অরূপ বসাক, মালবাজার: গাছের প্রাণ আছে, একথা বহুদিন আগেই প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু, তা জানা সত্ত্বেও আমরা গাছের উপর অনেক অত্যাচার করি। কখনও তার ডাল কাটি তো কখনও পুরো গাছটাই শিকড় সমেত কেটে ফেলি। তবে এখন গাছের উপর অত্যাচারের নতুন পদ্ধতি হল, তার গায়ে পেরেক পুঁতে ফ্লেক্স বা ব্যানার লাগিয়ে বিজ্ঞাপন দেয়। একাজে সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থা, কেউ পিছিয়ে নেই। গোটা রাজ্য ঘুরলে দেখা যাবে পুজো উপলক্ষে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা গাছে পেরেক পুঁতে বিজ্ঞাপন লাগিয়েছে। মালবাজারের অনেক জায়গাতেও এই ঘটনা ঘটেছে। পরিবেশ দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই কাজ চলছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডুয়ার্সের একাধিক পরিবেশপ্রেমী সংস্থা।
[আরও পড়ুন: পাখির কূজন ফেরাতে বাঁকুড়ায় তৈরি নতুন পার্ককে বৈচিত্র্যপূর্ণ করার প্রস্তাব]
মালের পরিবেশপ্রেমী সংস্থা মাউন্টেন ট্রেকার ফাউন্ডেশনের সম্পাদক স্বরূপ মিত্র বলেন, ‘গত জুন মাসে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এই অনাচারের বিরুদ্ধে অভিযান করেছিলাম। আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এই জাতীয় বহু ফ্লেক্স ও ব্যানার বিভিন্ন গাছ থেকে খুলেছি। কিন্তু, এখন ফের দেখছি এজাতীয় ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। এটা ঠিক নয়। এভাবে পেরেক পুঁতলে গাছকে আঘাত করা হয়। এটা সবার বোঝা উচিত। এই অনাচারের বিরুদ্ধে আমরা ফের অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ওদলাবাড়ির পরিবেশপ্রেমী নফসর আলি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মালবাজার থেকে সেবক পর্যন্ত যত গাছে এজাতীয় ফ্লেক্স লাগানো আছে সব খুলে দেব। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এনিয়ে প্রচার করা উচিত।’
[আরও পড়ুন: প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ না দেওয়ায় দোকানের কর্মচারীকে খুন করল খদ্দের]
চালসার এক পরিবেশপ্রেমী মানবেন্দ্র দে সরকার বলেন, ‘গাছে পেরেক বা গজাল ঠুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া ঠিক নয়। এতে গাছের ক্ষতি হয়। তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। মানুষের বুদ্ধির অভাব থাকলে কী আর করা যাবে। তবে সরকারিভাবে এর প্রতিবাদ করা উচিত।’
এপ্রসঙ্গে স্থানীয় এক বনাধিকারিক বলেন, ‘আমাদের নজরে এলে সেগুলি খুলে দিই। তবুও অনেকে ফের লাগায়। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ডুয়ার্সের রাস্তার পাশে প্রায় প্রতিটি গাছেই এজাতীয় ফ্লেস্ক লাগানো আছে।’
The post গাছে পেরেক পুঁতে টাঙানো সরকারি বিজ্ঞাপন, ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা appeared first on Sangbad Pratidin.