সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের মাঝে সম্পূর্ণ উলটো সুরে কথা বললেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। বৃহস্পতিবার নাগপুরে আরএসএসের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ”সমস্ত মসজিদে শিবলিঙ্গ খোঁজার প্রয়োজন কী? রোজ রোজ নতুন করে বিতর্ক তোলা উচিত নয়। জ্ঞানবাপী নিয়ে আমাদের আলাদা ভক্তি থাকতেই পারে, তাই বলে সমস্ত মসজিদে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব খুঁজে বেরিয়ে, জিগির তোলা অনুচিৎ।” সকলের প্রতি তাঁর পরামর্শ, আদালতের রায় মেনে চলুন। সংঘ প্রধানের এহেন বক্তব্য ঘিরে স্বভাবতই আলোচনা তুঙ্গে। এর অন্তর্নিহিত ভিন্নতর বার্তা রয়েছে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা।
কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদের (Gyanvapi Mosque) একাংশের হিন্দু ধর্মমতে পুজো-আচ্চা হতো, এই দাবি তুলে তার প্রমাণ খুঁজতে নেমে পড়েছিলেন হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ। তা নিয়ে মামলা গড়ায় আদালতে। ২০২১ সালের আগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী আদালতে। সেই মামলায় মে মাসে বারাণসী আদালতের নির্দেশে জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে শুরু হয়েছিল ভিডিও সার্ভে। দাবি, তাতে সামনে এসেছে এক ‘শিবলিঙ্গ’। এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, আপাতত সিল থাকবে মসজিদের ওজুখানা। তবে নমাজপাঠ করতে যাঁরা আসবেন, তাঁদের জন্য অন্য ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: এক ফোঁটা জলের জন্য জীবনের ঝুঁকি! দড়ি ছাড়াই গভীর কুয়োতে নামছেন মহিলারা, দেখুন ভিডিও]
এসবের মাঝে বৃহস্পতিবার সংঘ প্রধান (RSS Chief) ভাগবত যা বললেন, তাতে স্পষ্ট, মসজিদে চত্বর খুঁড়ে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব প্রমাণের এই ‘অতি সক্রিয়তা’ তিনি মোটেই ভালভাবে নিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি রাম মন্দিরের কথা উল্লেখ করে বলেন, ”ইতিহাসের সাক্ষী অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা করা আমাদের লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ে তুলে আমরা সফল হয়েছি। আর কোনও আন্দোলন চাই না।”
[আরও পড়ুন: জাল টাকা দিয়ে কেনাকাটা করে নোটবদল! বাঁকুড়া থেকে গ্রেপ্তার জালিয়াত]
জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রসঙ্গ তুলে ভাগবতের আরও বক্তব্য, ”ইতিহাস বদলানো যায় না। মনে রাখতে হবে, আজকের কোনও হিন্দু বা মুসলিম তা রচনা করেনি। বহু বহু যুগ আগে তা তৈরি হয়েছিল। বহিরাগতদের এ দেশ আক্রমণের মাধ্যমে ইসলাম প্রবেশ করেছিল। শুধু হিন্দুই নয়, স্বাধীনতাকামীদের মনোবল ভাঙতে উপাস্য দেবতাদের মূর্তি, মন্দির ধ্বংস করা হয়েছিল।” তাঁর এই বক্তব্যে বাণী শুনছেন অনেকে। স্বাগতও জানিয়েছেন তাঁরা।