিঁড়িতে ভূতের উপদ্রবের বৃত্তান্তও শোনা গিয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ‌্যায়ের মুখে। জানা গিয়েছিল, ওই এজলাস কক্ষের বাইরের অলিন্দে ও ভিতরে বিস্তর ‘গোলমেলে’ ব‌্যাপার রয়েছে। এ বার হাই কোর্টের ভূত খুঁজতে কোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাল এক ভূতসন্ধানী সংস্থা। ‘ডিটেকটিভস অফ সুপার ন্যাচারাল’-এর তরফে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মারফত হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ‘ঘোস্ট বাস্টার’ সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা দেবরাজ সান্যাল।

Advertisement

দেশের সবচেয়ে পুরনো হাই কোর্ট এই কলকাতায়। বেলজিয়ামের ক্লোথ হলের কায়দায় বানানো আদালত ভবনটি অসাধারণ স্থাপত‌্যশৈলীর সুবাদে হেরিটেজ বিল্ডিং-এর তকমা পেয়েছে। বছরভর প্রচুর মানুষ আসেন বিচারের আশায়। সারা দিন অসংখ্য লোকের আনাগোনায় জমজমাট থাকে হাই কোর্ট চত্বর। কিন্তু সন্ধে নামলেই তামাম মহল্লা যেন নিঝুমপুরী। এমন অদ্ভুত আবহ কলকাতার খুব কম জায়গায় দেখা যায়।
আর সেই কারণেই হয়তো কলকাতার ভূতের গল্প আরও ভাল ভাবে জমে ওঠে হাই কোর্টের আনাচে কানাচে। হবে না-ই বা কেন, আলো-আঁধারি বারান্দাময় এই বাড়িতে তো ঘটে গিয়েছে কত ঘটনা! কেউ পেয়েছেন ফাঁসির সাজা, কেউ বা বিচার না পেয়ে ঘুরে মরেছেন। এমন এক জায়গায় ‘ভূত’ থাকা আর কী এমন আশ্চর্যের কথা!
দেবরাজবাবু জানান, ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের হেডকোয়ার্টার্স লালবাজারের আওতায় থাকা জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের সদর দফতরে অদ্ভূত সব ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছে আমাদের সংস্থা। যদিও শেষমেশ কিছুই মেলেনি। ‘‘বিভিন্ন সময়ে আইনজীবী ও আদালতকর্মীরা এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হাই কোর্টের এই সমস্ত ভূতের গল্পগুচ্ছ নিয়ে আমাদের বেশ কৌতুহল রয়েছে। তাই হাই কোর্টেও আমাদের অনুসন্ধানের অনুমতি দেওয়া হোক। আমাদের প্রতিনিধিদের একদিন ওই ১১ নং কোর্টে রাত কাটানোর সুযোগ দেওয়া হোক। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছি।”

[আরও পড়ুন:  ২০১৭’র টেটে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নম্বর প্রকাশ পর্ষদের, ২০১৪’র নম্বরও জানা যাবে চলতি সপ্তাহে]

প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর টেট মামলার শুনানির শেষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদের আইনজীবীকে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যে ২৬৯ জন টেটপ্রার্থীকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, তাঁদের মামলাগুলি বিকেল চারটে থেকে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত শোনা যেতে পারে। কারণ সোম থেকে শুক্র, রোজই একটানা নানারকম মামলা থাকে। এর পরে যদি আরও ২৬৯ জনের মামলা আসে তাঁর কাছে, তবে তা নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা অসম্ভব। তাই বিকেলের পরেই চলুক মামলা।

শুনেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন আইনজীবী বলে ওঠেন, সন্ধের পরে মামলা চলবে! হাই কোর্টের রাত মানেই তো ভয়ানক, অতৃপ্ত আত্মারা ঘুরে বেড়ায় আনাচকানাচে! অনেকে নাকি টেরও পেয়েছেন এমন সব ঘটনা! এর প্রেক্ষিতেই বিচারপতি বলেন, “এ কথা অবশ্য পুরোপুরি মিথ্যা নয়। কারণ কলকাতা হাইকোর্টের ১১ নম্বর এজলাসের লাগোয়া যে প্যাঁচানো সিঁড়ি, সেখানে যে অশরীরি আত্মার আনাগোনা রয়েছে, এই গল্প বহুদিনের পুরনো। হাইকোর্টের সকলেই জানেন, অন্ধকার হলেই ওই সিঁড়ি ঘিরে গা ছমছমে এক পরিস্থিতি তৈরি হয়।” তিনি বলেন, “এই সিঁড়ির ভূতুড়ে গল্পের কথা তিনিও জানেন।” এক আইনজীবী আবার হাই কোর্টের ১১ নং কোর্টের ভেতর থেকে আসা বিভিন্ন আওয়াজের কথা বলেন। বাইরের অলিন্দে অশরীরীদের আনাগোনার গল্পও শোনান এক আইনজীবী। এ সবেরই পরিণতি দেবরাজবাবুদের আবেদন। দেখা যাক, ওঁরা অনুমতি পান কিনা। পেলে ওঁদের অনুসন্ধান কী খুঁজে পায়।

[আরও পড়ুন: সিবিআই তদন্তের মাঝেই ইডি দপ্তরে হাজিরা পরেশ অধিকারীর, সাড়ে ৪ ঘণ্টা চলল জিজ্ঞাসাবাদ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement