সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিগ বাজার কিংবা স্পেনসর্স থেকে একমাসের বাজার একবারে সারেন? কিংবা বাজারে যে সমস্ত ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে, সেখানে গিয়েই কেনাকাটা করতে অভ্যস্ত? তাহলে এখনই সাবধান হোন। কারণ নতুন গবেষণা বলছে, এই সব স্টোরে যে কর্মীরা বিল করার কাউন্টারে থাকেন, কিংবা সরাসরি ক্রেতাদের মুখোমুখি হন, তাঁদের শরীরেই বেশি মিলছে করোনা ভাইরাসের হদিশ। আর সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, এঁদের মধ্যে বেশিরভাগেরই করোনার কোনও উপসর্গ নেই।
অকুপেশানাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল মেডিসিন নামের জার্নালে এই নতুন গবেষণার কথা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, স্টোরে থাকা অন্যান্য কর্মীদের তুলনায় কাউন্টারে থাকা কর্মীরা পাঁচ গুণ বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। আর সমস্যা হচ্ছে, চারজনের মধ্যে তিনজনই উপসর্গহীন হওয়ায় বোঝার কোনও উপায় নেই যে তাঁদের শরীরে থাবা বসিয়েছে মারণ করোনা (Coronavirus)। গবেষকরা বলছেন, এর ফলে অজান্তেই তাঁদের থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।
[আরও পড়ুন: শরীরে ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে যুগান্তকারী গবেষণা, আন্তর্জাতিক সম্মান লাভ বঙ্গবিজ্ঞানীর]
ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনের একটি গ্রসারি স্টোরের মোট ১০৪জন কর্মীর উপর এই গবেষণা করা হয়। গত মে মাসে বোস্টনের কোভিড বিধি মেনে প্রত্যেকের SARS-CoV-2 টেস্ট করা হয়। তবে তার আগে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছিল তাঁদের। কীভাবে দৈনন্দিন জীবনযাপন করেন, তাঁদের আগে কী কী চিকিৎসা হয়েছে, কাদের সঙ্গে কাজ করতে হয় এবং সর্বোপরি কোভিড সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে কর্মক্ষেত্রে কী কী সতর্কতা নিয়েছেন, এই সবই জানতে
চাওয়া হয়। এর পাশাপাশি তাঁদের শরীরে করোনার কোনও লক্ষণ রয়েছে কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়। টেস্ট রিপোর্টে দেখা যায়, পাঁচজনের মধ্যে একজন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আবার আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে চারজনই উপসর্গহীন। অর্থাৎ ৭৬ শতাংশ কর্মী জানেনই না য তাঁরা সংক্রমিত। আর যাঁরা বিলিং কাউন্টারে থাকেন কিংবা ক্রেতাদের মুখোমুখি হন, তাঁদের মধ্যে আক্রান্তের হার সর্বাধিক। ৯১ শতাংশ। গবেষকদের মতে, গবেষণা যেমন বলছে ক্রেতাদের মাধ্যমে যেমন সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে এঁদের, তেমনই অনেক ক্রেতার শরীরেও এঁদের থেকে সংক্রমণ প্রবেশ করছে। গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে এই সমস্ত স্টোরে কর্মরতদের অনেকেই দুশ্চিন্তা কিংবা হতাশায় ভোগেন।
তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এক্ষেত্রে একমাত্র সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংই সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করতে পারে। দুশ্চিন্তা না করে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। প্রতি মুহূর্তে হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। কোনওরকম সন্দেহ হলে করোনা টেস্ট করানোও আবশ্যক। মন ভাল রাখতে প্রয়োজনে মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারেন কিংবা কাউন্সেলিং করাতে পারেন।