সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল। প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম। পড়শি দেশের অভিযোগ, এই পরিস্থিতির জন্য ভারত দায়ী। ত্রিপুরার ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণেই নাকি বন্যা দেখা দিয়েছে পূর্বের জেলাগুলোতে। ভারতের জলেই কী ভাসছে বাংলাদেশ? জবাব দিল নয়াদিল্লি।
বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটছে বাংলাদেশে। যা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভারতের দিকে আঙুল তুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। এই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, "ত্রিপুরার ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হচ্ছে। সেদেশে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। যা একেবারেই সত্য নয়। গত কয়েকদিন ধরে ভারত ও বাংলাদেশের নানা জায়গায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। দুদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদী সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমরা উল্লেখ করতে চাই, ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশের সমতলভূমি থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে উচ্চভূমিতে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। এখান থেকে কিন্তু বাংলাদেশেও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়।"
[আরও পড়ুন ‘কাকে বাঁচাতে চাইছেন সন্দীপ? অভিসন্ধি কী?’, প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের]
এছাড়াও বিবৃতিতে জানানো হয়, "বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সমগ্র ত্রিপুরা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ২১ আগস্ট থেকে ভারী বর্ষণ জারি রয়েছে। ফলে এই এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রান্ত দেখা দিয়েছে। ফলে দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে বিঘ্ন ঘটছে। তবু আমরা বাংলাদেশকে বন্যা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করছি।" প্রসঙ্গত, ভারী বৃষ্টির জেরে ত্রিপুরাতেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশের বন্যা নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখান রাজশাহী ও বরিশাল এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের গলায় নানা ভারতবিরোধী স্লোগান শোনা যায়। প্রতিবাদ-মিছিলে এক পড়ুয়া বলেন, "বর্ষার সময় তারা বাঁধ খুলে দিয়ে আমাদের ডুবিয়ে মারে। এই ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। আমরা এক্ষেত্রে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাইছি।" এদিক, বাংলাদেশের ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলায় বন্যার জলে ডুবে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। ফেনী ও কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এই বন্যার জেরে ৬ জেলায় মোট ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৬৬৩টি পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা প্রায় ১৮ লক্ষ।