সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীতের হাত থেকে বাঁচতে কম্বলের (Blanket) প্রয়োজনীয়তার কথা জানা সকলের। কিন্তু কম্বল যে উষ্ণতা রুখে দিতে পারে, তা কি জানা ছিল? নিশ্চয়ই নয়। আর এই অজানা তথ্যই এবার প্রকাশ্যে এল চিনের একদল বিজ্ঞানীর সৌজন্য। উষ্ণায়নের জেরে হিমবাহকে (Glacier) গলন থেকে বাঁচাতে বিশেষ কম্বলে ঢেকে দিলেন তাঁরা। বিষয়টি শুনে খানিকটা চমক লাগলেও, এটাই সত্যি। বিশ্ব উষ্ণায়নের অভিশাপে যাতে বরফের স্তর দ্রুত গলে বিপদ ঘনিয়ে না আসে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।
ভাবছেন নিশ্চয়ই, কেমন সে কম্বল? কী দিয়েই বা তৈরি? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পরিবেশবান্ধব ‘জিওফেব্রিক’ অর্থাৎ প্রাকৃতিক সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৫০০ বর্গ মিটারের একটি স্তর। দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশে ডাগু (Dagu) এলাকার হিমবাহের ওই অংশকে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: এবার গোরিলার শরীরেও মিলল করোনা ভাইরাসের হদিশ! চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা]
কীভাবে কাজ করবে ‘জিওফেব্রিকে’ তৈরি এই স্তরটি? জানা গিয়েছে, বিষয়টি আর কিছুই নয়। সূর্য থেকে সরাসরি বিকিরণ আছড়ে পড়ার ফলে দ্রুত গলছে হিমবাহ। এই স্তরের কাজ হল, সৌর বিকিরণ এবং হিমবাহের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ানো। তা সূর্যরশ্মিকে কিছুটা প্রতিফলিত করে দেবে। যার জেরে হিমবাহের উপর তাপের প্রভাব কমবে, সহজে গলন হবে না। চিনা বিজ্ঞানীদের দাবি, ডাগু হিমবাহে ওই ৫০০ বর্গমিটারের বিশেষ কম্বল দিয়ে ঢাকা দেওয়ার সুফল পেয়েছেন তাঁরা। তারপর থেকে হিমবাহের গলনের হার কমেছে বলে দাবি তাঁদের।
[আরও পড়ুন: বাড়ছে পৃথিবীর গতি, ২৪ ঘণ্টার আগেই শেষ হচ্ছে দিন! চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা]
চিনেরও আগে হিমবাহকে এভাবে রক্ষা করার কথা ভেবেছিলেন সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা। সে প্রায় এক দশক আগের কথা। সুইস আল্পসে অবস্থিক রোন হিমবাহ (Rhone Glacier) সংলগ্ন অঞ্চলে জনবসতি বাড়তে থাকায় অতি দ্রুত তা গলতে থাকে। সেই গলনের হাত থেকে বাঁচাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা ভাবছিলেন সুইস বিজ্ঞানীরা। শেষমেশ চিনা পরিবেশবিজ্ঞানীদের সঙ্গে যৌথ আলোচনায় বেরিয়ে আসে উপায়, যা আপাতত বাস্তবায়িত হয়েছে চিনের ডাগু হিমবাহের উপর।
বলা হচ্ছে, ডাগু হিমবাহে জলীয় অংশও অনেকটাই রয়েছে। ফলে তার গলনের প্রবণতাও বেশি। তাই তাকে রক্ষা করতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে চিনা পরিবেশবিদ ওয়াং ফেইটেং এবং তাঁর টিম। ফেইটেংয়ের মতে, ছোট হিমবাহগুলি রক্ষায় এই ‘জিওফেব্রিক’ দিয়ে তৈরি কম্বল কার্যকরী হবে। গলনের গতি অনেক কমবে। তাতে উষ্ণায়নের মাঝেও বজায় থাকবে প্রকৃতির ভারসাম্য।